ভোলার চরফ্যাশনে শতবর্ষী চলাচলের পথসহ অন্যের জমি জবরদখল করে পাকা বসতঘর নির্মাণ করেছেন চরফ্যাশন উপজেলা মৎস্যলীগের সাবেক সভাপতি শফিউল্লাহ পালোয়ান। এতে ৩৫টি পরিবার দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে বিপাকে রয়েছে। তৎকালীন আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে এমন অনিয়ম করেছেন তিনি।
রোববার (২ নভেম্বর) চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর ভুক্তভোগী পরিবারগুলো গণসাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরেজমিন তদন্তের জন্য চরফ্যাশন পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলীকে দায়িত্ব দিয়েছেন।
জানা গেছে, চরফ্যাশন উপজেলার পৌরসভা ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সরকারি পুকুরপাড়ে শত বছর ধরে ভূমিহীন পরিবারগুলোর বসবাস। পুকুরপাড়ের চারপাশে অন্যান্য পরিবারের বাসিন্দারা বসবাস করেন। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, পুকুরপাড়ের ৩৫টি পরিবারসহ বাড়ির বাসিন্দাদের চলাচলের একমাত্র পথটি মৎস্যলীগের সভাপতি শফিউল্লাহ পালোয়ান আওয়ামী লীগের ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে দখল করে তার ছেলে ও পরিবারের জন্য পাকা বসতঘর নির্মাণ করেছেন। এতে ৬ ফুট চওড়া পথটি আজ মাত্র দেড় ফুটে সংকুচিত হয়েছে।
ভূমিহীন পরিবারগুলো অভিযোগ করেন, এই পথটি শত বছর আগে তাদের যাতায়াতের জন্য রাখা হয়েছিল। এখানে বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করত—অসুস্থ হলে অ্যাম্বুল্যান্স রোগী বহন করত, ফায়ার সার্ভিস সহজে প্রবেশ করত। তবে পালোয়ান পরিবারের প্রভাব ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের কারণে প্রতিবাদ সত্ত্বেও বসতঘর নির্মাণ কাজ চালানো হয়।
এ ছাড়া অভিযোগ রয়েছে, মৎস্যলীগ সভাপতি থাকাকালীন জেলেদের নামে সরকারি খাদ্য সহায়তা থেকে তিনি নানা ভাবে নিজের বা পরিবারের জন্য ত্রাণ ভোগ করতেন। প্রকৃত জেলেরা এতে বঞ্চিত হয়েছেন।
ভুক্তভোগী মালেক পালোয়ান বলেন, ‘পথ বন্ধ হওয়ায় দৈনন্দিন কাজ, জরুরি প্রয়োজনে চলাচল ও বিপর্যয় মোকাবিলা করা কঠিন। অসুস্থ ব্যক্তিকে হাসপাতালে নেওয়া বা লাশ নেওয়ার পথও নেই।’
শাহাবুদ্দিনের স্ত্রী নাছিমা বলেন, ‘পথটি এতটাই সংকুচিত হয়েছে যে যাতায়াতে সমস্যা হচ্ছে। অগ্নিকাণ্ড বা অসুস্থতার ক্ষেত্রে জরুরি সেবা পৌঁছানো সম্ভব নয়।’
অভিযুক্ত শফিউল্লাহ পালোয়ান বলেন, ‘আমার সম্পত্তির মধ্যে আমি ঘর নির্মাণ করেছি।’
চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, গণসাক্ষরিত লিখিত অভিযোগ পেয়ে উক্ত বিষয়টি তদন্তের জন্য পৌরসভার প্রকৌশলীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।



সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন