বাংলাদেশে দীর্ঘদিনের দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, অর্থপাচার ও গুম-খুনসহ অপরাধ আর মেনে নেওয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ফিনল্যান্ড শাখার আহ্বায়ক মো. আহাদ শিকদার। তিনি বলেন, ‘নতুন প্রজন্মের শক্তি ও প্রবাসীদের ঐক্য কাজে লাগিয়ে গড়া হবে স্বচ্ছ, ন্যায়ভিত্তিক ও উন্নত বাংলাদেশ।’
এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘প্রবাসে থেকেও দেশের জন্য কাজ করা যায়। পুরোনো জঞ্জাল সরিয়ে আমরা কাজ দিয়ে প্রমাণ করব, প্রবাসীরাও দেশের পরিবর্তনের সহযোদ্ধা হতে পারে।’
২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনে প্রবাস থেকেও সরব ছিলেন আহাদ শিকদার। ফিনল্যান্ডের হেলসিঙ্কিতে পার্লামেন্ট ভবনের সামনে শতাধিক প্রবাসী বাংলাদেশিকে সংগঠিত করে তিনি আওয়াজ তোলেন— ‘ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ চাই।’
সেদিনের কর্মসূচি প্রবাসীদের হৃদয়ে নতুন দেশপ্রেম জাগায়। আহাদ নিজেই লিফলেট প্রস্তুত থেকে শুরু করে স্লোগান ও সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করেন। পরে ইউরোপজুড়ে আন্দোলনরত বাংলাদেশিদের সঙ্গে সমন্বয় করে বিভিন্ন কর্মসূচি আয়োজন করেন। নিজের অর্থ ব্যয় করে সহায়তা দেন এবং দেশের আন্দোলনরত কর্মীদের কাছে আর্থিক সহায়তাও পৌঁছে দেন।
আহাদ শিকদারের বাড়ি ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার গলুয়া গ্রামে। তিনি মো. সালাম শিকদারের ছেলে। বর্তমানে তিনি ফিনল্যান্ডের LAB ইউনিভার্সিটি অব অ্যাপ্লায়েড সায়েন্সেস-এ সাসটেইনেবল সলিউশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে পড়াশোনা করছেন এবং খণ্ডকালীন চাকরি করছেন।
গত ২৬ জুলাই এনসিপি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন ও মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরউদ্দীন পাটওয়ারীর স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এনসিপি ডায়াস্পোরা অ্যালায়েন্স, ফিনল্যান্ড কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে আহাদ শিকদারকে আহ্বায়ক, জাহিদ হাসানকে যুগ্ম আহ্বায়ক, আলমগীর হোসেনকে সদস্য সচিব, রাহাদ হোসেনকে মুখ্য সংগঠক, মনির মিয়াজিকে অর্থ সচিব ও রোমানা আফরীনকে কার্যনির্বাহী সচিব করে ৩১ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়।
ঝালকাঠি এনসিপির প্রধান সমন্বয়কারী মাইনুল ইসলাম মান্না বলেন, ‘আহাদ শিকদার প্রবাসেও দেশের জন্য বিপ্লবী ভূমিকা পালন করছেন। আমরা তার সফলতা কামনা করি।’
এনসিপির ডেপুটি চিফ অর্গানাইজার ডা. মাহমুদা আলম মিতু বলেন, ‘ফিনল্যান্ড কমিটি প্রবাসীদের রাজনৈতিকভাবে আরও সচেতন করবে। আহাদ শিকদার জুলাই আন্দোলনে বিদেশ থেকেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।’
এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক ও ডায়াস্পোরা কো-অর্ডিনেটর দিলশানা পারুল জানান, ‘প্রবাসীরা শুধু অর্থনৈতিক নয়, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিকভাবেও বাংলাদেশের শক্তি। আমাদের লক্ষ্য—ফ্যাসিবাদী শাসনের সময়ে সংঘটিত সকল অপকর্মের বিচার এবং একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন