নোয়াখালীর হাতিয়ার বুড়িরচর ইউনিয়নে বিয়ের আনন্দ বিষাদে রূপ নিলো এক পরিবারের জন্য। বিয়ের রাতে মাইক বাজানোকে কেন্দ্র করে সালিশি বিচারে কন্যা ও তার মা–বাবাসহ পরিবারের সবাই বেত্রাঘাতের শিকার হয়েছেন। ক্ষমা চাইলেও রেহাই মেলেনি; বরং চাপানো হয়েছে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা। জরিমানা দিতে না পারায় জামাতার জীবিকার একমাত্র ভরসা অটোরিকশাটিও আটকে রাখা হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে হাতিয়া উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে।
কন্যার বাবা শাহজাহান বলেন, আমরা গরিব মানুষ। মেয়ের বিয়েতে একটু শখ করে মাইক বাজিয়েছিলাম। এতেই নেমে আসে বিপদ। কয়েকজন এসে জবাবদিহি চাইলে তর্ক হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের মারধরও করে। এরপর সালিশ বসিয়ে আমাদের সবাইকে ১৫টি করে বেত্রাঘাত করে। ক্ষমা চাইছি বারবার, তবুও ছাড় দেয়নি। এখন জরিমানা দিতে না পারায় মেয়ের জামাইয়ের অটোরিকশা আটকে রেখেছে।
শাহজাহানের ভাষায়, এই ঘটনায় তিনি স্থানীয় অনেকের কাছে বিচার চেয়েও কোনো সুরাহা পাননি।
সালিশে উপস্থিত এক সালিশদার অবশ্য দাবি করেন, বিষয়টি শুধু মাইক বাজানো নিয়ে নয়; সেখানে সালিশদার আফসারের ৫০ হাজার টাকা হারানোর অভিযোগ উঠেছিল। যদিও ঘটনার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি, তবুও ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা ঠিক করা হয়।
তার দাবি, সালিশে নারী সদস্যদের বেত মারা হয়নি, শুধু বাড়ির পুরুষ সদস্যদের দেওয়া হয়েছে। নারীদের শাসন করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল পরিবারের কর্তা শাহজাহানকে।
স্থানীয় সাগরিয়া ফাঁড়ির পুলিশ পরিদর্শক ফরহাদ হোসেন বলেন, বিয়েতে মাইক বাজানো নিয়ে সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশ উভয় পক্ষকে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিলেও পরে তারা সালিশের পথ বেছে নেন। সালিশে কী সিদ্ধান্ত হলো, তা পুলিশকে জানানো হয়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন