ভারতীয় উজানের পানিতে প্লাবিত শার্শা-বেনাপোল সীমান্তের শত শত একর ফসলি জমির আমন ধান ও রাস্তাঘাট। ভারি বৃষ্টি এবং ভারতের অভ্যন্তর থেকে আসা পানিতে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বেনাপোলের দৌলতপুর এবং পুটখালী এলাকার রাস্তাঘাট ফসলি জমি জলমগ্ন থাকায় আমন ধান মাছের ঘের ও পুকুর ভেসে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
দৌলতপুর ও পুটখালী এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ভারতের উজানের পানি বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। ভারত-বাংলাদেশের মাঝে ইছামতি নদী প্লাবিত হয়ে পানি উপচে পড়ছে এ দেশের ফসলি ধানক্ষেতে। সেই সাথে কিছু বাড়ির মধ্যে হাঁটু পানি এবং পাকা সড়কের ওপর পানি। মাছের ঘের ভেসে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
এ অঞ্চলের মানুষ পুকুরে ও জমি কেটে এবং বাওড়ে মাছের চাষ করে থাকে। হঠাৎ একটানা বৃষ্টি এবং ভারতীয় পাহাড়ি ঢলের পানি ইছামতি দিয়ে এসে দেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে এসব প্লাবিত হয়েছে। জমির ধান প্লাবিত হয়ে নষ্ট হয়ে গেছে।
স্থানীয় কৃষক জয়নাল আবেদীন জানান, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে ভারতীয় উজানের পানি বাংলাদেশে ইছামতি নদী দিয়ে প্রবেশ করছে। এবার বৃষ্টিপাত বেশি হওয়ার কারণে কয়েক শত একর আমন ধানের জমি প্লাবিত হয়েছে। সেই সাথে মাছের ঘের পুকুর বাওড় ও আখের ক্ষেত ও বিনষ্ট হয়েছে।
দৌলতপুর গ্রামের কৃষক আলী আহম্মেদ জানান, ‘একটানা বৃষ্টি ও ভারতের পানি দেশে প্রবেশ করে আমাদের চরম ক্ষতি হয়েছে। এই মাঠে আমরা চাষাবাদ করে থাকি। আমন ধান রোপণ করেছিলাম। মাঠে শত শত কৃষকের আমন ধান ছিল কয়েকশত একর জমিতে। সব পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। আমাদের এখন পথে বসা ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই।’
পুটখালী গ্রামের আমিন উদ্দিন জানান, তার রাজগঞ্জে রয়েছে মাছের ঘের। এই ঘের পানিতে ভেসে সব মাছ বেরিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, ‘এখানে আমার মতো আরও অনেকের এমন দশা হয়েছে। কিছু করার নেই। প্রকৃতির কাছে আমরা হারতে বাধ্য হয়েছি। একাধারে বৃষ্টি, অন্যদিকে ভারতের পানি গড়িয়ে আমাদের জমিতে আসা—সব মিলিয়ে এসব ঘের যেমন ভেসেছে তেমনি আবাদি ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।’
এ ছাড়া শার্শার কায়বা এলাকায়ও ইছামতি নদীর উজানের পানিতে ফসলি জমি প্লাবিত হয়েছে। এতে ওই ইউনিয়নের ঠেঙ্গামারী ও আওয়ালী বিল এলাকার ৫০০ একর ফসলি জমি প্লাবিত হয়েছে। ওই এলাকায় মধ্যে রয়েছে গোগা, শান্তিপুর, বাইকোলা, গাজীর পাড়ের কায়বা, পাঁচকায়বা, ভবানীপুর ও রুদ্রপুর।
এলাকার কৃষকরা জানায়, ভারি বর্ষণে এবং ভারতীয় উজানের পানি ইছামতি নদী উপচে পড়ে প্লাবিত হয়েছে এসব ফসলি মাঠ।
আপনার মতামত লিখুন :