রাঙ্গামাটির কাপ্তাই উপজেলায় বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিং সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রাকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকায় সরকারি-বেসরকারি দপ্তর, হাসপাতাল, শিল্পকারখানা, ব্যাংক-বীমা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ গুরুত্বপূর্ণ সেবামূলক কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। বিদ্যুৎ সরবরাহে এ দীর্ঘ ব্যবচ্ছিন্নতা কাপ্তাইবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিট থেকে প্রতিদিন গড়ে ২৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়। অথচ সেই কেন্দ্রের পাশেই কাপ্তাই উপজেলায় বিদ্যুতের ভয়াবহ সংকট।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শুধু দিনের আলোতেই নয়, ধর্মীয় উপাসনার গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলোতেও বিদ্যুৎ চলে যায়। মুসলমানদের নামাজ, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের উপাসনার সময়ও পাওয়া যায় না বিদ্যুৎ। বিদ্যুৎ না থাকাই যেন এলাকাটির দৈনন্দিন রুটিনে পরিণত হয়েছে। অনেকের অভিযোগ, এটি ‘ইচ্ছাকৃত বিদ্যুৎ বিভ্রাট’।
সচেতন মহল অভিযোগ করেন, গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে বিদ্যুৎ বিভাগ আরও বেশি বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটাচ্ছে। কাপ্তাই আবাসিক প্রকৌশল কার্যালয় এবং কন্ট্রোল রুম থেকে পূর্বশত্রুতার জেরে এমন অবস্থা তৈরি করা হচ্ছে। তারা দাবি করেন, বিদ্যুৎ সাপ্লাই বিভাগের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী ফ্যাসিস্ট সরকারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে সাধারণ মানুষের ওপর প্রতিশোধ নিচ্ছেন।
কাপ্তাই নতুন বাজার বণিক কল্যাণ সমবায় সমিতির সভাপতি মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘গত বছরের তুলনায় এবার বিদ্যুৎ বিভ্রাটের হার অস্বাভাবিক। প্রতিদিন গড়ে ১৫-২০ বার বিদ্যুৎ চলে যায়, এক-একবার চলে যায় দুই-তিন ঘণ্টা করে। এতে ব্যবসায়ীদের বিরাট লোকসান গুনতে হচ্ছে।’
বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও তীব্র প্রতিক্রিয়া জানাতে দেখা গেছে অনেককে। কেউ লিখেছেন, ‘ঝড় নেই, বৃষ্টি নেই, তবু বিদ্যুৎ থাকে না।’ কেউ বলছেন, ‘বাতির নিচেই অন্ধকার থাকে।’ কেউ আবার লিখেছেন, ‘কাপ্তাই পিডিবি যেন পল্লী বিদ্যুৎকেও হার মানিয়েছে।’
এ বিষয়ে চন্দ্রঘোনা আবাসিক বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলী এ কে এম শামসুল আরেফিনের বক্তব্য নিতে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। এমনকি সরকারি মোবাইল নম্বরেও তাকে পাওয়া যায়নি।
আপনার মতামত লিখুন :