পূর্বাচল তিনশো ফিট সড়কে ফুটওভারব্রিজ, জেব্রা ক্রসিং ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে এলাকাবাসী।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) সকালে সড়কের মস্তুল এলাকায় এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেয় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার হাজারো মানুষ। কর্মসূচির কারণে সড়কের উভয় পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, পূর্বাচল তিনশো ফিট সড়ক নির্মাণকালে মস্তুল ও পিংক সিটি এলাকায় ফুটওভারব্রিজ নির্মাণের পরিকল্পনা থাকলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। অথচ এ অঞ্চলের দুই পাশে রয়েছে অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিল্পকারখানা ও আবাসন প্রকল্প। প্রতিদিন প্রায় চার থেকে পাঁচ হাজার মানুষ ঝুঁকি নিয়ে সড়ক পারাপার হয়। কিন্তু সড়কটিতে নেই কোনো পুলিশ বক্স, নেই জেব্রা ক্রসিং। ফলে বেপরোয়া গতিতে চলা মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার ও ট্রাকের ধাক্কায় প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে, কেড়ে নিচ্ছে নিরীহ মানুষের প্রাণ।
স্থানীয়দের দাবি, সড়কটি চলাচলের জন্য উন্মুক্ত হওয়ার পর থেকে কুড়িল বিশ্বরোড থেকে কাঞ্চন সেতু পর্যন্ত অন্তত ৭০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এর মধ্যে শুধু মস্তুল এলাকায় প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ২০ জন। শুধু গত দুই মাসেই এই সড়কে মোটরসাইকেল, অটোরিকশা, প্রাইভেটকার ও ট্রাক দুর্ঘটনায় অন্তত ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে শিক্ষার্থী, শ্রমজীবী, প্রবাসফেরতসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ছিলেন। আহত হয়েছেন আরও কয়েক ডজন।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, রাজধানীর কুড়িল প্রগতি সরণি থেকে কাঞ্চন সেতু পর্যন্ত ১২.৫ কিলোমিটার বিস্তৃত পূর্বাচল তিনশোফিট সড়ক প্রতিদিনই পরিণত হচ্ছে মৃত্যুর ফাঁদে। চৌদ্দ লেন বিশিষ্ট এ সড়কে গাড়ি চলে ঘণ্টায় ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার বেগে। উল্টো পথে গাড়ি চলা, নিরাপত্তাহীন রাস্তা, ফুটওভারব্রিজের অভাব এবং জেব্রা ক্রসিং না থাকায় পথচারীরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে পড়ছেন।
বক্তারা আরও অভিযোগ করেন, বসুন্ধরা আবাসন প্রকল্প এলাকায় প্রতিটি পয়েন্টে ওভারব্রিজ নির্মাণ হলেও মস্তুল ও পিংক সিটি এলাকায় প্রাণঘাতী দুর্ঘটনার পরও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ। অথচ জনগণের করের টাকায় সরকার পরিচালিত হলেও সাধারণ মানুষের প্রাণের দাবিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে না।
তারা দ্রুত মস্তুল ও পিংক সিটি এলাকায় ফুটওভারব্রিজ নির্মাণ, জেব্রা ক্রসিং চিহ্নিতকরণ ও পুলিশ বক্স স্থাপনের দাবি জানান। অন্যথায় তারা আরও বড় ধরনের কর্মসূচি ঘোষণা করবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন