দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়েছে ভাইরাসজনিত জ্বর। সঙ্গে ডায়রিয়ার প্রকোপও বাড়ছে। হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন ছোট থেকে বড় সবাই।
একজন আক্রান্ত হলে পরিবারের অন্য সদস্যরাও পরপর আক্রান্ত হয়ে যাচ্ছেন। শুধু জ্বরই নয়, সঙ্গে থাকছে শরীর ব্যথা, সর্দি-কাশি, বমি, এমনকি শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা বেশি ভুগছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, বহির্বিভাগে প্রতিদিন গড়ে ৫৫০ থেকে ৬৫০ জন রোগী চিকিৎসা নিতে আসছেন। এদের বেশিরভাগই জ্বর, সর্দি-কাশি, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় ভুগছেন।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকেই বহির্বিভাগে রোগীর লম্বা লাইন। নারী-শিশু-বৃদ্ধ সবাইকে নিয়ে স্বজনদের উপচেপড়া ভিড়। ৫০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হলেও প্রতিদিন গড়ে ৮০ থেকে ৯০ জন রোগী ভর্তি হচ্ছে অন্তবিভাগে। ফলে শযার অভাবে ওয়াডের মেঝেতে অথবা বারান্দায় শুয়ে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। অবস্থা সম্পন্নরা ছুটছেন স্থানীয় বেসরকারি ক্লিনিকে।
কর্তব্যরত নার্সরা জানান, প্রতিদিন গড়ে ৮০ থেকে ৯০ জন রোগী ভর্তি হচ্ছেন। আর চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ী ফিরছেন ১৫ থেকে ২০ জন। শয্যা সংকটে অতিরিক্ত রোগীর চাপ সামলাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। শিশুদের মধ্যে জ্বর ও ডায়রিয়ার প্রকোপই বেশি।
চার বছরের মেয়েকে নিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা শিরিন আক্তার বলেন, তিন দিন ধরে বাচ্চার জ্বর-কাশি। ডাক্তার দেখানোর জন্য লাইন ধরেই দাঁড়িয়ে আছি। রোগীর চাপ বেশি হওয়ায় ডাক্তার দেখাতে একটু দেরি হচ্ছে।
আরেক মা ফিরোজা বেগম বলেন, বুধবার (২০ আগস্ট) রাত থেকে ৫ বছরের ছেলে জ্বরে ভুগছে, বমি হচ্ছে, পাতলা পায়খানাও হয়েছে কয়েকবার। ডাক্তার দেখে ওষুধ দিয়েছেন। সব ওষুধই হাসপাতাল থেকেই পাওয়া গেছে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ডা. নূর- ই- আলম আনন্দ বলেন, আবহাওয়া পরিবর্তন ও আর্দ্রতার কারণে ভাইরাস জ্বর বাড়ছে। শিশু-বয়স্কদের আলাদা যতœ নিতে হবে। শরীর শুকনো রাখতে হবে, ঘরে আলো-বাতাস চলাচল রাখতে হবে। আক্রান্তদের অন্যদের থেকে দূরে রাখতে হবে এবং অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। পাশাপাশি নিয়মিত ওষুধ সেবন করতে হবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মশিউর রহমান বলেন, বর্ষার আর্দ্র আবহাওয়ায় ভাইরাসজনিত ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রকোপ বেড়েছে। প্রতিদিন শত শত রোগী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসছেন। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই, সময়মতো চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে দ্রæত সেরে ওঠা সম্ভব।
তিনি বলেন, গত ১০ আগস্ট থেকে ২০ আগস্ট পর্যন্ত ১১ দিনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগে ৫ হাজার ১২৬ জন রোগীকে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়েছে। একই সময়ে অন্তবিভাগে ভর্তি হয়েছেন ৮২৫ জন এবং জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন এক হাজার ৭৬০ জন।
তিনি আরও বলেন, রোগীর চাপ বাড়লেও কর্মরত তিনজন মেডিকেল অফিসার ও দুইজন জুরিয়র কনসালট্যান্টসহ উপ-কমিউনিট মেডিকেল অফিসার (সেকমো) দের দিয়ে রোগীর চাপ দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এরমধ্যেও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা হচ্ছে।

 
                             
                                    
 সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন 
                                     
                                     
                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                    -20251030233957.webp) 
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                             
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
       -20251025002118.webp) 
        
        
        
        
        
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন