২০১৩ সালে চাঁদপুর শহরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ১৮ দলীয় জোটের অবরোধ ও বিক্ষোভ মিছিলে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা হামলা এবং গুলি চালায়।
ওই সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয় ছাত্রদল নেতা তাজুল ইসলাম (২০)। এই হত্যার ঘটনায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপুমনিসহ ৪৯০ জনকে আসামি করে আদালতে হত্যা মামলা করা হয়েছে।
বুধবার (৪ জুন) দুপুরে চাঁদপুর সদর আমলী আদালতে হত্যার শিকার তাজুল ইসলামের বড় ভাই মো. ফারুকুল ইসলাম বাদী হয়ে এই মামলা দায়ের করেন।
বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়াসিন আরাফাত মামলাটি আমলে নিয়ে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় এফআইআর করার নির্দেশ দেন।
হত্যার শিকার ছাত্রদল নেতা তাজুল ইসলাম ও বাদী মো. ফারুকুল ইসলাম সদর উপজেলার ১২ নম্বর চান্দ্রা ইউনিয়নের বাখরপুর গ্রামের আনোয়ার উল্লাহ পাটওয়ারীর ছেলে।
মামলায় এজহার নামীয় ১৪০জন এবং অজ্ঞাতনামা আসামি ৩০০ থেকে ৩৫০জনকে করা হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- সাবেক মন্ত্রী ডা. দীপু মনির বড় ভাই ডা. জে আর ওয়াদুদ টিপু, চাঁদপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র মো. জিল্লুর রহমান জুয়েল, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল।
মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ৩০ ডিসেম্বর সোমবার সকাল ১০টার দিকে চাঁদপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমির সামনে ১৮ দলীয় জোটের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির আলোকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে অবরোধ ও বিক্ষোভ মিছিলে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সমর্থকগোষ্ঠী ব্যাপক হামলা এবং গুলি চালায়।
ওই হামলায় ছাত্রদল নেতা তাজুল ইসলাম (রতন) এর বুকের বামপাশে গুলিবিদ্ধ হয় এবং ঘটনাস্থলে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। একই সময় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের প্রায় ৩০০জন আহত হন।
এই ঘটনার পর ১ ও ২ নম্বর আসামির নির্দেশে কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে নিহতের সুরতহাল ও তদন্ত প্রতিবেদন না পাওয়ায় এবং বৈরী রাজনৈতিক পরিবেশের কারণে ও আসামিদের হুমকি-ধামকিতে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে মামলা দায়ের করতে ব্যর্থ হন। গেল বছর ৫ আগস্টের পরে স্বৈরাচারমুক্ত হওয়ার ফলে সার্বিক পট পরিবর্তন এবং বাক স্বাধীনতা ফেরত পাওয়ায় মামলা করতে বিলম্ব হয়।
রাতে মামলার বিষয়ে সত্যতা নিশ্চিত করে বাদী মো. ফারুকল ইসলাম বলেন, ঘটনার সময় পরিবেশ অনুকুলে না থাকা ও বিবাদী পক্ষের নানা হুমকি-ধমকির কারণে মামলা দায়ের করা সম্ভব হয়নি। ন্যায় বিচারের জন্য বিলম্ব হলেও মামলা দায়ের করেছি। আশা করি, আদালতের মাধ্যমে ন্যায় বিচার পাব।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী আব্দুল কাদের জিলানী মিল্টন জানান, ঘটনার পর মামলা দায়ের করার পরিবেশ না থাকায় প্রায় একযুগ পরে বাদী মামলাটি দায়ের করেন। আশা কারি সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে বাদী আদালতের মাধ্যমে ন্যয় বিচার পাবেন।
আপনার মতামত লিখুন :