রবিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


আহাদ তালুকদার, আগৈলঝাড়া (বরিশাল)

প্রকাশিত: জুলাই ৯, ২০২৫, ০২:৪৭ পিএম

নৌকা তৈরিতে সচ্ছলতা ফিরেছে অর্ধ শতাধিক পরিবারের

আহাদ তালুকদার, আগৈলঝাড়া (বরিশাল)

প্রকাশিত: জুলাই ৯, ২০২৫, ০২:৪৭ পিএম

নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত মিস্ত্রি। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত মিস্ত্রি। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

দক্ষিণাঞ্চলের প্রত্যন্ত এলাকায় বর্ষা মৌসুমে চলাচল, জীবন জীবিকা ও পণ্য পরিবহনের অন্যতম বাহন হচ্ছে নৌকা। বিশেষ করে জুন থেকে নভেম্বর পর্যন্ত এলাকার মৎস্য শিকারিরা জীবনধারণ ও যাতায়াতের জন্য ডিঙি নৌকার ওপর নির্ভরশীল থাকেন। তাই বর্ষা মৌসুম এলেই বেড়ে যায় নৌকার কদর।

এদিকে বর্ষার কারণে ফসলি জমি বা বাড়ি-ঘর নির্মাণের তেমন কোনো কাজ না থাকায় এ সময় কাঠ মিস্ত্রিরাও ব্যস্ত থাকেন নৌকা তৈরির কাজে। তারা নিজেদের বাড়িতে বসেই নির্মাণ করেন বিভিন্ন সাইজ ও নকশার নৌকা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার দক্ষিণ জোবারপার মরানদিরপাড় গ্রামের  জিতেন্দ্রনাথ শাহের ছেলে শংকর শাহ তৈরি করছেন নৌকা। এ ছাড়াও এই অঞ্চলের অসংখ্য পরিবার কাঠ মিস্ত্রি পেশায় জড়িত। তারা গ্রামাঞ্চল থেকে অপেক্ষাকৃত কম দামে গাছ কিনে কাঠ বানিয়ে নৌকা তৈরি করে থাকেন।

এর মধ্যে জারুল, রেইনট্রি, চাম্বল, কদম, রয়না, ওড়িয়া, আম গাছের কাঠ দিয়েও ডিঙি ও ছোট-বড় আকারের নৌকা তৈরি করেন। পরে তৈরি এসব নৌকা বিভিন্ন হাট বাজারে বিক্রি করেন। আর এর মাধ্যমে আয় করে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার অর্ধ শতাধিক মিস্ত্রি পরিবার। যে আয়ের মাধ্যমে নিজেদের পরিবারের সচ্ছলতা ফিরিয়ে এনেছেন অনেকেই।

বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার হাট পরিচালনাকারীরা জানান, উপজেলার বারপাইকা, দুশুমীর হাট, রামানন্দের আঁক, বাটরা, বাহাদুরপুর থেকে শুরু করে ত্রিমুখী, রামশীল, সাদুল্লাপুর, পীরের বাড়িসহ বিভিন্ন এলাকায় এখন নৌকা বিক্রির জমজমাট হাট বসে। তবে সপ্তাহে দু’দিন করে বসা নৌকা বিক্রির সবচেয়ে বড় বাহাদুরপুর ও সাহেবের হাট।

তবে শুধু যে আগৈলঝাড়ায় বানানো নৌকা স্থানীয় হাটে বিক্রি হয় এমনটা নয়; পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি, বরিশালের বানারীপাড়া-উজিরপুর এবং মাদারীপুর থেকে পাইকাররা এসে নৌকা কিনে নিয়ে যায় বলে জানিয়েছেন নৌকা তৈরির কারিগর বাশাইল গ্রামের সুশীল দাস।

আর শুকুমার রায় নামে অপর কারিগর জানান, বর্ষার সময়টাতে অন্য কোনো কাজ না থাকায় নৌকা বানানোর ওপরেই তারা বেশি জোর দেন। যে কাজে স্ত্রী সন্তানেরাও সহায়তা করেন। আর একটি নৌকা তৈরি করে তা বিক্রি করে মোটামুটি ভালো লাভ করা গেলে জীবিকায় কোনো বিরূপ প্রভাবও পড়ে না। আর সবমিলিয়ে বর্ষায় দক্ষিণের নৌকার বাজার ভালো থাকায় কারো শ্রমই বৃথা যায় না।

এদিকে নৌকার ক্রেতা কাদের সরদার জানান, শুধু বর্ষা মৌসুমে ব্যবহারের জন্য কম দামি নৌকাই ক্রেতাদের বেশি পছন্দ। কারণ, এ সময়ে গবাদিপশুর জন্য মাঠ থেকে খাদ্য (ঘাস) সংগ্রহ, মাছ শিকারসহ চলাচলের জন্য বেশি নৌকার প্রয়োজন হয়।

জীবন বালা নামে অপর এক ক্রেতা বলেন, বর্ষায় যারা নৌকা কেনেন, তাদের মূলত শুকনোর সময়ে এর প্রয়োজন হয় না। তাই দেড় হাজার থেকে আট হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া নৌকার ওপর জোর দেন তারা।

এদিকে বর্ষাকালে বড়শি দিয়ে মাছ ধরার জন্য নৌকার বিকল্প নেই জানিয়ে রাজিহার গ্রামের মৎস্য শিকারি শাহ আলম বলেন, শুষ্ক মৌসুমে খালে জাল পেতে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করি। তবে বর্ষার বিশাল ফসলি জমি পানির নিচে তলিয়ে থাকায় জাল পেতে মাছ শিকার করি। আর এ জন্য নৌকার বেশি প্রয়োজন হয়। এ ছাড়া বর্ষা মৌসুমে যাতায়াত ও পণ্য পরিবহনেও নৌকা ব্যবহার বাড়ে। এক কথায় বিলাঞ্চলে হাট-বাজার থেকে শুরু করে স্কুল-কলেজে যাতায়াতের জন্য তাদের নির্ভর করতে হয় নৌকার ওপর।

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!