বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্মচারীরা স্বাস্থ্যখাত সংস্কারের দাবিতে অনশনকারীদের ওপর হামলার পর থানায় মামলা করেছেন। হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার জুয়েল চন্দ্র শীল মহিউদ্দিন রনি ও কন্টেন্ট ক্রিয়েটর কাফিসহ ৪২ জনের বিরুদ্ধে এজাহার দাখিল করেছেন। এদের মধ্যে ১২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, বাকি ৩০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
মেট্রোপলিটন কোতয়ালী মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) রাতে থানায় এজাহার জমা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
মামলার বাদী ওয়ার্ড মাস্টার জুয়েল চন্দ্র শীল জানিয়েছেন, ‘মামলাটি পরিচালকের পক্ষ থেকে করা হয়েছে। আমি কেবল বাদী হিসেবে নাম উল্লেখ করেছি। আমরা হামলা করিনি, আমাদের প্রতিরোধ করতে হয়েছে। আন্দোলনকারীরা হামলা করতে এসেছিল।’
এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া ১১টায় হাসপাতালের সামনের সড়কে মানববন্ধন চলাকালে মহিউদ্দিন রনির নেতৃত্বে ২৫-৩০ জনের একটি দল হামলা চালায়। হামলাকারীরা লোহার রড, চাপাতি, এসএস পাইপ, হকিস্টিক ও লাঠি ব্যবহার করে অন্তত ১০ জনকে আহত করে। মানববন্ধনে অংশ নেওয়া নার্সদের ওপরও আক্রমণ চালানো হয়। হামলাকারীরা পরে হত্যার হুমকি দেয়।
আসামিদের মধ্যে রয়েছেন রাকিন, সুনান, সিফাত, শামিম, আল মুসা, সিফা, দাইয়ান, কাফি, এইচএম আবুল খায়ের, নূরুন নাহার ও সিয়াম। অধিকাংশই স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থী, কয়েকজন কনটেন্ট ক্রিয়েটর।
তবে প্রত্যক্ষদর্শী ও ভিডিও বিশ্লেষণে জানা যায়, আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার আগে হাসপাতালের কর্মচারীরা মায়ের চিকিৎসার জন্য আসা বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাব্বির সিকদারকে মারধর করেন এবং তাকে ও তার মাকে একটি কক্ষে আটকে রাখেন। পরে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালানো হয়। এজাহারে নাম উল্লেখ করা অনেকেই হামলায় উপস্থিত ছিলেন না।
আন্দোলনকারী মহিউদ্দিন রনি দাবি করেছেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের উস্কানিতে আমাদের ওপর হামলা করা হয়েছে। আমাদের আন্দোলন চলবে যতদিন দাবি পূরণ হবে। মামলা-হামলার ভয় দেখিয়ে আমাদের দমানো যাবে না। আহতদের চিকিৎসা চলছে, সুস্থ হলে কর্মসূচিতে ফিরব।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন