ফরিদপুরের ভাঙ্গায় একটি বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মঞ্চে বসার সুযোগ না পেয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নেতার ওপর চড়াও হন স্থানীয় বিএনপি নেতারা। এ ঘটনায় অনুষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। পরে কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলামের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আজিমনগর ইউনিয়নের পশ্চিম পাতরাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে ‘সৎসংঘ সামাজিক উন্নয়ন সোসাইটি’ আয়োজিত এ কর্মসূচিতে ঘটনাটি ঘটে।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মিজানুর রহমান।
জানা গেছে, অনুষ্ঠানে ভাঙ্গা উপজেলা জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক মো. আশরাফ হোসেনকে মঞ্চে বসানো হয়। একই মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মিজানুর রহমান এবং সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা। কিন্তু মঞ্চে জায়গা হয়নি বিএনপি নেতাদের। তাদের মঞ্চের সামনের সারিতে বসানো হয়। মঞ্চে এনসিপির আহ্বায়ক থাকলেও বিএনপি নেতাদের উপেক্ষা করায় তারা অপমানবোধ করেন এবং ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। বিএনপি নেতাদের মধ্যে উপজেলা বিএনপি ও কৃষক দল এবং ইউনিয়ন বিএনপি নেতারা ছিলেন। এক সময় বিএনপি নেতাকর্মীরা উত্তেজিত হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে মঞ্চ থেকে এনসিপির আহ্বায়ককে নামিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি অনুষ্ঠান পণ্ড করার জন্য চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করেন। উপস্থিত ইউএনও এবং অনুষ্ঠানের আয়োজকরা উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। কিন্তু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় বেশ কিছু সময় ধরে চরম বাগবিতণ্ডা চলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একপর্যায়ে বিএনপি নেতারা মঞ্চে গিয়ে এনসিপির আহ্বায়কের ওপর চড়াও হওয়ার চেষ্টা করেন। এনসিপির আহ্বায়ককে রক্ষা করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকেও কয়েক দফায় বিএনপি নেতাকর্মীদের তোপের মুখে পড়তে হয়।পরে খবর পেয়ে পাশের এলাকায় রাজনৈতিক সভায় থাকা কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম ঘটনাস্থলে এসে বিএনপি নেতাকর্মীদের শান্ত করেন। এরপর অনুষ্ঠান পুনরায় শুরু হয়।
সৎসংঘ সামাজিক উন্নয়ন সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোর্তজা বলেন, ‘এটি ছিল একটি সামাজিক অনুষ্ঠান, রাজনৈতিক নেতাদের আনুষ্ঠানিকভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এনসিপি নেতা কখন মঞ্চে উঠেছেন তা আমার জানা নেই। বিতর্ক ওঠায় তিনি মঞ্চ থেকে নেমে যান।’
ভাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি খন্দকার ইকবাল হোসেন বলেন, ‘বিএনপি নেতাদের মঞ্চে বসানো হয়নি, অথচ এনসিপি নেতাকে বসানো হয়েছে—এ নিয়ে কিছুটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল, যা পরে সমাধান হয়েছে।’
উপজেলা এনসিপির আহ্বায়ক মো. আশরাফ হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ‘স্থানীয় বিএনপি নেতারা আমাকে লাঞ্ছিত করার চেষ্টা করেছিলেন। ইউএনও মহোদয়ের হস্তক্ষেপে রক্ষা পাই। পরে শহীদুল ইসলাম এসে তাদের দিয়ে ক্ষমা চাইয়েছেন এবং নিজেও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।’
ইউএনও মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘এনসিপি নেতাকে মঞ্চে বসানোয় বিএনপি নেতারা ক্ষুব্ধ হন। পরে উভয় পক্ষের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন