প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে বরিশাল শহরের ৬ নং ওয়ার্ডের ২৫ বছর বয়সি সিয়ামকে বিয়ে করেছিলেন লামিয়া আক্তার বর্ষা। চলতি বছরের শুরুর দিকে উভয় পরিবারের সম্মতিতে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন তারা। কিন্তু মাস ছয়েক অতিবাহিত হওয়ার আগেই শ্বশুরবাড়ি থেকে লাশ হয়ে বের হলেন বর্ষা।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) রাতে বরিশাল মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ বেলতলা এলাকার আল-মাদানী সড়কের বিপরীত পাশে শ্বশুর শাহিনের বাড়ি থেকে বর্ষার লাশ উদ্ধার করে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনার পর স্বামী সিয়াম পলাতক থাকলেও পুলিশ তার খালা এবং নানিকে হেফাজতে নিয়েছে ।
নিহত বর্ষার বাবা মো. বেলায়েত খান অভিযোগ করেন, ফেসবুকে পরিচয় থেকে বর্ষার সাথে সিয়ামের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ৬ মাস পূর্বে তারা বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিলে সিয়ামের পরিবার প্রথমে তা মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানালেও পরবর্তীতে মেনে নেন এবং উভয় পরিবারের সম্মতিতে আয়োজন করে তাদের বিবাহ দেওয়া হয়। কিন্তু বিয়ের পর থেকে সিয়াম এবং তার পরিবারের লোকজন বর্ষাকে নির্যাতন করতেন। বৃহস্পতিবার রাতে মেয়েকে জামাতা সিয়ামসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন মারধর করে হত্যা করেছে। পরবর্তীতে এই বিষয়টি ধামাচাপা দিতে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়েছে।
তবে খুনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন, সিয়াম এবং তার পরিবার।
তাদের দাবি, বর্ষা জানালার গ্রিলের সাথে গলায় ফাঁস দিয়েছেন। এর আগে তিনি চিরকুট লিখেছেন। সেখানে তাকে বড় মসজিদের কবরস্থানে দাফন করার কথা উল্লেখ করেছেন।
অবশ্য এর আগে তাদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল, বর্ষা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। ছেলের স্ত্রীর মৃত্যু নিয়ে শ্বশুর পরিবারের এই দুই ধরনের বক্তব্য পুলিশ এবং স্থানীয়দের মধ্যে সন্দেহ তৈরি করেছে। পুলিশ প্রাথমিকভাবে মৃত্যুর ঘটনাটিকে নিয়ে কোনোরূপ মন্তব্য করতে চাইছে না।
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, লাশের গলায় ফাঁসের চিহ্ন এবং শরীরে আঘাতের উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে। স্বামী, শ্বশুর ও শ্বাশুড়ি পলাতক রয়েছেন। পুলিশ তাদের গ্রেপ্তারে তৎপর। মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে ময়নাতদন্ত রিপোর্টের অপেক্ষা করতে হবে।