মরদেহ নেয়নি কেউ, বাবার মৃত্যুর খবরে ফোন বন্ধ করলেন ছেলেও!

অপরিচিত এক ব্যক্তির কবর খোঁড়ার কাজ করছিলেন মো. আজহার উদ্দিন। তার মতো আরও কয়েকজন এ কাজে যুক্ত হয়েছেন। অথচ মৃত ব্যক্তির ছেলে মরদেহ গ্রহণ করতে অপরাগতা প্রকাশ করেন। শুধু তাই নয়, দাফন কাজেও যুক্ত হবেন না বলে সাফ জানিয়ে মোবাইল বন্ধ করে দেন।

পুলিশ ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মৃত ব্যক্তির নাম মো. ইব্রাহিম (ষাটোর্ধ), বাড়ি চট্টগ্রাম। গত সোমবার (৩০ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে মারা যান। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে।

৫ বছর বিদ্যালয়ে না এসেও বেতন-ভাতা পাচ্ছেন কেরানি

বিস্তারিত পড়ুন

অনেক চেষ্টার পর তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়। পরে বিষয়টি তার ছেলেকে জানানো হয়। কিন্তু তিনি মরদেহ নিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। শেষ পর্যন্ত ‘বাতিঘর’ নামে একটি সংগঠন মঙ্গলবার বিকেলে ইব্রাহিমকে দাফন করে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এস.আই) মো. ওহিদুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘ওই ব্যক্তির কাছে দিনাজপুর এলাকার কয়েকজনের ভিজিটিং কার্ড পাওয়া যায়। ওইসব নম্বরে যোগাযোগ করে জানতে পারি, সেখানে তিনি একটি মাদ্রাসায় চাকরি করতেন। বেশ কয়েকজনের সঙ্গে যোগাযোগের পর জানতে পারি, তার একটা ছেলে আছে। তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি মরদেহ গ্রহণ কিংবা দাফনে অংশ নিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এমনকি একপর্যায়ে মোবাইলও বন্ধ করে দেন।’

সাইকেল মেকানিকের ছেলে বিসিএস ক্যাডার

বিস্তারিত পড়ুন

ছেলের বরাত দিয়ে ওই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, চট্টগ্রামের বাসিন্দা ইব্রাহিম মূলত হিন্দু ধর্মাবলম্বী ছিলেন। ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর তিনি প্রায় ৩০ বছর আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার এক নারীকে বিয়ে করেন। ওই নারীর গর্ভে এক ছেলেসন্তান হয়। কিন্তু ওই নারী ছেলেসহ আরেকজনকে বিয়ে করেন। এরপর থেকে ওই নারী আর ইব্রাহিমের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেননি।

অভাব-অনটনে বড় হওয়া আল-আমিন আজ বিসিএস ক্যাডার

বিস্তারিত পড়ুন

বাতিঘর নামে সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা মো. আজহার উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের সংগঠনের উদ্যোগ মূলত বেওয়ারিশ মরদেহ দাফন করা। প্রতিষ্ঠার চার বছরে ২০০ জনের মরদেহ দাফন করেছি। কিন্তু ইব্রাহিম নামে ওই ব্যক্তির ছেলে থাকা সত্ত্বেও তাকে এভাবে দাফন করার বিষয়টি আমাদের খুব কষ্ট দিয়েছে। শুধু তাই নয়, তার পরিবারের কোনো সদস্য সেখানে ছিলেন না।’