বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: জুন ২৬, ২০২৫, ০৯:৩১ এএম

পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে আমার মেয়েকে: ইপ্সিতার বাবা

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: জুন ২৬, ২০২৫, ০৯:৩১ এএম

ভোলা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল কর্মী সুকর্ণা আক্তার ইপ্সিতা। ছবি- সংগৃহীত

ভোলা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল কর্মী সুকর্ণা আক্তার ইপ্সিতা। ছবি- সংগৃহীত

লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদী থেকে ভোলা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল কর্মী সুকর্ণা আক্তার ইপ্সিতার (২২) মরদেহ উদ্ধারের চার দিন পরেও তার মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। পরিবারের দাবি, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। নৌপুলিশ মরদেহ উদ্ধারের পর লক্ষ্মীপুর সদর থানায় অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে।

সুকর্ণা আক্তার ইপ্সিতা ভোলা সদর উপজেলার নবীপুর ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মাসুদ রানা ও ইয়ানুর বেগম দম্পতির বড় মেয়ে। তিনি ভোলা সরকারি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অনার্স তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এবং কলেজ শাখা ছাত্রদলের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন।

পুলিশ বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়েরের পাশাপাশি লক্ষ্মীপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন ইপ্সিতার বাবা মাসুদ রানা। তিনি অভিযোগে উল্লেখ করেন, জনৈক মেহেদী হাসান বাপ্পি নামে এক ব্যক্তির সাথে আমার মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। যখন ইপ্সিতা জানতে পারেন সে বিবাহিত তখন প্রেমের সম্পর্ক অবনতি হয় এবং যোগাযোগ বন্ধ করে দিলে মেহেদী হাসান বাপ্পি ইপ্সিতার পারিবারিক জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে।

তিনি অভিযোগে আরও উল্লেখ করেন, ২০২৩ সালের ২২ অক্টোবর চরফ্যাশন উপজেলার আঞ্জুরহাটের বাসিন্দা মো. নুর নবীর ছেলে মো. মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় ইপ্সিতার। ইপ্সিতা পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ায় এখনো তাকে তুলে দেননি। ৫-৬ মাস আগে কোনো কারণ ছাড়াই ইপ্সিতাকে ডিভোর্স দেন মেহেদী হাসান মিরাজ। বিষয়টি নিয়ে ইপ্সিতা বাদী হয়ে পারিবারিক আদালতে মামলা করেন। পারিবারিক আদালতে মামলা করার পর মেহেদী হাসান মিরাজ ইপ্সিতা ও তার বাবার বিরুদ্ধে চরফ্যাশন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যজিস্ট্রেট আদালতে একটি সিআর মামলা করেন। এরপর থেকে মেহেদী হাসান ইপ্সিতা ও তার বাবাকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দেয়। পরে ইপ্সিতার বাবা বাদী হয়ে ভোলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি এম.পি মামলা করেন। মামলাগুলো চলমান রয়েছে।

মাসুদ রানা অভিযোগে আরও উল্লেখ করেন, ইপ্সিতা গত ১৭ জুন সকাল ৮টার দিকে বাসা থেকে প্রাইভেট পড়াতে গিয়ে আর ফেরত না আসায় তিনি বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও পাননি। এরপর থেকে তার মোবাইলটি বন্ধ পাওয়া যায়। তিনি ২০ জুন ভোলা সদর থানায় জিডি করেন এবং ঘটনার পর থেকে তারা চতুর্দিকে খোঁজখবর নিতে থাকেন। পরবর্তীতে বিভিন্নভাবে জানতে পারেন ১৭ জুন ভোলার ইলিশা লঞ্চঘাট থেকে ঢাকাগামী এমভি কর্নফুলী-৪ লঞ্চের ৩৫৯ নম্বর কেবিনের এক যাত্রী (মেয়ে) লঞ্চ থেকে পানিতে পড়ে মারা গেছে। তার মরদেহ ২১ জুন লক্ষ্মীপুর মজু চৌধুরীরঘাট নৌপুলিশ উদ্ধার করে। পরবর্তীতে নৌপুলিশ বাদী হয়ে লক্ষ্মীপুর সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করে। তার মেয়েকে কে বা কারা কৌশলে গত ১৭ জুন থেকে ২০ জুনের মধ্যে হত্যা করে মরদেহ গুমের উদ্দেশে লঞ্চ থেকে মেঘনা নদীতে ফেলে দেয়। তিনি বিচারের দাবি জানান।

ইপ্সিতার বাবা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘স্টুডেন্টদের প্রাইভেট পড়াতে গিয়ে আমার মেয়ে কীভাবে লঞ্চে গেল? পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে। আমি জানি না কারা করেছে, কিন্তু পুলিশ ময়নাতদন্তে হত্যার আলামত পেয়েছে। আমি চাই হত্যাকারীদের বিচার হোক। না হলে আরও মেয়েরা এভাবে খুন হবে।’

কর্ণফুলী লঞ্চের ম্যানেজার মো. আলাউদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ইপ্সিতা কেবিন চাইলেও পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় তাকে কেবিন দেওয়া হয়নি। পরে সে ডেকে চলে যান। লঞ্চ মেঘনারচর এলাকায় পৌঁছালে এক তরুণী ৩ তলা থেকে নদীতে ঝাঁপ দেন। উদ্ধারে প্রায় ৪৫ মিনিট চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। বিষয়টি জানিয়ে লঞ্চ ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। পরে মুন্সিগঞ্জে লঞ্চটি থামিয়ে পুলিশ দুই স্টাফ ও ৯৯৯ নম্বরে ফোন করা যাত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেয়।’

ইপ্সিতার মৃত্যুর ঘটনায় ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটি এক বিবৃতিতে হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে। একইসঙ্গে সহযোদ্ধার মৃত্যুর প্রতিবাদে ভোলা ও আশপাশের এলাকায় ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন।

ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু শাহাদাৎ মো. হাচনাইন পারভেজ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ইপ্সিতা গত ১৭ জুন নিখোঁজ হন। তার বাবা থানায় জিডি করেন ২০ জুন। মামলাটি লক্ষ্মীপুর পুলিশ তদন্ত করছে।’

লক্ষীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) ঝলক মোহন্ত গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এ ঘটনায় মজু চৌধুরীঘাট নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আজিজুল ইসলাম বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা করেছেন। ইপ্সিতার বাবা একটি অভিযোগ দিয়েছেন, তদন্ত চলছে।’

Link copied!