মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


চাঁদপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: অক্টোবর ২১, ২০২৫, ১০:৫৯ এএম

চাঁদপুর-ঢাকা নৌরুটে দ্রুতগামী নৌযান দেওয়ার দাবি

চাঁদপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: অক্টোবর ২১, ২০২৫, ১০:৫৯ এএম

চাঁদপুর-ঢাকা নৌরুটে চলাচলকারী লঞ্চ। ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

চাঁদপুর-ঢাকা নৌরুটে চলাচলকারী লঞ্চ। ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

চাঁদপুর নৌ বন্দর দেশের অন্যতম বাণিজ্যিক কেন্দ্র, ঐতিহাসিক সংযোগস্থল এবং গুরুত্বপূর্ণ ভৌগোলিক অবস্থান হিসেবে পরিচিত। কিন্তু বহুবছর চাঁদপুর-ঢাকা নৌরুটে চলাচলকারী লঞ্চের সেবার মান উন্নতি না হওয়ায় যাত্রী সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে এই রুটে দ্রুত গতিসম্পন্ন নৌযান চালু করা ও সেবার মান বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজন। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে জেলাবাসীর পক্ষে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক।

সোমবার (২০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন।

চাঁদপুর নৌ বন্দরটি এক সময় ডাকাতিয়া নদীর পাড়ে থাকলেও তিন নদীর মোহনা ঝুঁকিপূর্ণ হওয়া এবং ডাকাতিয়া নদীর গভীরতা কমে যাওয়ায় বিকল্প হিসেবে শহরের নিশি বিল্ডিং এলাকায় স্থানান্তর করা হয়। সেখানে বর্তমানে তৈরি হচ্ছে আধুনিক নৌ বন্দর। কিন্তু আধুনিক নৌ বন্দরের সাথে নৌযানগুলোও আধুনিক হওয়া প্রয়োজন মনে করেন এই রুটের যাত্রীরা।

চাঁদপুর পুরান বাজার ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক দেলোয়ার আহমেদ বলেন, এই রুটের লঞ্চগুলোতে উন্নতি হয়নি। তাদের মত করে পরিচালনা করে। তারা শীত এবং গরম মৌসুমে এসির ভাড়া একই রকম নেয়, কিন্তু সেবার মান বৃদ্ধি হয়নি।

ফরিদগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা সমাজকর্মী শিমুল হাসান বলেন, ঢাকা-চাঁদপুর নৌরুটে ভ্রমণ খুবই চমৎকার। কিন্তু ৫০ টাকার ভাড়া ৩০০টাকা হলেও যাত্রী সেবার মান ভালো হয়নি। সেবার মান বৃদ্ধি হলে যাত্রীর সংখ্যা বাড়বে।



শহরের পুরান বাজারের বাসিন্দা শিক্ষক ও লেখক আইরিন সুলতানা লিমা বলেন, সড়ক পথের চাইতে লঞ্চে এখন সময় বেশি লাগে। সড়ক পথে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টায় ঢাকায় পৌঁছানো যায়। সেখানে লঞ্চে সময় লাগে ৪ থেকে সাড়ে ৪ ঘণ্টা। এই পদ্ধতির পরিবর্তন করে দ্রুতগামী নৌযান এখন সময়ের দাবি।

শহরের কুমিল্লা সড়কের বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী আবু বকর ছিদ্দিক বলেন, দ্রুত নৌযান এবং সেবার মান উন্নত করে যৌক্তিক ভাড়া নিতে পারে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ। তবে বর্তমান সেবার মান খুবই খারাপ। এক সময় লঞ্চের ভ্রমণই ছিল সবার কাছে প্রথম পছন্দ, বিশেষ করে চাঁদপুরের দক্ষিণাঞ্চল ও শরীয়তপুরের যাত্রীরা এখনো এই রুটে যাতায়াত করে।

