‘আমার সহজ-সরল পোলাডারে ওরা গুলি কইরা মারছে। এক বছর হইয়া গেল, পোলা হারাইছি। আমার পোলার হত্যার বিচার চাই’—বুকফাটা কান্নায় কথাগুলো বলছিলেন কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত আসিফুর রহমান আসিফের মা ফজিলা খাতুন।
আসিফ (১৭) শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নের কেরেঙ্গাপাড়া গ্রামের আমজাদ হোসেন ও ফজিলা খাতুন দম্পতির দ্বিতীয় ছেলে। ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই রাজধানীর মিরপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হন গার্মেন্টসকর্মী আসিফ।
নিহত আসিফের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ৬ ভাইবোনের মধ্যে আসিফ ছিল দ্বিতীয়। সংসারে টানাপোড়েন থাকায় বাবার ছোটখাটো ব্যবসায় চলছিল না। তাই একসময় ঢাকায় গিয়ে একটি গার্মেন্টসে ১৩ হাজার টাকা বেতনে কাজ শুরু করে আসিফ।
ঘটনার দিন বিকেলে বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে বাসা থেকে বের হয় সে। মিরপুরে আন্দোলনের উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে হঠাৎ মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়। প্রথমে স্থানীয়রা তাকে মিরপুরের আলোক হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল হয়ে নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় গেল বছরের ২ নভেম্বর আসিফের বাবা আমজাদ হোসেন ঢাকার একটি আদালতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২০১ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার পরপরই কবর থেকে উত্তোলন করা হয় আসিফের মরদেহ এবং সম্পন্ন হয় ময়নাতদন্ত।
এক বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো শহীদ আসিফের পরিবার বিচার পায়নি। বিচারের আশায় দিন গুনছেন তারা।
শহীদ আসিফের বাবা আমজাদ হোসেন বলেন, ‘আমার ছেলে শহীদ হয়েছে এক বছর হলো। মামলা করতে গিয়ে তিনবার আদালতে গিয়েছি। এতটুকুই জানি। এরপর কী হয়েছে, কিছুই জানি না। আমি সরকারের কাছ থেকে টাকা পেয়েছি। কিন্তু টাকা দিয়ে কী হবে? আমি তো আমার ছেলেকে ফিরে পাব না।’
আপনার মতামত লিখুন :