নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার বিশনন্দী ফেরিঘাটে চাঁদাবাজির প্রতিবাদে শুক্রবার (৪ জুলাই) সকাল থেকে সিএনজি চালকরা ছয় ঘণ্টার ধর্মঘট পালন করেছেন।
চাঁদাবাজদের নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে আড়াইহাজার, রামচন্দ্রদী ও গোপালদী এলাকার শতাধিক সিএনজি চালক রামচন্দ্রদী এলাকায় জড়ো হয়ে সকাল থেকে গাড়ি চালানো বন্ধ রেখে বিক্ষোভে অংশ নেন। এর ফলে ওই রুটে চলাচলকারী যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। অনেকে দীর্ঘক্ষণ রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকেন, আবার কেউ কেউ বিকল্প যানবাহনে গন্তব্যে রওনা হন।
স্থানীয় সিএনজি চালক জিলানী ও নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা সরকারকে টোল দিই, তারপরও ফেরিঘাটে প্রতিবার আমাদের কাছ থেকে ২০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত চাঁদা নেওয়া হয়। এটা অত্যন্ত অন্যায়।’
চালকদের অভিযোগ, এই চাঁদাবাজির নেতৃত্ব দিচ্ছেন হারুন নামে একজন ব্যক্তি, যিনি বিএনপির কর্মী ও বিশনন্দী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন হামজালার অনুসারী। হারুনের নেতৃত্বে একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে এই অবৈধ চাঁদা আদায়ের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। প্রশাসনকে একাধিকবার জানানো হলেও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন তারা।
খবর পেয়ে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে যৌথবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে চালকদের সঙ্গে কথা বলেন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে সিএনজি চালকরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করেন।
অভিযুক্ত হারুন তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি কোনো চাঁদাবাজি করিনি। আমি শুধু গাড়ির সিরিয়াল ঠিক রাখি আর কিছু শ্রমের বিনিময়ে টাকা নিই।’
এই বিষয়ে বিশনন্দী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি গাজী মাসুদ বলেন, ‘আমরা হারুন নামে কাউকে চিনি না। চাঁদাবাজির সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পর্ক নেই।’
অন্যদিকে, অভিযুক্ত হারুনের রাজনৈতিক অভিভাবক হিসেবে পরিচিত আমজাদ হোসেন হামজালা বর্তমানে দেশের বাইরে থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার নাসির উদ্দিন বলেন, ‘চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’
আড়াইহাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাজ্জাত হোসেন বলেন, ‘ফেরিঘাটে চাঁদাবাজির অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আপনার মতামত লিখুন :