ঠাকুরগাঁওয়ের নেকমরদে বিচারের দাবি নিয়ে কাপড় দোকানের সামনে ললিত বনিক (৪০) নামে এক স্বর্ণের কারিগরের মরদেহ রেখে অবস্থান নেয় পরিবার ও এলাকাবাসীর লোকজন। স্বজনদের অভিযোগ, মাত্র ৩ হাজার টাকার জন্য মারধর করেছে এক কাপড় দোকানদার।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) বিকাল ৫টার পর থেকে রাত পর্যন্ত রানীশংকৈল উপজেলার নেকমরদ বাজারের রেখা ক্লথ স্টোরের সামনে মরদেহ নিয়ে অবস্থান নিতে দেখা যায়।
নিহতের বাবা মংলু বনিক জানান, ‘আমার ছেলের কাছে কাপড়ের বাকি ৩ হাজার টাকা পাচ্ছিল দোকানদার। টাকার জন্য তাকে তার দোকান থেকে টেনেহিচড়ে নিয়ে যায় রহমানের ছেলেগুলো তার কাপড়ের দোকানে এবং সেখানে নিয়ে গিয়ে মারধর করে। তারপরে তারাই আবার আমার ছেলেকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। আমি খবর পেয়ে হাসপাতালে গেলে আমার ছেলে আমাকে বলেছে রহমান ও তার ছেলেরা আমাকে মারধর করেছে। আমাকে মাফ করে দিও বাবা আর আমার হত্যার বিচার নিও। আমি আমার ছেলের হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।’
স্বর্ণের কারিগর ললিত বনিক বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ভানোর ইউনিয়নের বনিকপাড়া গ্রামের মংলু বনিকের ছেলে।
কারিগরের ছেলে শুভ বনিক জানান, ‘নেকমরদ বাজারের কাপড় ব্যবসায়ী আব্দুর রহমানের নিকট বাকিতে কাপড় কিনেছিল তার বাবা। ৩ হাজার টাকা বকেয়া ছিল। বৃহস্পতিবার দুপুরে বকেয়া টাকার জন্য বাবাকে টেনে হিচড়ে দোকানে নিয়ে মারধর করে। পরবর্তীতে তাঁরা জানান, আমার বাবা গ্যাস ট্যাবলেট খেয়েছে।’
শুভ বনিক আরও জানান, ‘প্রথমে রানীশংকৈল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং দিনাজপুর মেডিকেলে নেওয়ার পথে রাস্তায় মারা যায়। এরপরে মরদেহ নিয়ে দোকানের সামনে অবস্থান নিয়েছি।’
সুজন বনিকের দোকানে কর্মচারী ছিলেন ললিত বনিক। তিনি জানান, ‘ছেলে ও পুরো বাজারের লোকজনের সামনে মারধর ও অপমান সইতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। যখন আমাদের কাছে ক্ষমা চাইতে শুরু করে, তখন বুঝতে পারি সে গ্যাস ট্যাবলেট খেয়েছে।’
এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি জানিয়েছেন ললিতের স্বজনরা ও বাজারের লোকজন। মাত্র ৩ হাজার টাকার জন্য এভাবে অপমান ও মারধর ঠিক হয়নি বলছে বাজারের লোকজন।
এ ঘটনার পর দোকান বন্ধ করে পালিয়েছে কাপড় দোকান মালিক আব্দুর রহমান। তার বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি।
তবে কাপড় দোকানদার আব্দুর রহমানের স্ত্রী সেলিনা আক্তার জানান, ‘টাকা পাইলে তো চাইবেই। ওদের স্বভাব হয়ে গেছে। মামলা করবে করুক, কোনো চিন্তা করি না। তার স্বামী কাজে বাহিরে আছে বলে জানান তিনি।’
রানীশংকৈল থানার ওসি আরশেদুল হক জানান, ‘ঘটনাস্থলে পুলিশ গেছে। স্বজনরা অভিযোগ দিলে মামলা হবে।’
আপনার মতামত লিখুন :