সোমবার, ১৩ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৩, ২০২৫, ০৩:৫২ পিএম

আখাউড়ায় বাড়ছে স্ক্যাবিসের সংক্রমণ

আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৩, ২০২৫, ০৩:৫২ পিএম

স্ক্যাবিসের সংক্রমণ বাড়ছে আখাউড়ায়। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

স্ক্যাবিসের সংক্রমণ বাড়ছে আখাউড়ায়। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে ছোঁয়াচে চর্মরোগ স্ক্যাবিসের সংক্রমণ। শিশু, নারী, বয়স্কসহ সব বয়সী মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।

এখন প্রতিদিন গড়ে শতাধিক আক্রান্ত হওয়া রোগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ ছাড়াও বিভিন্ন চিকিৎসাকেন্দ্রে প্রতিনিয়ত বাড়ছে স্ক্যাবিস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাসেবা পেয়ে খুশি রোগীরা।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা গেছে, চিকিৎসকের কক্ষের সামনে রোগীদের লম্বা লাইন, অনেকে দাঁড়িয়ে বা মেঝেতে বসে অপেক্ষা করছেন চিকিৎসার জন্য। হাসপাতালের চিকিৎসকরা রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বছরের আকস্মিক বন্যা শেষে এ উপজেলায় ছোঁয়াচে রোগ স্ক্যাবিসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এতে আক্রান্ত হয়েছিল শিশু থেকে বৃদ্ধ নানা বয়সী মানুষ। বেশ কয়েক মাস থাকার পর স্ক্যাবিসের সংক্রমণ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। কিন্তু বেশ কয়েক দিন ধরে সচেতনতার অভাবে আবারও রোগটির সংক্রমণ বাড়তে থাকে। এতে আক্রান্ত হচ্ছে নানা বয়সী লোকজন।

চিকিৎসকরা জানান, স্ক্যাবিস একটি ছোঁয়াচে চর্মরোগ। এটি আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে গেলে, আক্রান্ত রোগীর পোশাক, ব্যবহৃত গামছা, তোয়ালে ও আক্রান্ত রোগীর ব্যবহৃত বালিশ, বিছানা ব্যবহার বা স্পর্শের মাধ্যমে ছড়ায়। যার ফলে আক্রান্ত রোগী থেকে সচেতনতার অভাবে পরবর্তীতে পরিবারের অন্য সদস্যরাও আক্রান্ত হয়। যে কারণে এ রোগটি দ্রুত সংক্রমিত হয়। এ জন্য এ রোগ নির্মূলে শুধু চিকিৎসা নয়, এ রোগ প্রতিরোধে সর্বোচ্চ সচেতনতা খুব বেশি জরুরি। সময়মতো চিকিৎসা না নিলে কিডনিসহ ত্বকের জটিলতা দেখা দিতে পারে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন গড়ে শতাধিক রোগী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে এই রোগের চিকিৎসা নিচ্ছেন। সাধ্যানুযায়ী আগত রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার পাশাপাশি এ রোগীদের ক্রিম, লোশনসহ প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র দেওয়া হচ্ছে।

পৌর শহরের তারাগন এলাকা থেকে আসা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, আমার ছেলে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ছে। বেশ কয়েক দিন ধরে তার শরীর ও হাতে শুধু চুলকাচ্ছে। ফার্মেসি থেকে চুলকানির ওষুধ খাওয়ার পর কমছে না। এখন সারা শরীরের মধ্যে ছোট ছোট লাল দানার মতো হয়ে উঠছে। চুলকানির কারণে সে ঘুমাতে পারছে না। তাই ছেলেকে ডাক্তার দেখানে হাসপাতালে আসা। রোগীর ভিড় থাকায় অনেক্ষণ দাঁড়িয়ে ডাক্তার দেখানো হয়। হাসপাতাল থেকে সরকারি ক্রিম ও নানা জাতের ওষুধ পাওয়ায় তিনি খুবই খুশি।

উপজেলার মোগড়া এলাকার মো. মুর্শেদ মিয়া বলেন, গত কয়েক দিন ধরে আমার শরীরে বিভিন্ন অংশে শুধু চুলকায়। চুলকানির জালায় ঘুমাতে খুবই কষ্টকর হয়ে উঠছে। এখন আমার স্ত্রী ও ছেলের হয়েছে। ছেলের গায়ে ছোট ছোট লাল দানা দেখা যায়। সারাক্ষণ শুধু চুলকাই। প্রথমে এলাকার একটি ফার্মেসি থেকে ওষুধ খেয়ে কোন কাজ হয়নি। তাই হাসপাতালে এসে ডাক্তার দেখানো হয়েছে। হাসপাতাল থেকে ক্রিমসহ প্রয়োজনীয় ওষুধ দিয়েছে বলে জানায়।

পৌর শহরের মসজিদ পাড়া এলাকার গৃহিণী মোছা. তানিয়া আক্তার বলেন, গত বছর ছেলের চুলকানি হয়ে ছিল। সাথে সাথে ডাক্তার দেখানো হয়। এ রোগে তার বেশ কিছু দিন কষ্ট করতে হয়েছে। গত কয়েক দিন আগে আবারও ছেলেটার হাতে ও শরীরের বিভিন্ন অংশে চুলকানি দেখা দেয়। এখন পুরো পরিবারে লোকদের কম বেশি আক্রান্ত আছে। এই চুলকানিতে খুবই কষ্ট করছে। তাই বাধ্য হয়েই হাসপাতালে এসে ডাক্তার দেখিয়ে ওষুধ নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন হাসপাতালের ওষুধ খুবই ভালো কাজ করে।

আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার হিমেল খান বলেন, স্ক্যাবিস পরজীবী জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত এক ধরনের চর্মরোগ। শিশু থেকে বৃদ্ধ সকলেই এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এ রোগে সঠিক চিকিৎসা ও এ রোগ প্রতিরোধে সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি। তিনি বলেন এমনিতেই এ রোগ কমবেশি হয়ে থাকে। তবে গত বছর এ উপজেলায় এ রোগ চরম আকার ধারণ করেছিল। গত কয়েক মাস এ রোগটি অনেকটাই কম ছিল। হঠাৎ করে আবারও এ রোগটি বাড়তে দেখা যাচ্ছে। প্রতিদিন গড়ে শতাধিক এ রোগী হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নিচ্ছেন। হাসপাতালে আসা রোগীদের চিকিৎসাপত্রের সঙ্গে প্রয়োজনীয় ওষুধ ও রোগ প্রতিরোধে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এ রোগ দীর্ঘদিন শরীরে থাকলে রোগীর কিডনি জটিলতা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই এ রোগ নিয়ে অবহেলা করার সুযোগ নেই। সংক্রমণ বৃদ্ধির পেছনে তিনি রোগীদের সচেতনতার অভাবকেই দায়ী করছেন।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!