শুক্রবার, ০৯ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


আগৈলঝাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৭, ২০২৪, ০৬:৫২ পিএম

ভুল চিকিৎসায় নবজাতক মারা যাওয়ার ১৩ দিন পর প্রসুতির মৃত্যু

আগৈলঝাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৭, ২০২৪, ০৬:৫২ পিএম

ভুল চিকিৎসায় নবজাতক মারা যাওয়ার ১৩ দিন পর প্রসুতির মৃত্যু

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

বরিশালের গৌরনদী বেজগাতি সুইজ হাসপাতালে নরমাল ডেলিভারির সময় ভুল চিকিৎসায় নবজাতক মারা যাওয়ার ১৩ দিন পর প্রসূতি মা সাবিহা বেগম (২০) মারা যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার সকালে কালকিনি উপজেলার উত্তর রমজানপুর গ্রামের বাবা আবুল কালাম সরদারের বাড়িতে বসে তার মৃত্যু হয়। কথিত ২ নার্স দিয়ে জোরপূর্বক টেনে হিঁচড়ে নরমাল ডেলিভারী করানোর সময় নবজাতক মারা যাওয়ার ঘটনা ও প্রসূতি মায়ের অসুস্থ হয়ে পরার বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার জন্য স্বজন ও স্থানীয় নেতাদের দুই লাখ টাকার বিনিময়ে আপোষ মিমাংসা করার অভিযোগ করেছেন নিহত প্রসুতির সাবিহার বাবা।

নিহত প্রসুতির বাবা আবুল কালাম সরদার বলেন, আমার মেয়ে সাবিহা বেগমের (২০) প্রসব বেদনা শুরু হলে গত ২১ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) দিবাগত রাত সাড়ে ৯টার দিকে বেজগাতি সুইজ হাসপাতালে হাসপাতালে নিয়ে যাই। তবে সেখানে কোন এম.বি.বি.এস চিকিৎসক না থাকায় নিয়োগপ্রাপ্ত ডি.এম.এফ (ডিপ্লোমা ইন মেডিক্যাল ফ্যাকাল্টি) সঞ্জীব মজুমদার সাবিহাকে ভর্তি করেন। একপর্যায়ে সাবিহার প্রসব বেদনা তীব্র হওয়ায় ডাক্তার ডাকা হলে কোন ডাক্তার আসেন নি। পরে রাত তিনটার দিকে কথিত নার্স জেসমিন আক্তার ও লিমা আক্তারকে দিয়ে জোড়পূর্বক সাবিহার নরমাল ডেলিভারী করার চেষ্টা চালায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এক পযার্য়ে বাচ্চা প্রসবে দেরি হওয়ায় সাবিহার বুকে-পেটে জোরে জোরে চাপ দিয়ে জোরপূর্বক টেনেহিঁচড়ে একটি নবাজাতক ছেলে সন্তান বের করে কথিত নার্সরা। এ সময় প্রসাব ও পায়খানার রাস্তা কেটে এক করে ফেলার কারনে প্রচুর রক্তক্ষরণ হতে থাকে। তখন নবজাতক অচেতন থাকায় ও বাচ্চা কান্নাকাটি না করার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সাবিহাকে রেখে তাৎক্ষনিক বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরার্মশ দেয়। ভোর পৌনে ৫টার দিকে সেখানে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বলেন নবজাতক হাসপাতালে পৌছানোর আগেই মারা গেছে।

