বৃহস্পতিবার, ০২ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বাগেরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশিত: অক্টোবর ২, ২০২৫, ০৭:৩০ পিএম

অব্যবস্থাপনা-দালালচক্রে ধুঁকছে ফকিরহাটের স্বাস্থ্যসেবা

বাগেরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশিত: অক্টোবর ২, ২০২৫, ০৭:৩০ পিএম

ফকিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

ফকিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

জনবল সংকট, চরম অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম ও দালালদের দৌরাত্ম্যে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা সাধারণ রোগীরা। একসময় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের শীর্ষ ১৫ হাসপাতালের তালিকায় থাকা প্রতিষ্ঠানটি এখন নেমে এসেছে ৯৩ নম্বরে। দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে হাসপাতালের সুনাম পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

৫০ শয্যার এ হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ৬০০ থেকে ৭০০ রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। কিন্তু পরিচ্ছন্নতার জন্য মঞ্জুরীকৃত ৭ আয়া ও সুইপারের মধ্যে কর্মরত মাত্র একজন। ফলে হাসপাতালের ভেতর ও টয়লেটে দুর্গন্ধে রোগীরা ভোগান্তিতে পড়ছেন। তাদের অভিযোগ, অপরিচ্ছন্ন টয়লেট থেকে ডায়রিয়া, হেপাটাইটিস বি ও জন্ডিসসহ পানিবাহিত রোগের ঝুঁকি বাড়ছে।

মোট মঞ্জুরীকৃত পদের ৩৬ দশমিক ৫ শতাংশ শূন্য রয়েছে। ৩০ জন প্রথম শ্রেণির চিকিৎসকের মধ্যে কর্মরত আছেন মাত্র ১৩ জন। একজন জুনিয়র সার্জারি কনসালটেন্ট কাগজে-কলমে থাকলেও তিনি দীর্ঘদিন অন্য হাসপাতালে কর্মরত থাকায় অনেক অপারেশন বন্ধ হয়ে আছে। গাইনি ও অ্যানেস্থেসিয়া চিকিৎসক না থাকায় প্রসূতি রোগীরা বিপাকে পড়ছেন। ফলে বাধ্য হয়ে বেসরকারি ক্লিনিকে গিয়ে ২০ থেকে ৪০ হাজার টাকা খরচ করছেন দরিদ্র রোগীরা।

এ ছাড়া ৩ জন কনসালটেন্ট থাকলেও কেউ সপ্তাহে ১ দিন, কেউ ২ দিন অফিসে আসেন। বাকি সময়ে তারা ডেপুটেশনে অন্যত্র কর্মরত থাকেন। এই সুযোগে দালালচক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। দীর্ঘদিন ধরে মেকানিক না থাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট, ল্যাব যন্ত্রপাতি ও অন্যান্য প্রযুক্তিগত সমস্যা সমাধান করা যাচ্ছে না।

অভিযোগ রয়েছে, চিকিৎসকদের ডিউটির সময় সকাল সাড়ে ৮টা থেকে দুপুর আড়াইটা হলেও অনেকেই সকাল ১০টার আগে আসেন না এবং দুপুর দেড়টার মধ্যে চলে যান। কিছু চিকিৎসক ৭০ শতাংশ কমিশনের লোভে রোগীদের অপ্রয়োজনীয় টেস্ট করাচ্ছেন। এদিকে হাসপাতালের এক্স-রে মেশিন দীর্ঘদিন নষ্ট এবং আধুনিক ল্যাব মেশিন নেই। ফলে রোগীরা বিভ্রান্ত ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন।

স্থানীয়রা মনে করছেন, ফকিরহাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ঘিরে একটি দালালচক্র সক্রিয়। জরুরি ভিত্তিতে জনবল নিয়োগ ও অব্যবস্থাপনা রোধ না করলে এ হাসপাতালের মান পুরোপুরি ভেঙে পড়বে। তারা প্রশাসনের কঠোর নজরদারি ও দুর্নীতি দমন কমিশনের হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন।

রোগীরা বলছেন, দ্রুত চিকিৎসক, নার্স ও সহায়ক কর্মী নিয়োগ দিতে হবে। হাসপাতাল পরিচ্ছন্ন রাখতে সুইপার নিয়োগ, অপারেশন থিয়েটার চালু এবং গাইনি-অ্যানেস্থেসিয়া চিকিৎসক নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি দালাল ও কমিশন বাণিজ্য বন্ধে প্রশাসনের কঠোর ব্যবস্থা এবং নষ্ট এক্স-রে ও ল্যাব মেশিন দ্রুত মেরামতের দাবি তুলেছেন তারা।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আসাদুজ্জামান সাগর বলেন, ‘জনবল সংকটে হাসপাতালের সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করতে অসুবিধা হচ্ছে। বিশেষ করে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ বা আউটসোর্সিং কর্মী নিয়োগ অত্যন্ত জরুরি। এসব পদে নিয়োগ আমার হাতে নেই। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Link copied!