মানিকগঞ্জে বাউল শিল্পী আবুল সরকারের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি এবং বাউলদের কর্তৃক আলেম-ওলামা ও তাওহিদী জনতার শান্তিপূর্ণ সমাবেশে ‘উসকানি ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) বেলা ৩টায় মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আলেম-ওলামা ও তাওহিদী জনতার ব্যানারে সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।
লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন হেফাজতে ইসলাম মানিকগঞ্জ জেলা শাখার সহ-সভাপতি মাওলানা মুজীবুর রহমান। তিনি বলেন, ‘একটি পালা গানের আসরে বাউল শিল্পী আবুল সরকার মহান আল্লাহকে নিয়ে চরম অশালীন বক্তব্য দিয়েছেন। তার ব্যবহৃত শব্দমালা মুসলমান হিসেবে উচ্চারণ করাও লজ্জাজনক। ইসলামী মূল্যবোধ, সামাজিক নীতি এবং দেশের সংবিধান অনুযায়ী এটি গুরুতর অপরাধ। ভিডিওটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর দেশজুড়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় এবং প্রশাসন দ্রুত তাকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠায়—এ সিদ্ধান্তের জন্য তিনি প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান।’
তিনি আরও বলেন, ‘আবুল সরকারের মুক্তির দাবিতে বিভিন্ন স্থানে চাপ সৃষ্টি হওয়ায় তাকে জামিনে মুক্ত করার আশঙ্কা দেখা দেয়। তাই জেলার সর্বস্তরের আলেম-ওলামা ও তাওহিদী জনতার ব্যানারে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে মিছিল ও সমাবেশের ঘোষণা দেওয়া হয় এবং পরে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। প্রশাসন আলেম-ওলামাদের কর্মসূচির সময় নির্ধারণ করলে তারা তা মেনে নেন।’
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, নির্ধারিত রুটে শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল চললেও এ সময় আবুল সরকারের অনুসারীরা হাই স্কুল মাঠের আশপাশে জটলা পাকিয়ে অবস্থান নেয়, যা ‘নীরব উসকানি’ হিসেবে উল্লেখ করেন বক্তারা। তাদের মধ্যে মারমুখী আচরণ দেখা দিলে বিক্ষুব্ধ জনতা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে এবং অনাকাঙ্ক্ষিত সংঘর্ষ ঘটে। এতে উভয়পক্ষের চারজন করে আহত হন। বক্তারা এই ঘটনাকে দুঃখজনক উল্লেখ করে আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন।
মাওলানা মুজীবুর রহমান অভিযোগ করেন—নির্বাচনের আগে দেশকে অস্থিতিশীল করতে আওয়ামী লীগের ‘দোসররা’ পরিকল্পিতভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে। নির্ধারিত সময়ের আগেই তারা সমাবেশস্থলের আশপাশে অবস্থান নিয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করেছে বলেও দাবি করেন তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হেফাজতের সহ-আইন বিষয়ক সম্পাদক ওমর ফারুক বলেন, ‘আমরা গান-বাজনার বিরুদ্ধে নই। বাউলরা গান করুক—তাতে সমস্যা নেই। কিন্তু ধর্মীয় বিষয়ের ভুল ব্যাখ্যা কিংবা কটূক্তি বরদাশত করা যায় না। অপরাধ করেছে একজন—আমরা শুধু তার শাস্তি চাই।’
মাওলানা মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘বাউলদের পক্ষ থেকে করা মামলাটি প্রত্যাহারের দাবি থাকবে। এ মামলাকে কেন্দ্র করে যদি প্রশাসন আলেম-ওলামাদের হয়রানি করে, তবে মুরব্বিদের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- জেলা হেফাজতের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুফতি আব্দুল হান্নান, হাসান মাহমুদ শরীফ, মাওলানা শামসুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক মাওলানা কারী ওবায়দুল্লাহ, তথ্য সম্পাদক দেওয়ান তানজিল আহমেদ, দপ্তর সম্পাদক আব্দুল মতিন, সহ-আইন সম্পাদক ওমর ফারুক, সদর উপজেলা সভাপতি মুফতি আব্দুল করিম কাসেমী, সাংগঠনিক সম্পাদক রমজান মাহমুদ, মাওলানা আনোয়ার হোসেন রিয়াদসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।


সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন