আজকে দৈনিক রূপালী বাংলাদেশ পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় দুদফা ধর্ষণের শিকার নারীর পরিবারকে নিরাপত্তার আশ্বাস দিতে ছুটে গেলেন আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রোকনুজ্জামান খান। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন আমতলী থানার ওসি দেওয়ান জগলুল হাসান।
শনিবার (০৮ নভেম্বর) বিকেল ৩টায় উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের সোনাউঠা গ্রামে গণধর্ষণের শিকার হিন্দু গৃহবধূর বাড়িতে আমতলী প্রশাসনের কর্মকর্তারা যান। দীর্ঘ ভাঙাচোরা পথ পেরিয়ে ভুক্তভোগী ওই নারীর কাছ থেকে তার ওপর পাশবিক নির্যাতনের বর্ণনা শুনেন। দৈনিক রূপালী বাংলাদেশ পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদে উল্লেখিত অংশ 'মামলার পরেও আসামিদের হুমকিতে আতঙ্কে থাকায়'র ঘটনা তার নজরে আসে।
ঘটনাস্থলে গিয়ে আমতলী উপজেলা প্রশাসন ভুক্তভোগী হিন্দু পরিবারের নিরাপত্তা প্রদানে সকল রকমের সহযোগিতা করার আশ্বাস দেয়া হয়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হিন্দু পূজা উদযাপন কমিটির জেলা সভাপতি ও আমতলী হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রোকনুজ্জামান খান বলেন, সংবাদে প্রকাশ হওয়ায় আমতলী উপজেলা প্রশাসন তাদেরকে আশ্বাস্ত করতে ভুক্তভোগী পরিবারের কাছে ছুটে যাই। ভুক্তভোগী পরিবারকে নিরাপত্তার পাশাপাশি এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে পুলিশ এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বলা হয়েছে। মামলা সুষ্ঠু তদন্ত করে দ্রুত চার্জশিট প্রদান এবং বাকি আসামিকে গ্রেপ্তারের জন্য থানার ওসি এবং তদন্ত কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এঘটনায় পুলিশ ইতিমধ্যে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
উল্লেখ্য, বরগুনার আমতলীতে দুই দফায় ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক হিন্দু গৃহবধূ (৩৮)। এ ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের সোনাউঠা গ্রামে। পুলিশ এঘটনায় দুজন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে।
দুই দফা ধর্ষণ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে ক্ষোভ, অপরদিকে সন্দেহ। তবে অধিকাংশ এলাকাবাসীর অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে রয়েছে প্রভাব বিস্তারসহ নানাধরনের অভিযোগ। অভিযোগ রয়েছে ভুক্তভোগী পরিবার মামলা করায় তাদের ওপর হুমকি প্রদানের। একারণে পরিবারটি বাড়িতে থেকেও কাটাচ্ছেন আতঙ্কে।
ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন সোনাউঠা গ্রামের নজরুল হাওলাদারের ছেলে সাইফুল হাওলাদার ও একই গ্রামের শহীদ হাওলাদারের দুই ছেলে ইমরান ও ইমরাজ হাওলাদার। ভুক্তভোগী গৃহবধূর স্বামী একজন কৃষক।
জানা গেছে, সোনাউঠা গ্রামের কৃষক ও তার ছেলে বাজারে থাকায় গত ২৩ অক্টোবর রাত সাড়ে ৭টার দিকে ঘরে প্রবেশ করে অভিযুক্ত প্রথমে ইমরান ও পরে সাইফুল ওই গৃহবধূরকে ধর্ষণ করে। লোকলজ্জায় ভুক্তভোগী নারী বিষয়টি প্রকাশ করেননি। এঘটনার এক সপ্তাহ পর ৩০ অক্টোবর দুপুর ১২টার দিকে অভিযুক্তরা ওই নারীর বাড়িতে প্রবেশ করে পানি খেতে চায়। তিনি পানি আনতে ঘরে গেলে সাইফুল আর ইমরান ঘরে প্রবেশ করে আবার তাকে ধর্ষণ করে। ঘরের বাইরে বসে এই দৃশ্য ধারণ করে ইমরাজ। পরে দুপুর ১টার দিকে তার স্বামী আসলে তার কাছে ওই নারী তার ওপরে নির্যাতনের খবর জানায়। পরে তিনি থানায় গিয়ে এই ঘটনায় তিনজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।