শহরের চেয়ারম্যানঘাট এলাকার বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী এ.ওয়াই.এম. জাকারিয়া বলেন, আরও অনেক আগে চাঁদপুর নৌ বন্দর নির্মাণ এবং লঞ্চগুলোর যাত্রীসেবা বৃদ্ধির প্রয়োজন ছিল। ব্যবস্থাপনা বেহাল হওয়ার কারণে যাত্রী অনেক কমেছে। এখন নতুন করে আধুনিক নৌ বন্দর নির্মাণ এবং দ্রুতগামী নৌযান দিলেও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা খুবই কম মনে হয়।


জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন গত ১৬ অক্টোবর নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ে দেওয়া চিঠিতে উল্লেখ করেন, ঢাকা থেকে বরিশাল বিভাগের সব জেলা এবং চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ঢাকাসহ সারা দেশের লঞ্চ, কার্গো ও জাহাজ চলাচলের ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে চাঁদপুর নদীবন্দর ব্যবহৃত হয়। চাঁদপুর শহর পদ্মা, মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীর মোহনায় অবস্থিত হওয়ায় এবং ইলিশের বাড়ি হিসেবে পরিচিতি পাওয়ায় ভ্রমণপিপাসু মানুষের কাছে আকর্ষণীয় পর্যটন স্থান হিসেবে গড়ে উঠেছে। জনসাধারণ নৌ পথে চাঁদপুর-ঢাকা যাতায়াতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে।

বর্তমানে নদীপথে চাঁদপুর-ঢাকা যাতায়াতে সাড়ে ৩ ঘণ্টা থেকে ৪ঘন্টা সময় লাগে। অপরদিকে সড়কপথে যাতায়াতে সময় লাগে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা। ধীরগতির পুরোনো লঞ্চ সড়কপথের তুলনায় নদীপথে দীর্ঘ সময় ব্যয় হওয়ায় জনসাধারণ নদীপথে যাতায়াত থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। নদীপথে যাতায়াত তুলনামূলক কম ব্যয়বহুল, আরামদায়ক ও নিরাপদ। নদীপথের যাতায়াত স্বল্পসময়ে সম্পন্ন করার জন্য দ্রুতগতির লঞ্চ চলাচল নিশ্চিত করা প্রয়োজন। লঞ্চ কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছা থাকলে বর্তমানে যেসব লঞ্চ ৩ঘণ্টায় চাঁদপুর থেকে ঢাকায় পৌছায় ওইসব লঞ্চ আড়াই ঘণ্টায়ও পৌঁছানো সম্ভব।


এ ছাড়াও বেশির ভাগ লঞ্চে নিম্নমানের আসন, অপ্রতুল লাইফ জ্যাকেট, অপরিষ্কার শৌচাগার ও অভ্যন্তরীণ পরিবেশ সন্তোষজনক নয়। এদিকে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ানে চাঁদপুর আধুনিক লঞ্চ টার্মিনালের উন্নয়ন প্রকল্প চলমান। কিন্তু সাধারণ মানুষ লঞ্চে যাতায়াতের স্বাচ্ছন্দ্যবোধ না করে উন্নত লঞ্চ টার্মিনাল নির্মাণ করেও আশানুরূপ ফল না পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন বলেন, চাঁদপুর-ঢাকা নৌরুট সচল রাখার জন্য আমি মনে করি আধুনিক এবং দ্রুতগতিসম্পন্ন লঞ্চ চালুর উদ্যোগ, লঞ্চসমূহ সংস্কার, সেবার মান বৃদ্ধি, আধুনিকায়ন এবং আড়াই ঘণ্টার মধ্যে চাঁদপুর-ঢাকা পৌঁছানোর লক্ষ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।

তিনি আরও বলেন, চাঁদপুর জেলার জনসাধারণ ছাড়াও শরীয়তপুর এবং লক্ষ্মীপুর জেলার কয়েকটি এলাকার জনগণ চাঁদপুর হতে ঢাকায় নৌরুটে যাতায়াত করেন। সড়কের ওপরে চাম কমাতে হলে জনপ্রিয় এই নৌরুটের সেবার মান বৃদ্ধি করা প্রয়োজন, অন্যথায় ভবিষ্যতে যাত্রীর অপ্রতুলতায় লঞ্চ সেবা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!