নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী বাজারে রেলওয়ের জায়গা থেকে অবৈধ স্থাপনা ও দোকানপাট উচ্ছেদ করা হয়েছে এবং ২৬ শতাংশ জমি দখলমুক্ত করা হয়েছে।
এদিকে সদর উপজেলার সোনাপুর থেকে উত্তর সোনাপুর পর্যন্ত এলাকায় রেলওয়ের জমি দখল করে একাধিক বহুতল ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। গতকাল সকাল ১০টা থেকে চৌমুহনী রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় দিনব্যাপী এই উচ্ছেদ অভিযান চালায় রেলওয়ের কর্তৃপক্ষ।
উচ্ছেদ অভিযানের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও বেগমগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন বলেন, আমরা অভিযানে মূলত এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে কাজ করছি।
উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় অভিযানে নেতৃত্ব দেন রেলওয়ে চট্টগ্রাম বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা খোরশেদ আলম চৌধুরী। অভিযানে চৌমুহনী রেলওয়ে স্টেশনের পশ্চিম ও ইসলাম মার্কেটের সামনের রাস্তায় অবৈধভাবে গড়ে উঠা মোবাইল মেরামতের দোকান, কাপড়ের দোকান, হোটেলসহ স্থায়ী ও অস্থায়ী ১০৭টি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। একই সঙ্গে রেলওয়ের ২৬ শতাংশ জায়গা দখলমুক্ত করা হয়।
রেলওয়ের চট্টগ্রাম বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা খোরশেদ আলম চৌধুরী বলেন, চৌমুহনী রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় অবৈধভাবে গড়ে ওঠা স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান চালানো হয়েছে। জনস্বার্থে এমন অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।
উচ্ছেদ অভিযানে রেলওয়ের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহকারী ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা আকবর হোসেন মুজুমদার, রেলওয়ের কানুনগো, স্টেশন মাস্টারসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
অপরদিকে, জেলা সদরের সোনাপুর রেলওয়ে স্টেশন এলাকার সোনাপুর জিরোপয়েন্ট থেকে উত্তর সোনাপুর পর্যন্ত সোনাপুর-মাইজদী আঞ্চলিক সড়কের পূর্ব পাশে রেলওয়ের জমি একসনা বন্দোবস্থ ও কিছু অংশে অবৈধভাবে দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে রেলওয়ের সম্পত্তি ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, সোনাপুর থেকে উত্তর সোনাপুর এলাকায় প্রভাবশালীরা রেলওয়ের জমি দখল করে অবৈধ স্থাপনা গড়ে তুলেছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা মাইন উদ্দিন এবং প্রবাসী নুরুল আফসার সুমন রেলওয়ের ৪ শতাংশ জমি একসনা বন্দোবস্থ নিয়ে বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন। এর ফলে এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর ওই জমির বন্দোবস্ত রেলওয়ের কর্তৃপক্ষ বাতিল করেছিলেন। তার পরও প্রভাব খাটিয়ে সরকারি জমিতে বহুতল ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে।
এলাকাবাসী জানিয়েছেন, শুধুমাত্র মাইন উদ্দিন ও নুরুল আফসার সুমনই নয়, অন্যান্য প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এবং কিছু রেলওয়ে কর্মকর্তার সহায়তায় সরকারি সম্পত্তি দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন। তারা চৌমুহনী এলাকার মতো সোনাপুর-উত্তর সোনাপুর এলাকায়ও উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে রেলওয়ের জমি স্থায়ীভাবে উদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন।


সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন