শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সমাধিস্থল সংরক্ষণ করার জন্য সারাদেশের মতো বিয়ানীবাজারেও সমাধি নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল পতিত আওয়ামী লীগ সরকার। ২০১৮ সালে ১০ ফেব্রুয়ারি ‘শহিদ মুক্তিযোদ্ধা ও অন্য বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সমাধিস্থল সংরক্ষণ ও উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পটির অনুমোদন দেওয়া হলে নানা জটিলতায় বর্তমান সরকার এই প্রকল্প বাতিল করে দিয়েছে।
সূত্র জানায়, দীর্ঘ ৭ বছর থেকে এই প্রকল্প নিয়ে নয়ছয় হওয়ায় সম্প্রতি প্রকল্পটি বাতিল করা হয়। বিয়ানীবাজার উপজেলায় মোট ১২টি শহীদ সমাধিসৌধ নির্মাণের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তর থেকে বিগত সময়ে তালিকা প্রেরণ করা হয়। প্রতিটি সমাধিসৌধে ২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা ব্যয় ধরে প্রকল্পটি গ্রহণ করে সরকার। সম্পূর্ণ সরকারি অর্থে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্বে ছিল মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও গণপূর্ত অধিদপ্তর। প্রকল্পটির উদ্দেশ্য ছিল মুক্তিযুদ্ধকালে পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের স্থানীয় দোসরদের মাধ্যমে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা এবং অন্য বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সমাধিস্থল সংরক্ষণ ও উন্নয়ন এবং বিভিন্ন সময়ে মৃত্যুরবণকারী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সমাধিস্থল সংরক্ষণ ও উন্নয়ন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র আরও জানায়, শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সমাধি নির্মাণ প্রকল্পটি বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। দায়সারাভাবে বাস্তবায়ন করা হচ্ছিল। প্রকল্প পরিচালক (পিডি) বদল হয়েছেন অন্তত পাঁচবার। চাহিদা অনুযায়ী বাজেটও দেওয়া হতো না। তাই প্রকল্পের অগ্রগতি একেবারেই হয়নি। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী এবং তাদের স্থানীয় দোসরদের হাতে দেশের বিভিন্ন স্থানে বীর মুক্তিযোদ্ধারা শহীদ হন। মূলত সেসব স্থানে সমাধি নির্মাণের পরিকল্পনা থেকে প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়েছিল। সমাধি নির্মাণ করতে গিয়ে চারটি সমস্যা দেখা যায়। সেগুলো হচ্ছে- ১. সমাধির জায়গা চিহ্নিত করা যাচ্ছে না, ২. অন্যত্র সমাধি করতে গেলে জমি পাওয়া যায় না, ৩. সমাধির নকশায় ত্রুটি আছে এবং ৪. প্রতিবছরের জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দ দেওয়া হয়নি।
বিয়ানীবাজার উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা অনুজ চক্রবর্তী বলেন, ১২টি শহীদ সমাধিসৌধ নির্মাণের জন্য বিগত দিনে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। নানা জঠিলতায় প্রকল্পটি ঢিমেতালে চলে। এগুলো দেখভাল করতেন ঢাকার সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের সাথে জড়িতরা। আমাদের কেবল অবগত করা হয়। এখন এই প্রকল্প বাতিল করা হয়েছে মর্মেও আমাদের দাপ্তরিকভাবে কিছু জানানো হয়নি।


সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন