ঢাকা বুধবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষে কৃষকের সাফল্য

আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৫, ০২:৪১ পিএম
টমেটো চাষে কৃষকের সাফল্য। ছবি- সংগৃহীত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় গ্রীষ্মকালীন হাইব্রিড জাতের টমেটো চাষ করে কৃষকরা নতুন দিগন্তের সূচনা করেছেন। প্রযুক্তির কল্যাণে গ্রাফটিং পদ্ধতিতে টমেটো চাষ করে তারা সফলতা পেয়েছেন। ফলন বিক্রিতে দর ভালো পাওয়ায় কৃষকরা খুশি। বর্তমানে স্থানীয় বাজারে পাইকারিতে প্রতি কেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৮০–৮৫ টাকায়। সড়ক যোগাযোগ ভালো থাকায় এখানকার উৎপাদিত টমেটো জেলা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অন্যান্য সবজির পাশাপাশি গ্রীষ্মকালীন হাইব্রিড টমেটো বারি-৮ চাষ করা হয়েছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে ফলন ভালো রাখতে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে।

সরেজমিনে উপজেলার আদমপুর ও নুরপুর রুটি গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে চারদিকে সবুজ সমারোহ। প্রতিটি গাছে ঝুলে আছে ছোট-বড় টমেটো। মাঠে কাঁচা ও পাকা টমেটোর সমাহার দেখা যাচ্ছে। কৃষকরা টমেটো সংগ্রহ ও বিক্রিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।

কৃষক মো. মোস্তাকিম সরকার জানান, এ মৌসুমে ৭ বিঘা জমিতে হাইব্রিড বারি-৮ চাষ করেছেন। শ্রীমঙ্গল থেকে ১৫ হাজার গ্রাফটিং চারা সংগ্রহ করা হয়। প্রতিপিচ চারা ৮ টাকায় কেনা হয়। জমি ইজারা, প্রস্তুতি, চারা কেনা, নেট জাল, শ্রমিকসহ অন্যান্য খরচ মিলিয়ে চাষে প্রায় ৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। চারা লাগানোর ৬৫ দিনের মাথায় গাছে ফলন আসতে শুরু করে। ইতিমধ্যে প্রায় ৬ লাখ টাকার টমেটো বিক্রি হয়েছে। আবহাওয়া ও বাজার দর ঠিক থাকলে এ মৌসুমে ১৩ লাখ টাকার বেশি বিক্রি হবে বলে আশা করছেন।

কৃষক মো. ফারুক মিয়া বলেন, ‘উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতায় প্রথম বারের মতো ১০৫ শতাংশ জমিতে হাইব্রিড টমেটো চাষ করেছি। প্রায় ২ মাস ধরে বাজারে বিক্রি করে ভালো দাম পাচ্ছি। খরচ বেশি হলেও বাজারে চাহিদা ও দর ভালো।’

কৃষক মো. তাহের মিয়া জানান, গ্রাফটিং পদ্ধতিতে টমেটো গাছ ঢলে পড়ে না, রোগবালাই হয় না এবং ফলন প্রচুর হয়। সাধারণ একটি গাছে ৩–৪ কেজি টমেটো পাওয়া যায়, যেখানে গ্রাফটিং পদ্ধতিতে ১০–১২ কেজি ফলন হয়। এছাড়া গাছের আয়ু ৬ মাস পর্যন্ত থাকে।

আখাউড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানা বলেন, ‘গ্রাফটিং পদ্ধতিতে টমেটো চাষ করে অনেকেই লাভবান হচ্ছেন। রোগবালাই নেই, ফলন ভালো এবং ৫–৬ মাস পর্যন্ত ফলন ধরে রাখা যায়। ফলন বৃদ্ধিতে আমরা সব সময় কৃষকদেরকে সার্বিক ভাবে সহযোগিতা করছি।’