কলাগাছের ভেতরের অংশ (মাইজা/থোর)। যা একসময় ফেলা হতো ডোবা-নর্দমায়। সেই মাইজা/থোর এখন হয়ে উঠেছে বিদেশি বাজারে জনপ্রিয় পণ্য। নরসিংদীর পলাশ উপজেলার মানুষদের জন্য এটি শুধু নতুন আয়ের পথ নয়, বরং বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনেরও সম্ভাবনাময় উৎস।
নরসিংদীর বিখ্যাত অমৃত সাগর কলা চাষের জন্য সুপরিচিত। এই কলা চাষ শেষে কলার ছড়ি তুলে নেওয়ার পর সাধারণত ফেলে দেওয়া হতো গাছটি। কিন্তু সেই ফেলে দেওয়া কলাগাছের থোর আজ ঢাকার শ্যামবাজার ও কারওয়ান বাজারে বিক্রি হচ্ছে এবং রপ্তানি হচ্ছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে, বিশেষ করে যুক্তরাজ্যে।
পলাশ উপজেলার জিনারদী ইউনিয়নের আব্দুল কাদির মিয়া ও তার মতো আরও অনেকেই প্রজন্ম ধরে এই অভিনব ব্যবসায় যুক্ত।
তিনি বলেন, কলার ছড়ি তোলার পর আমরা গাছগুলো সংগ্রহ করে সেগুলোর থোর অংশ কেটে পরিস্কার করে ঢাকায় পাঠাই। প্রতি পিস পাইকারি বিক্রি করি ৬-৮ টাকায়, যেটা ঢাকায় গিয়ে বিক্রি হয় ১৫-২০ টাকায়।
এই ব্যবসায় যুক্ত রয়েছে পিতা-পুত্রের দল। শুধু নিজেরাই নয়, কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে বিভিন্ন বাগান থেকে সংগ্রহ করছেন ফেলে দেওয়া কলাগাছ।
নরসিংদী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা আব্দুল হাই বলেন, মাইজায় প্রচুর পরিমাণে আয়রন ও ঔষধিগুণ রয়েছে। পাশাপাশি এটি স্বাস্থ্যকর ও প্রাকৃতিক উপাদান হওয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে এর চাহিদা বাড়ছে।
বিশেষ করে ইউরোপে বসবাসরত সিলেটি বাঙালিদের কাছে এই মাইজা অত্যন্ত জনপ্রিয়।
চলতি মৌসুমে নরসিংদীর ৬ উপজেলায় প্রায় ২,১৬৫ হেক্টর জমিতে কলা চাষ হয়েছে। প্রতিটি গাছ থেকে যদি থোর সঠিকভাবে সংগ্রহ করে বাজারজাত করা যায়, তাহলে শুধু দেশেই নয়, বিশ্ববাজারেও এই পণ্যের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :