টাঙ্গাইলের গোপালপুরে জুলাই শহিদ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহিদ কলেজছাত্র হৃদয়ের পরিবারকে আমন্ত্রণ না জানানোয় তীব্র ক্ষোভ ও বিস্ময় প্রকাশ করেছেন পরিবার ও স্থানীয়রা।
বুধবার (১৬ জুলাই) গোপালপুর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আয়োজিত দোয়া ও আলোচনা সভায় সমাজের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষকে আমন্ত্রণ জানালেও হৃদয়ের পরিবারের কাউকে জানানো হয়নি।
হৃদয় নিহত হন ২০২৫ সালের ৫ আগস্ট, গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে পুলিশের গুলিতে। ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশ তাকে প্রকাশ্যে বুকে বন্দুক ঠেকিয়ে গুলি করে এবং মৃতদেহটি টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যায়। হৃদয় তখন অটোরিকশা চালিয়ে পঙ্গু বাবা-মাকে সহায়তা করতেন।
ক্ষোভ প্রকাশ করে হৃদয়ের মা রেহানা বেগম বলেন, ‘আমরা এখনো ছেলের লাশটাও দেখতে পাইনি, অথচ সরকার শহিদ দিবস পালন করে। আমাদের ডাকার মতো কি কেউ ছিল না?’

হৃদয়ের বোন জেসমিন বলেন, ‘বাকি শহিদ পরিবার অনুদান পেয়েছে। আমাদের হৃদয়ও তো শহিদ হয়েই গেছে! শুধু লাশটা গুম হয়ে গেছে বলেই হয়তো তালিকায় নাম নাই।’
এ ঘটনায় স্থানীয় রাজনৈতিক মহল থেকেও প্রতিবাদ এসেছে। গোপালপুর উপজেলা জামায়াতের আমির হাবিবুর রহমান এবং পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক চাঁন মিয়া উভয়েই এই অবহেলার ঘটনায় গভীর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তুহিন হোসেন জানান, আমন্ত্রণের দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট আন্দোলনের সংগঠকদের উপর ছিল। কেন হৃদয়ের পরিবার বাদ পড়েছে, তা খতিয়ে দেখা হবে। শহিদ তালিকায় হৃদয়ের নাম অন্তর্ভুক্ত করার প্রক্রিয়াও চলমান।
উল্লেখ্য, হৃদয় হত্যা মামলাটি বর্তমানে গাজীপুর ডিবির অধীনে তদন্তাধীন রয়েছে। এ ঘটনায় ইতোমধ্যে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং শিগগিরই অভিযোগপত্র দেওয়া হতে পারে বলে জানা গেছে।
হৃদয়ের পরিবার ও স্থানীয়দের দাবি, হৃদয়কে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়া হোক, শহিদের মর্যাদা প্রদান করা হোক, যাতে তার আত্মত্যাগ ইতিহাসে সম্মানজনকভাবে লিপিবদ্ধ হয়।
আপনার মতামত লিখুন :