রাঙামাটি সদর জেনারেল হাসপাতালে রোগীর চাপ দিনে দিনে বাড়ছে। শিশু, প্রসূতি ও বৃদ্ধ রোগীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় হাসপাতালের শিশু ও পুরুষ ওয়ার্ডে বেডের সংকট চরমে পৌঁছেছে। ফলে বাধ্য হয়ে রোগীদের মেঝেতে শুইয়ে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।
হাসপাতালটিতে বর্তমানে ১০০ বেড অনুমোদিত থাকলেও প্রতিদিন গড়ে ২৫০ জন রোগীর চিকিৎসা চলছে। অথচ ১৫০ বেডের নতুন ছয়তলা ভবনটির কাজ সম্পন্ন হলেও এখনো সেখানে চিকিৎসাসেবা শুরু হয়নি।
রাঙামাটির সিভিল সার্জন ডা. নূয়েন খীসা জানান, গণপূর্ত বিভাগ ভবনের কাজ শেষ করেছে। তবে পুরোপুরি হস্তান্তর করা হয়নি। নতুন ভবনে উঠতে গেলে উন্নত যন্ত্রপাতি, পর্যাপ্ত বেড, ডাক্তার, নার্স ও সাপোর্টিং স্টাফ প্রয়োজন। সেগুলো না থাকলে ভবন ব্যবহার শুরু করা সম্ভব নয়।
এদিকে গাইনি ওয়ার্ডে ডেলিভারি রোগীদের অনেককে বেড না পেয়ে মেঝেতে শুয়ে থাকতে দেখা গেছে। প্রসূতি রোগীরা অভিযোগ করেছেন, যথাযথ সেবা না পাওয়ায় তারা চরম দুর্ভোগে পড়ছেন।
স্থানীয়রা বলেন, রাঙামাটির পাশাপাশি দুর্গম সাজেক, বরকল, নানিয়ারচর, লংগদু, বিলাইছড়ি ও জুরাছড়ি থেকে নিয়মিত রোগীরা সদর হাসপাতালে আসেন।
এ ছাড়াও চট্টগ্রাম জেলার রাউজান এবং রাঙ্গুনিয়া উপজেলা থেকে প্রচুর রোগী আসে রাঙামাটি সদর জেনারেল হাসপাতালে। রাঙামাটি পার্বত্য জেলার স্বাস্থ্যসেবা ভেঙে পড়েছে চরমভাবে। দীর্ঘ ৭-৮ বছর আগে রাঙামাটিতে ম্যালেরিয়া জ্বর ও ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়া জ্বর ছিল না।
বর্তমানে এই রোগের প্রাদুর্ভাব দিন দিন বাড়ছে। তার কারণ হলো- গত ৫-৬ বছর ধরে রাঙামাটিতে ম্যালেরিয়ার ওপর তেমন কোনো চিকিৎসাসেবা পায়নি রাঙামাটিবাসী। জেলায় ম্যালেরিয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পতিত আওয়ামী লীগের নাম্বার ওয়ান ফ্যাসিস্টকে। গত ৫-৬ বছর ধরে তিনি ঘরে বসে থেকে ও চেম্বার করে ম্যালেরিয়া প্রজেক্টের বেতন ভাতা খাচ্ছে। ম্যালেরিয়া প্রজেক্ট বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করছে ।
তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বললে তাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। তার বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক অভিযোগ। তার বিরুদ্ধে সাবেক সিভিল সার্জন ডাক্তার বিপাশ খীসা, নিহার রঞ্জন নন্দী ও বর্তমান সিভিল সার্জন নূয়েন খীসা লিখিত অভিযোগ দিয়েও তার কোনো প্রতিকার পায়নি।
স্বাস্থ্যসেবা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নতুন ভবনটি দ্রুত চালু করে প্রয়োজনীয় জনবল ও যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা না হলে রাঙামাটির স্বাস্থ্য খাতের এই সংকট নিরসন সম্ভব নয়।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন