গাজীপুর মহানগরীর চান্দনা চৌরাস্তা এলাকা, যেখানে দীর্ঘদিন ধরে অনিয়ম, অপরাধ ও চাঁদাবাজির ছায়া নেমে রয়েছে। এই এক যুগেরও বেশি সময় ধরে কাজ করেছেন সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন (৩৮), যিনি দৈনিক প্রতিদিনের কাগজে কর্মরত ছিলেন। তবে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিডিও ধারণকে কেন্দ্র করে প্রাণ কেড়ে নেয় সন্ত্রাসীরা।
ঘটনার দিন চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় ব্যাংক থেকে টাকা তুলে ফেরত আসা বাদশা নামে এক ব্যক্তির ওপর সন্ত্রাসীদের হামলার ভিডিও ধারণ করছিলেন সাংবাদিক তুহিন। সন্ত্রাসীরা ভিডিও ডিলিট করার জন্য চাপ দেয়, কিন্তু তুহিন এতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
স্থানীয়রা জানায়, প্রথমে শাপলা ম্যানশনের কাছে বাদশার ওপর হামলা হয়। ২০-৩০ মিনিট পর মসজিদ মার্কেটের সামনে তুহিনের ওপর হামলা চালানো হয়। এই সময় সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে প্রকাশ্যে শোডাউন করছিল।
তুহিন দুটি মোবাইল ফোন ব্যবহার করতেন। ধারণা করা হচ্ছে, ওই ফোনগুলোর একটিতে হামলার ভিডিও এবং অপরাধীদের তথ্য রয়েছে। কিন্তু পুলিশ এখনো মোবাইল ফোন দুটি উদ্ধার করতে পারেনি।
সচেতন সাংবাদিকরা মনে করছেন, মোবাইল ফোন উদ্ধার হলে হত্যাকাণ্ডের আসল রহস্য উদঘাটন হতে পারে এবং মদদদাতাদেরও শনাক্ত করা সম্ভব হবে। তুহিনের মৃত্যু শুধু একজন সাহসী সাংবাদিকের প্রাণহানি নয়, এটি স্বাধীন সংবাদ সংগ্রহের ওপর সন্ত্রাসী হুমকির এক দুঃসাহসিক উদাহরণ। এই হত্যাকাণ্ডের পুরো ঘটনা ও মোবাইল ফোন উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত এই রহস্য অব্যাহত থাকবে বলে মনে করেন সচেতন মহল।
তুহিনের মোবাইলটি উদ্ধার করা গেলে আসামি শনাক্ত করতে সহায়ক হবে বলে মনে করেন সাংবাদিকরা, কারণ উদ্ধার করতে না পারা সাংবাদিক তুহিন ওই মোবাইলটি দিয়ে কোপানোর দৃশ্যটি ধারণ করেছিলেন।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার রবিউল ইসলাম বলেন, ‘সাংবাদিক তুহিনের মোবাইলটি একটি হত্যা রহস্য উদঘাটনে একটি গুরুত্বপূর্ণ আলামত। তাই মোবাইল ফোনটি উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। ফোনটি পাওয়া গেলে তিনি কী ভিডিও করেছিলেন, কারা হত্যায় জড়িত চিহ্নিত করতে সহজ হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তাদের লোকেশন শনাক্ত করা যাচ্ছে না, তবে বিভিন্ন মাধ্যমে খোঁজাখুজি চলছে। সাংবাদিক তুহিনের ব্যবহৃত মোবাইলটি উদ্ধারের চেষ্টা করা হচ্ছে।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন