সাতক্ষীরার সদর, দেবহাটা ও আশাশুনি উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত মরিচ্চাপ নদীতে নির্মিত সাতটি ব্রিজ ও কালভার্ট একে একে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
এসব অবকাঠামোর নির্মাণে ব্যয় হয়েছিল প্রায় ২ কোটি ৬১ লাখ টাকা। বর্তমানে ধসে পড়া ব্রিজগুলোর স্থানে সাঁকো তৈরি করে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন এলাকাবাসী।
ব্রিজ ভেঙে পড়ার কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন তিন উপজেলার হাজারো মানুষ, শিক্ষার্থী, কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। বন্ধ হয়ে গেছে গুরুত্বপূর্ণ কৃষিপণ্য, মাছ, ধান, শাকসবজির পরিবহন। রোগী পরিবহনে ব্যবহৃত অ্যাম্বুলেন্সও এসব এলাকায় চলাচল করতে পারছে না।
স্থানীয়রা জানান, এই ব্রিজগুলো নির্মাণে ছিল পরিকল্পনার অভাব ও অনিয়ম। নির্মাণের সময় পানি উন্নয়ন বোর্ডের মতামত নেওয়া হয়নি, এমনকি সিএস রেকর্ডও মানা হয়নি।

ব্যবসায়ী হাফিজুর রহমান বলেন, ‘আগে পাঁচ কিলোমিটার রাস্তা পেরিয়ে বাজারে যেতাম, এখন ঘুরে ২০ কিলোমিটার যেতে হয়। পুরো প্রকল্পটাই ভেসে গেছে পানিতে।’
২০১৩ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের ‘গ্রামীণ রাস্তায় ছোট দৈর্ঘ্যের সেতু/কালভার্ট নির্মাণ’ প্রকল্পের আওতায় নির্মিত ব্রিজগুলো হলো- বাকড়া ব্রিজ, কামালকাটি ব্রিজ, কুন্দুড়িয়া ব্রিজ, হিজলডাঙ্গা ব্রিজ, শিমুলবাড়িয়া ব্রিজ, দাড়ার খাল ব্রিজ ও এল্লারচর ব্রিজ।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সম্প্রতি মরিচ্চাপ নদী পুনঃখনন করায় নদী চওড়া ও গভীর হয়েছে। এতে জোয়ার-ভাটার প্রবল স্রোতে ব্রিজগুলো ভেঙে পড়ে।

সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আজাদ হোসেন বেলাল বলেন, ‘ব্রিজগুলো অপরিকল্পিতভাবে নির্মিত হওয়ায় কোটি কোটি টাকা নষ্ট হয়েছে, যা জনগণের অর্থের অপচয়।’
নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সালাউদ্দীন বলেন, ‘নদী খননের ফলে নদীর প্রবাহ বেড়েছে। নির্মাণকালে ব্রিজগুলোর প্রকৃত প্রস্থ বিবেচনা করা উচিত ছিল। ভবিষ্যতে এসব প্রকল্পে সমন্বয় করে কাজ করা হবে।’

সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শোয়াইব আহমেদ বলেন, ‘জনগণের দুর্ভোগ বিবেচনায় ধসে পড়া সাতটি ব্রিজের মধ্যে এলজিইডি প্রাথমিকভাবে দুটি ব্রিজ দ্রুত পুনর্নির্মাণ করবে।’
আপনার মতামত লিখুন :