বগুড়ায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সাংগঠনিক সভা চলাকালে একাধিক ককটেল (হাতবোমা) বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার (২০ অক্টোবর) বিকেলে বগুড়া জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামের সামনে এ বিস্ফোরণ ঘটে। এতে কেউ হতাহত না হলেও শহরজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিকেলে এনসিপির উত্তরাঞ্চল মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের উপস্থিতিতে জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে সাংগঠনিক সমন্বয় সভা চলছিল। সভা চলাকালীন অডিটোরিয়ামের বাইরে একাধিক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় দুর্বৃত্তরা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে একটি অবিস্ফোরিত ককটেল উদ্ধার করে। এ ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর না থাকলেও স্থানীয় নেতারা অভিযোগ করেছেন, সারজিস আলমের গাড়িবহরে হামলার চেষ্টা করা হয়েছে।
তারা দাবি করেছেন, পরিকল্পিতভাবে কেন্দ্রীয় নেতাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যেই হামলা চালানো হয়েছে।
এনসিপি শ্রমিক উইং কেন্দ্রীয় সংগঠন সম্পাদক ডা. আব্দুল্লাহ আল সানী বলেন, ‘অনুষ্ঠান চলাকালীন করতোয়া নদীর দিক থেকে একাধিক ককটেল নিক্ষেপ করা হয়। এটি নিছক ভীতি প্রদর্শন নয়, কেন্দ্রীয় নেতাকে লক্ষ্য করেই পরিকল্পিত হামলা।’ তিনি হামলাকারীদের দ্রুত শনাক্ত করে কঠোর শাস্তির দাবি জানান।
বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) হুসেইন মোহাম্মদ রায়হান বলেন, ‘বিস্ফোরণের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। অবিস্ফোরিত ককটেল উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত তা শনাক্তের চেষ্টা চলছে। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এর আগে এ দিন দুপুরে জয়পুরহাটে এক সভা শেষে সারজিস আলম বগুড়ায় আসেন এবং জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ের উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধনের আগে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে বলেন, ‘বিগত সময়ে বিএনপি জোট সরকার গঠন করলেও জামায়াত কখনোই সংসদে শক্ত অবস্থান নিতে পারেনি। এককভাবে কেউ শক্তিশালী নয়, এটি আপাত সত্য, কিন্তু মাঠের বাস্তবতা ভিন্ন। এনসিপি রাজপথে যেমন প্রতিনিধিত্ব চায়, সংসদেও তা প্রয়োজন। আগামী সংসদে তরুণদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে, নইলে গতানুগতিক রাজনীতি পরিবর্তন সম্ভব নয়। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও খুনিদের বিচারের প্রশ্নে এনসিপি জনগণের স্বার্থে আপসহীন থাকবে। সনদের আইনগত ভিত্তি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত এনসিপি তাতে স্বাক্ষর করবে না।’
এনসিপির সভায় সারজিস আলম ছাড়াও কেন্দ্রীয় নেতা সাকিব মাহদীসহ বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতা উপস্থিত ছিলেন। ককটেল বিস্ফোরণের পর অনুষ্ঠানস্থল ও আশপাশের এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।