মঙ্গলবার, ০৭ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বরগুনা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: অক্টোবর ৭, ২০২৫, ০৪:৪৪ পিএম

বরগুনায় স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামী-সতিন ও জামাতার মৃত্যুদণ্ড

বরগুনা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: অক্টোবর ৭, ২০২৫, ০৪:৪৪ পিএম

রায় ঘোষণার পর কবির তালুকদার ও সুজনকে জেল হাজতে নেওয়া হয়। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

রায় ঘোষণার পর কবির তালুকদার ও সুজনকে জেল হাজতে নেওয়া হয়। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

বরগুনায় যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে বিদ্যুৎ শক দিয়ে হত্যা করার দায়ে স্বামী, সতিন ও মেয়ের জামাইকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেক আসামিকে ১ লাখ টাকা করে অর্থদণ্ডও দেওয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় তিন আসামিই আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) দুপুর ২টার দিকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ বেগম লায়লাতুল ফেরদৌস এই রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন পাথরঘাটা উপজেলার রায়হানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত মাজেদ তালুকদারের ছেলে কবির তালুকদার (৫৯), তার দ্বিতীয় স্ত্রী এলাচী বেগম (৫০) ও এলাচী বেগমের ছেলে সুজন (কবির তালুকদারের জামাতা)। তিনি একই গ্রামের মোস্তফার ছেলে।

মামলার বাদী ও নিহত মহিমা বেগমের ছেলে হেলাল তালুকদার এই মামলার প্রধান সাক্ষীও ছিলেন।

মামলার এজাহার ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৩০ বছর আগে মহিমা বেগমকে বিয়ে করেন কবির তালুকদার। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য তিনি মহিমাকে নিয়মিত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন।

এ ছাড়া, কবির তালুকদারের দ্বিতীয় স্ত্রী এলাচী বেগমের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক ছিল। বাদীর ছোট বোন রেখা বেগম একদিন তার বাবা ও শাশুড়িকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলেন এবং প্রতিবাদ করেন। এরপর থেকেই এলাচী ও সুজন মিলে রেখাকে নির্যাতন শুরু করেন।

নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে রেখা আত্মহত্যা করেন। তার মৃত্যুর ৩-৪ বছর পর কবির তালুকদার দ্বিতীয়বার এলাচী বেগমকে বিয়ে করেন, যা মহিমা বেগম মেনে নেননি। এরপর থেকেই তার ওপর নির্যাতনের মাত্রা আরও বেড়ে যায় এবং যৌতুকের জন্য চাপ বাড়ে। একপর্যায়ে মহিমা বেগম বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তখন বেঁচে গেলেও পরে পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হয়।

রায় ঘোষণার পর এলাচী বেগমকে জেল হাজতে নেওয়া হয়। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

২০১৯ সালের ২৫ অক্টোবর সকালে কবির তালুকদার তার ছেলে হেলালকে বলেন, ‘তোর শ্বশুর অসুস্থ, তুই তাড়াতাড়ি গিয়ে দেখ।’ সরল বিশ্বাসে হেলাল তার স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে শ্বশুরবাড়ি কালমেঘায় চলে যান। পরে তিনি বুঝতে পারেন, শ্বশুর সুস্থ ছিলেন এবং তার পিতাও কোনো ফোন করেননি।

সেদিন দুপুর ১২টা থেকে ১টার মধ্যে মহিমা বেগমকে তার বাবার বাড়ির সম্পত্তি বিক্রি করে টাকা দিতে বলা হয়। তিনি রাজি না হওয়ায় পরিকল্পনা অনুযায়ী কবির তালুকদার, এলাচী বেগম ও সুজন মিলে তার ডান হাতের তিনটি আঙুল, পিঠ ও বুকে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে হত্যা করেন।

এরপর তারা চিৎকার করে বলেন, ‘মহিমা বিদ্যুতের শক খেয়েছে।’ হেলাল বাড়ি ফিরে দেখেন, তার মা আমড়া গাছের নিচে হেলে পড়ে আছেন।

বাদী হেলাল তালুকদার বলেন, ‘আমি আমার মায়ের হত্যাকারীদের ফাঁসির রায়ে সন্তুষ্ট। আদালতের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ, আইনকে শ্রদ্ধা জানাই।’

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর হোসনেয়ারা শিপু জানান, এই মামলায় আসামিরা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। আদালতে সাক্ষীদের জবানবন্দিতে তা প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক তাদের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। রায়ের মাধ্যমে সমাজে অপরাধ প্রবণতা কমবে বলে আমরা আশা করি।

আসামিপক্ষের পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট তারিকুল ইসলাম তরু ফরাজী (কবির তালুকদার) এবং অ্যাডভোকেট ইমরান হোসেন (এলাচী বেগম ও সুজন)।

Link copied!