ঢাকা বুধবার, ২১ মে, ২০২৫

চলন্ত ট্রেন থেকে ব্যবসায়ীকে ফেলে দেওয়ার ঘটনায় মামলা

বগুড়া প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মে ২০, ২০২৫, ০৬:০১ পিএম
চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়া হয় ব্যবসায়ী মতিউর রহমানকে। ছবি-সংগৃহীত

বগুড়ার আদমদীঘিতে পূর্ব শত্রুতার জেরে মোবাইল চোর আখ্যা দিয়ে ব্যবসায়ী মতিউর রহমানকে চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে দিয়ে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় মামলা হয়েছে।

সোমবার (১৯ মে) রাতে সান্তাহার রেলওয়ে থানায় ভুক্তভোগী নিজেই বাদী হয়ে একজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ছয়-সাতজনকে আসামি করে মামলাটি করেন।

মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার পারইল গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে মতিউর মাছ ব্যবসার পাশাপাশি গত দেড় বছর ধরে বৈধভাবে বিদেশে মানুষ পাঠিয়ে আসছেন। এরই মধ্যে তিন-চারজনকে সৌদি আরব পাঠিয়েছেন।

১৫ দিন আগে আদমদীঘির তালশন গ্রামের হেলাল প্রামাণিকের ছেলে সজিব হোসেনকে পাঠান। এ বাবদ সজিবের কাছ থেকে সাড়ে চার লাখ টাকা নেওয়া হয়। কিন্তু সৌদি আরবে গিয়ে বৈধ কাগজপত্র পেতে দেরি হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে সজিব তার বাবাকে পাঠিয়ে হুমকি দেন।

সূত্র জানায়, মতিউর বগুড়া শহরের মাটিডালি এলাকায় মেয়ে মনিকার বাসায় বেড়াতে যান। সেখান থেকে বাড়ি ফিরতে গত রোববার (১৮ মে) দুপুরে সান্তাহারগামী দোলনচাঁপা কমিউটার ট্রেনে ওঠেন।

বগুড়া স্টেশন থেকে ট্রেনে ওঠার পর থেকে একই বগিতে থাকা সজিবের ভাই রাকিব ও ডহরপুরের সিরাজুল ইসলামের ছেলে সুমনের নেতৃত্বে ৬-৭ জন মাস্ক পরিহিত ব্যক্তি মতিউরকে নজরদারি করছিলেন।

দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ট্রেন আদমদীঘির নসরতপুর স্টেশন এলাকায় পৌঁছালে তারা তাকে মোবাইল চোর আখ্যায়িত করে মারধর ও ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করেন। তখন তিনি ৪-৫ মিনিট ট্রেনের সঙ্গে ঝুলে থাকেন।

একপর্যায়ে তারা মতিউরের কাছে থাকা ব্যবসার ৫০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে হাত ছেড়ে দিতে বাধ্য করেন।

ট্রেনটি নসরতপুর স্টেশনে পৌঁছালে প্ল্যাটফর্মের ধাক্কা খেয়ে তিনি নিচে পড়ে যান। এ সময় উৎসুক জনতা চোর ভেবে তাকে মারধর করেন। এতে তার পুরো শরীর রক্তাক্ত হয়ে যায়। অল্পের জন্য তিনি ট্রেনে কাটা পড়া থেকে বেঁচে যান।

পরে মতিউরকে রক্তাক্ত অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এ সংক্রান্ত ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এরপর সোমবার রাতে সান্তাহার রেলওয়ে থানায় ভুক্তভোগী নিজেই বাদী হয়ে উপজেলার ডহরপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে সুমনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ছয়-সাতজনকে আসামি করে একটি মামলা করেন।

সান্তাহার রেলওয়ে থানার ওসি হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, ‘নসরতপুর রেলস্টেশনের ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশি কার্যক্রম চলমান।’