ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় বরবটি, করলা ও শসা চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন সাজিদুল ইসলাম নামের এক প্রবাসী। কোনো ধরনের কীটনাশক ছাড়া দেশীয় পদ্ধতিতে ১১০ শতাংশ জমিতে তিনি উচ্চ ফলনশীল জাতের এসব সবজি চাষ করেন।
গত প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে চলছে করলা, শসা ও বরবটি বিক্রি। শেষ পযর্ন্ত আবহাওয়া অনুকূল ও বাজার দর ভালো থাকলে ৮ লাখ থেকে সাড়ে ৮ লাখ টাকার সবজি বিক্রি হবে। এতে খরচ বাদে ৫ লাখ টাকার আয় হবে আশা করছেন সাজিদুল ইসলাম। তিনি উপজেলার দুর্গাপুর পূর্বপাড়া এলাকার বাসিন্দা।
এদিকে তার এই সফলতা দেখে স্থানীয়দের পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজন এসে দেখছেন এবং পরামর্শ নিচ্ছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চারদিকে সবুজে সমারোহ। লোহার রড, নেট জাল, জিআই তার দিয়ে তৈরি করা হয়েছে মাচা। সারি সারি লাগানো গাছে মাচায় ঝুলে আছে করলা, বরবটি আর শসা। চলছে নিয়মিত সকাল-বিকেল পরিচর্যা।
প্রবাসী সাজিদুল ইসলাম বলেন, ছোটবেলা থেকেই আমার সবজি চাষের প্রতি বেশ আগ্রহ ছিল। নানা কারণে তা করা হয়নি। জীবিকার প্রয়োজনে একপর্যায়ে ভালো কিছু করতে সৌদি আরবে চলে যাই। সেখান থেকে ইউটিউবে কৃষিবিষয়ক ভিডিও দেখে দেশের বাড়িতে কিছু করতে বেশ আগ্রহ তৈরি হয়। একপর্যায়ে বাড়ি সংলগ্ন বেশকিছু অনাবাদি জায়গা কৃষি কাজ করতে প্রস্তুত করি। ১১০ শতাংশ জমিতে করলা, শসা ও বরবটি চাষ করা হয়। আরও দুই বিঘা জমিতে টমেটো চারা রোপণ চলছে। পাশাপাশি রয়েছে কলা, লেবু, পেপেসহ নানা ধরনের ফলের গাছ।
তিনি আরও বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসের সার্বিক সহযোগিতায় গত প্রায় দুই মাস আগে উচ্চ ফলনশীল জাতের ১৫শ বরবটি, ১ হাজার করলা ও ৪ হাজার শসা গাছের চারা লাগানো হয়। জায়গা প্রস্তুত, চারা রোপণ ও পরিচর্যাসহ সব মিলিয়ে প্রায় ৩ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। চারা লাগানোর ৩৫ দিনের মাথায় গাছে ফলন আসতে শুরু করে। বর্তমানে একদিন পর পর ২০-২৫ মণ শসা, ১৩০-১৪০ কেজি বরবটি ও ৬০-৭০ কেজি করলা বিক্রি করছি। স্থানীয় বাজারে প্রতিকেজি শসা ৩৫-৪০ টাকা, বরবটি ৬০-৬৫ টাকা ও করলা ৮৫-৯০ টাকা দরে বিক্রি করছি। এ পযর্ন্ত প্রায় ৩ লাখ টাকার মতো সবজি বিক্রি করা হয়।
এই প্রবাসী বলেন, এই মাটিতে সবজি চাষ নিয়ে শুরুতে খুবই চিন্তিত ছিলাম। কিন্তু কৃষি কর্মকর্তাদের সার্বিক সহযোগিতায় ও সঠিকভাবে পরিচর্যা করায় উৎপাদনে তেমন কোনো বেগ পেতে হয়নি। আমার এখানে ৫ জন শ্রমিক নিয়মিত কাজ করছেন।
আখাউড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানা বলেন, সবজি চাষে কম খরচে লাভ বেশি হওয়ায় এ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে সবজি আবাদ করা হচ্ছে। সবজি চাষে কৃষকদের সার বীজসহ অন্যান্য উপকরণ দেওয়াসহ ফলন বৃদ্ধিতে সহায়তা করা হচ্ছে। নানা ধরনের সবজি চাষ করে সত্যিই প্রবাসী সাজিদুল ইসলাম চমক সৃষ্টি করে একজন আদর্শ কৃষকে পরিণত হয়েছেন। তিনি মৌসুম অনুযায়ী সবজি চাষ লাভবান হচ্ছেন।