নিহত প্রসুতির বাবা আবুল কালাম সরদার কান্না জড়িত কন্ঠে অভিযোগ করে বলেন, ২২ নভেম্বর সকালে নবজাতক মারা যাওয়া ও আমার মেয়ে গুরতর অসুস্থ্য হয়ে পরার ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমার বড় মেয়ে জামাতা মেহেদী আকন ও সাবিহার স্বামী সবুজ মোল্লার কাছে দুই লাখ টাকা দিয়ে আপোষ মিমাংসার কাগজপত্রে স্বাক্ষর নেয়।  পরে সাবিহার শরীরে রক্ত শূন্যতা দেখা দিলে এক ব্যাগ রক্ত পুশ করে পরদিন হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এরপর গত শনিবার (১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সাবিহা গুরতর অসুস্থ্য হয়ে পরলে তাৎক্ষনিক তাকে গৌরনদী গ্রীণ লাইফ হাসপাতালে ভর্তি করলে রক্ত শূন্যতার কথা জানান তারা। এ সময় সাবিহার শরীরে রক্তের স্যালাইন না চললে গৌরনদী গ্রীণ লাইফ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঢাকা নেয়ার পরামর্শ দিলে ভোর রাতে সাবিহাকে নিয়ে ঢাকার একটি হাসপালে ভর্তি করি। সেখান চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাবিহার শরীরে রক্তের স্যালাইন না চলায় তারা ৩ ডিসেম্বর সাবিহাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। বেজগাতি সুইজ হাসপাতালের কথিক ২ নাসের্র ভুল চিকিৎসায় ও প্রসাব-পায়খানার রাস্তা কেটে একত্র করায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারনে আমার মেয়ে ৪ ডিসেম্বর সকালে ও ২২ নভেম্বর ভের রাতে আমার নাতি মারা যায়। স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দিয়ে টাকা আনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা দেই নি। তবে চিকিৎসা অবহেলা ও গাফলতির অভিযোগ এনে সাবিহার স্বামী সবুজ মোল্লা ও তার শশুর লতিফ মোল্লাকে আসামী করে থানায়  গৌরনদী একটি লিখত অভিযোগ করেছি।

সাবিহার বড় ভগ্নিপতি মেহেদী আকন বলেন, আমার অসুস্থ্য শালিকা সাবিহার উন্নত চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে আমি ১ লক্ষ টাকা এনে ভায়রা (সাবিহার স্বামী) সবুজ মোল্লার হাতে দেই। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ্যম্বুলেন্স ভাড়া ও চিকিৎসার খরচ নেয় নি। এদিকে সবুজ মোল্লা ১ লক্ষ টাকা নেয়ার পরেও অসুস্থ্য সাবিহার চিকিৎসার খোঁজ খবর রাখে নি এমনকি সবুজ ও তার পরিবারের কেউই সাবিহাকে দাফন করতে আসে নি।

সুইজ হাসপাতালের কর্তব্যরত ডিএমএফ (গ্রাম্য চিকিৎসক) সঞ্জীব মজুমদার বলেন, হাসপাতলে কোন এমবিবিএস ডাক্তার নেই। রিতা নামে মাত্র একজন ডিপ্লোমা নার্স রয়েছেন।

সুইজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ রুপা খাতুন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, নবজাতকের স্বজন বা কোন নেতাকে আপোষ মিমাংসার জন্য আমি কোন টাকা দেই নি। তবে তাদের থেকে মানবিক কারনে হাসপাতালের চিকিৎসা খরচ নেই নি ও অ্যাম্বুলেন্সের  ভাড়া আমরা দিয়েছি।

গৌরনদী থানার ওসি ইউনুস মিয়া জানান, চিকিৎসা অবহেলা ও গাফলতির অভিযোগ এনে সাবিহার বাবা আবুল কালাম সরদার বাদী হয়ে স্বামী সবুজ মোল্লা ও তার শশুর লতিফ মোল্লাকে অভিযুক্ত করে গৌরনদী থানায় একটি লিখত অভিযোগ করেছেন। তদন্ত সাপেক্ষ্যে  আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বরিশাল সিভিল সার্জন ডা. মারিয়া হাসান বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। ভুল চিকিসায় চিকিৎসায় ও ডেলিভারীর সময় নবজাতক ছেলে সন্তান মারা যাওয়ার সংবাদ বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হলেও আমার নজরে আসেনি। পত্রিকা সংগ্রহ করে তদন্ত সাপেক্ষ্যে প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরবি/জেডআর

Link copied!