মঙ্গলবার, ২৬ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


যশোর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: আগস্ট ২৬, ২০২৫, ০২:১৪ পিএম

যশোর হাসপাতালে ওষুধ চুরিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ

যশোর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: আগস্ট ২৬, ২০২৫, ০২:১৪ পিএম

যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবীদের বিরুদ্ধে ওষুধ চুরি, অর্থ বাণিজ্যসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। কর্মচারী সংকটের অজুহাতে নিয়োগপ্রাপ্ত এসব স্বেচ্ছাসেবীরা এখন হাসপাতালের বিভিন্ন সেবামূলক কার্যক্রমে লিপ্ত থাকলেও, একাধিক সূত্র জানিয়েছে, তাদের বড় অংশই রোগীদের কাছ থেকে অর্থ আদায় এবং সরকারি মালামাল চুরির মতো অপরাধে জড়িত।

প্রশাসনিক সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক ডা. কামরুল ইসলাম বেনু ৪২ জন এবং ২০১৯ সালের জুন-জুলাই মাসে ডা. আবুল কালাম আজাদ লিটু আরও ৩০ জনকে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে নিয়োগ দেন। বর্তমানে এই সংখ্যা দেড় শতাধিক হলেও, তালিকাভুক্ত আছেন ৯২ জন। কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই দায়িত্বপ্রাপ্ত কিছু কর্মচারী স্বেচ্ছায় আরও অনেককে যুক্ত করেছেন।

নিয়োগপ্রক্রিয়া নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন। সরাসরি নিয়োগ ও আউটসোর্সিং পদ্ধতি ছাড়া হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিজেরা অবৈধভাবে নিয়োগ বোর্ড গঠন করে স্বেচ্ছাসেবীদের যুক্ত করেছে। রাজস্ব খাতে ১৭৬ জন কর্মচারী থাকা সত্ত্বেও বহিরাগতদের প্রভাব বিস্তারে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নিয়মিত কর্মীরা।

হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, সার্জারি, মেডিসিন, গাইনি, শিশু, সংক্রামকসহ প্রায় সব ওয়ার্ডেই সরকারি কর্মীদের পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবীরা নিয়োজিত রয়েছেন।

অভিযোগ রয়েছে, তারা কাজের বিনিময়ে নিয়মিত অর্থ গ্রহণ করছেন। রোগীর ক্যাথেটার লাগানো, খুলে দেয়া, ড্রেসিং, টলি ঠেলা, বিষ ওয়াশ, এমনকি শয্যা পাওয়ার ক্ষেত্রেও টাকা আদায়ের ঘটনা নিয়মিত। ছেলে সন্তান হলে লেবার ওয়ার্ডে ১ হাজার ও মেয়ে সন্তান হলে ৫০০ টাকা দাবি করা হয় বলে জানিয়েছেন রোগীর স্বজনরা।

সম্প্রতি শিশু ওয়ার্ডে স্বেচ্ছাসেবী সোনিয়া ও আউটসোর্সিং কর্মী আরিফ হোসেন ছাড়পত্র দিতে গিয়ে রোগীর স্বজনদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করেন, যার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।

এছাড়া মহিলা সার্জারি ওয়ার্ডে ৭৮টি ইনজেকশন চুরির অভিযোগে কহিনুর ও পলি নামে দুই স্বেচ্ছাসেবীকে বরখাস্ত করা হয়। ২০২২ সালে কহিনুরকে ড্রেসিং বাবদ অর্থ আদায়ের অভিযোগে একবার বের করে দেওয়া হলেও, পরে তিনি আবার কাজে ফেরেন। কহিনুর রোগীর স্বজনদের হাতে ওষুধের শর্ট স্লিপ ধরিয়ে দিয়ে নিজের মতো চিকিৎসাও করতেন বলে জানা গেছে।

এদিকে ২০২৪ সালের ১৪ জুলাই ভোরে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের স্টোর রুম থেকে মালামাল ভর্তি ৪টি বস্তা চুরি করে নিয়ে যায় হৃদয়সহ দুই ২জন স্বেচ্ছাসেবী স্বেচ্ছাসেবী ওসমান ও হৃদয়। ওই বস্তায় মূল্যবান ওষুধ, প্লাস্টার, সুতাসহ অন্যান্য মালামাল ছিলো। মালামাল নিয়ে যাওয়ার সময় হাসপাতালের বাইরে তারা ধরা পড়েন।

পরের দিন বিকেলে চুরি হওয়া ৪ টি বস্তা স্বেচ্ছাসেবী হৃদয়ের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়। হৃদয়ের বাড়ি সদর উপজেলার ইছালী গ্রামে। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে বস্তাগুলো খোলার পর তাতে বিভিন্ন ওষুধ সামগ্রীর কার্টন ও পুরাতন কাগজপত্র পাওয়া যায়। এ ঘটনায় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে অর্থোপেডিক বিভাগের ডা. আব্দুর রশিদকে সভাপতি করে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিলো। 

সূত্র জানায়, বর্তমানে সরকারি এ হাসপাতালে স্বেচ্ছাসেবীদের দাপট চলছে। তারা রোগীর সেবার নামে লুটপাটে ব্যস্ত রয়েছেন। তাদের কর্মকান্ডে সরকারি হাসপাতালের দুর্নাম ছড়িয়ে পড়ছে। কর্তৃপক্ষের সঠিকভাবে তদারকি ব্যবস্থা ও জবাবদিহিতা না থাকায় স্বেচ্ছাসেবীরা ফ্রি স্টাইলে অনিয়মের সুযোগ পাচ্ছেন। তাদের লাগাম টানতে না পারলে হাসপাতালে স্বেচ্ছাসেবীদের রাজত্ব চলতেই থাকবে। 

এই বিষয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হুসাইন শাফায়াত জানান, ‘স্বেচ্ছাসেবীদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ শোনা যাচ্ছে। সংশোধন হওয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এরপরেও যদি কেউ বাণিজ্যে লিপ্ত থাকে তাকে হাসপাতালে কাজ করার সুযোগ দেয়া হবে না।  এরই মধ্যে অনিয়মের কারণে রুপা নামে এক স্বেচ্ছাসেবীকে হাসপাতাল থেকে বের করে দেয়া হয়েছে।’

Link copied!