কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে মাদক সেবনে বাধা দেওয়ায় আনোয়ার হোসেন প্রকাশ এমান (৩৮) নামে এক নির্মাণশ্রমিককে পিটিয়ে হত্যা করেছে মাদকাসক্ত পিতা-পুত্র। পরে গোপন আপসরফা করে লাশ দাফনের প্রস্তুতির সময় পুলিশ উপস্থিত হয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। ঘটনাটি ঘটেছে চৌদ্দগ্রাম পৌর এলাকার নাটাপাড়া গ্রামে। নিহত এমান একই গ্রামের ওসমান মিয়ার ছেলে। তথ্যটি বৃহস্পতিবার দুপুরে নিশ্চিত করেছেন থানার ওসি মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নাটাপাড়া গ্রামের মফিজুর রহমানের ছেলে ফারুক মিয়া বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে মাদক সেবন করে আসছিল। গত মঙ্গলবার সকালে ফারুক প্রকাশ্যে মাদক সেবন করলে এমান বাধা দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে এমানকে এলোপাতাড়ি পিটাতে থাকে। এ সময় যোগ দেন তার বাবা মফিজুর রহমানও। পরে এমানের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে পিতা-পুত্র পালিয়ে যায়। স্থানীয়দের সহায়তায় পরিবারের লোকজন এমানকে উদ্ধার করে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এমানের মৃত্যু হয়।
স্থানীয় সূত্রে আরও জানা গেছে, এমানের মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে ওই গ্রামের প্রভাবশালী মহল এমানের পরিবারকে হত্যার ঘটনায় মামলা না করতে চাপ প্রয়োগ করে। এক পর্যায়ে জোরপূর্বক প্রভাবশালী মহল ফারুকের পরিবারের আপসরফার জন্য বৈঠক বসে। এ সময় খবর পেয়ে চৌদ্দগ্রাম থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য থানায় নেয়।
এমানের ভাগিনা মো. রিয়াদ বলেন, ‘আমার মামা নির্মাণ শ্রমিক ছিল। মঙ্গলবার ফারুক ও তার বাবা মফিজুর রহমান মামা এমানকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। কুমিল্লা মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার তিনি মারা যান। শুনেছি, মাদক সেবনে বাধা দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র তাকে হত্যা করা হয়েছে।’
চৌদ্দগ্রাম মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, এমান নামে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় স্থানীয়ভাবে মীমাংশার চেষ্টা করছে এমন খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় হত্যা মামলায় রুজু হবে। অভিযুক্তদেরকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন