ঢাকা বুধবার, ৩০ জুলাই, ২০২৫

বাল্যবিয়ে ঠেকাতে প্রধান শিক্ষককে দরখাস্ত রুহির

ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুলাই ২৯, ২০২৫, ১১:৩৭ পিএম
প্রধান শিক্ষকের কাছে রুহি আক্তারের আবেদন করা পত্র। ছবি- ‍রূপালী বাংলাদেশ

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে নিজের বাল্যবিয়ে ঠেকাতে সাহসিকতার সঙ্গে প্রধান শিক্ষকের দ্বারস্থ হয়েছেন সপ্তম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থী। ইচ্ছার বিরুদ্ধেই তার পরিবার তাকে জোরপূর্বক বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বাল্যবিয়ে রুখতে নিজ প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক পংকজ শর্মার কাছে আবেদন পত্র জমা দিয়েছে রুহি আক্তার (১৩) নামের ওই শিক্ষার্থী।

সে উপজেলার কড়ৈতলী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং একই গ্রামের গাজী বাড়ির প্রবাসী আব্দুর রশিদের মেয়ে।

দরখাস্তে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী রুহি আক্তার উল্লেখ করেন, ১৮/০৬/২০১২ সালে জন্মগ্রহণ করেন রুহি আক্তার। বর্তমানে তিনি কড়ৈতলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীতে অধ্যায়নরত। ইচ্ছের বিরুদ্ধে পরিবার জোরপূর্বক তাকে বিয়ে দিচ্ছেন। তবে বিবাহে রাজি না হওয়ায় প্রধান শিক্ষকের দারস্থ হন তিনি।

প্রধান শিক্ষক পংকজ শর্মা বলেন, ‘রুহির আবেদন আমি গ্রহণ করেছি এবং দ্রুত বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা অফিস, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং স্থানীয় প্রশাসনের কাছে পাঠিয়েছি। বাল্যবিয়ে রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তৎপরতা চালানো হচ্ছে।’

রুহির মা সুমি বেগম ফোনে জানান, পরিবারিকভাবে মেয়ের দেখাশোনা করা হচ্ছে, তবে বিয়ে এখনও ঠিক করা হয়নি। তিনি জানান, তারা মেয়ের ইচ্ছার প্রতি সম্মান দিবে এবং বিয়ে দিলে আইন অনুযায়ী শাস্তি ভোগ করতে প্রস্তুত।

৮নং পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ হোসেন আহমেদ রাজন বলেন, ‘বাল্যবিয়ে রোধে প্রশাসন ও সুশীল সমাজের সহযোগিতা প্রয়োজন।’

ফরিদগঞ্জ থানা ওসি মো. শাহ আলম জানান, বিষয়টি প্রধান শিক্ষক থেকে আমাদের কাছে এসেছে এবং ইউএনওকে অবহিত করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে সহযোগিতা করব।

ইউএনও বাল্যবিয়ে ঠেকানোর জন্য রুহির সাহসিকতাকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, ‘কোনোভাবেই বাল্যবিয়ে হতে দেব না। মেয়েটির স্বপ্ন ও ভবিষ্যতের স্বার্থেই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’