সোমবার, ০২ জুন, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


চাকরি ছেড়ে খামার মাসে আয় ৪ লাখ

আহাদ তালুকদার, আগৈলঝাড়া (বরিশাল)

প্রকাশিত: জুন ১, ২০২৫, ০৪:৪৩ এএম

চাকরি ছেড়ে খামার মাসে আয় ৪ লাখ

একদিন হঠাৎ করেই সিদ্ধান্ত নেন চাকরি নয়, এবার নিজের খামারই হবে জীবনের পথ। আর সেই সিদ্ধান্তই বদলে দেয় শামিম শিকদারের ভাগ্য। রাজধানীতে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে আরামদায়ক চাকরি করতেন, এসি রুমে বসে দিন কাটত। কিন্তু অন্তর টানছিল নিজের মাটির দিকে। সিদ্ধান্ত নেন ফিরে যাবেন বরিশালের আগৈলঝাড়ার বাসাইল গ্রামে। ফিরে গিয়ে মাত্র ২০টি গরু নিয়ে শুরু করেন একটি গরুর খামার। আজ ১৩ বছর পর তার খামারে গরুর সংখ্যা ২৮০। সেই সঙ্গে মাছ চাষ মিলিয়ে গড়ে তুলেছেন সমন্বিত খামার, যার নাম বাসাইল রাইয়ান ডেইরি অ্যান্ড ফ্যাটেনিং ফার্ম।
শামিমের ভাষায়, ‘চাকরি করে শান্তি পাইনি, কিন্তু খামারে কাজ করে যে তৃপ্তি পাই, সেটা ভাষায় বোঝানো যায় না।’


শুরুটা হয়েছিল এক একর জমির ওপর একটি গরুর শেড দিয়ে। এখন সেখানে আছে দুটি বড় শেড, একটি দোতলা ভবন এবং পাশেই দুটি পুকুর। গরুর সংখ্যা ২৮০টি, যার মধ্যে ৫০টি গাভি ও ২৩০টি ষাঁড়। রয়েছে এক একর জমির দুটি পুকুরে মাছের চাষ। পাশাপাশি চার একর জমিতে চাষ করা হচ্ছে গরুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত ঘাস।


খামারটি পরিচালনায় কাজ করছেন ১০ জন স্থায়ী শ্রমিক। সব মিলিয়ে খামারে বিনিয়োগ হয়েছে প্রায় ২ কোটি টাকা। খরচ বাদে প্রতি মাসে আয় করছেন গড়ে ৪ লাখ টাকা।


শামিম শিকদারের এই খামার শুধু তার পরিবারের আয়ের উৎস নয়, আশপাশের ১০টি পরিবারের জীবিকা এখন এ খামারের সঙ্গে জড়িত। খামারের ম্যানেজার মো. রাকিবুল ইসলাম রনি বলেন, ‘এ ফার্মের কারণে আমাদের ১০টি পরিবার ভালো আছে। এর চেয়ে বড় শান্তি আর কী হতে পারে?’ শামিমের স্বপ্ন, একদিন খামারে যেন ৫০ জন মানুষের কর্মসংস্থান হয়।


খামারের ব্যবস্থাপনায় রয়েছে আধুনিকতার ছোঁয়া। প্রতিটি গরুর আলাদা পরিচর্যা, ওজন ও খাদ্য মেনেজমেন্ট করা হয় নিয়মিত। প্রতিদিন গাভি থেকে প্রায় ৩০০ লিটার দুধ পাওয়া যায়। তবে দুধ বাজারজাতকরণে সমস্যা রয়ে গেছে। শামিম বলেন, ‘আমরা দুধ বাজারজাত করতে পারি না, আড়ং বা মিল্কভিটার মতো প্রতিষ্ঠান থাকলে লাভ অনেক বাড়ত। অনেক সময় দুধ নষ্ট হয়ে যায়।’


খামারে কোরবানির উপযোগী ষাঁড়ও পালন করা হয়। ছোট-বড় বিভিন্ন আকৃতির ষাঁড়ের দাম ৬০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে সাড়ে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত।
স্থানীয়রা বলছেন, শামিম শিকদার এখন শুধু একজন খামারিই নন, তরুণদের জন্য এক উজ্জ্বল অনুপ্রেরণা। অনেকেই তার কাছ থেকে খামার করার কৌশল শিখে নিজেরাও এখন খামার গড়ে তুলেছেন।

স্থানীয় মেজবা শিকদার বলেন, ‘শামিম ভাই আমাদের চোখ খুলে দিয়েছেন। তিনি প্রমাণ করে দিয়েছেন, গ্রামের মাটিতেই সাফল্য সম্ভব।’
আগৈলঝাড়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. পলাশ সরকার বলেন, ‘শামিম শিকদার একজন সফল খামারি। তাকে দেখে অনেকেই উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। আমরা মিল্কভিটা ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা বলে দুধ বিপণনের একটা ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করব।’
 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!