মেঘনা নদীতে অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে লক্ষ্মীপুরের উপকূলীয় অন্তত ৪০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ থেকে ৪ ফুট বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রায় ২ লাখ মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। শুক্রবার (৩০ মে) সকাল থেকে কিছু পানি নামতে শুরু করলেও অনেক স্থানে এখনো হাঁটুসমান পানি জমে আছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৯ মে) ভোররাত থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন এলাকায় ভারী বৃষ্টিপাত হয়। এর সঙ্গে চলে দমকা ও ঝড়ো হাওয়া, যার ফলে বিভিন্ন স্থানে গাছপালা উপড়ে পড়ে এবং কয়েকটি ইউনিয়নে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। রাতে উপকূলীয় অনেক ঘরবাড়িতে পানি ঢোকার আশঙ্কায় কিছু পরিবার নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে উঁচু স্থানে বা আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে চলে যায়।
জানা গেছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ ও অমাবস্যার প্রভাবে রামগতি, কমলনগর ও রায়পুর উপজেলার নদীতীরবর্তী গ্রামগুলোতে বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ে। সকাল থেকেই টানা বৃষ্টি চললেও দুপুরের পর থেকে লোকালয়ে পানি উঠতে থাকে। সন্ধ্যায় পানি কিছুটা নামলেও ততক্ষণে বিস্তীর্ণ জনপদ প্লাবিত হয়ে পড়ে।
স্থানীয়দের থেকে জানা গেছে, লক্ষ্মীপুর সদরের চর রমনী মোহন, রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশী, দক্ষিণ চরবংশী, কমলনগর উপজেলার চরমার্টিন, পাটারিরহাট, চরকালকিনি, সাহেবেরহাট, চরফলকন, রামগতি উপজেলার আলেকজান্ডার, চর রমিজ, বড়খেরী ও চরগাজী ইউনিয়নের নদীতীরবর্তী অন্তত ৪০টি গ্রামে পানি ঢুকেছে। এতে বাড়িঘর, ফসলি ক্ষেত, হাটবাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ জনপদ হাঁটুসমান পানিতে তলিয়ে গেছে।
কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাহাত উজ জামান বলেন, ‘আমি মাতব্বরহাট, পাটারিরহাট, ফলকন, চরমার্টিন, চর লরেন্স, তোরাবগঞ্জ, কালকিনি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছি। বেশ কিছু এলাকা জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে।’
লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ-উজ-জামান খান বলেন, ‘লক্ষ্মীপুরে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ থেকে ৪ ফুট উচ্চতায় বৃদ্ধি পেয়েছিল। নদী উত্তাল থাকলেও এখন ভাটার ফলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে।’
আপনার মতামত লিখুন :