শনিবার, ১৪ জুন, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


জালালউদ্দিন সাগর, চট্টগ্রাম

প্রকাশিত: জুন ১২, ২০২৫, ০৫:০৪ এএম

চামড়ায় এবারও লোকসানে  চট্টগ্রামের মৌসুমি ব্যবসায়ীর

জালালউদ্দিন সাগর, চট্টগ্রাম

প্রকাশিত: জুন ১২, ২০২৫, ০৫:০৪ এএম

ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

বিগত কয়েক বছরের মতো এবারও কোরবানির পশুর কাঁচা চামড়া সংগ্রহে হতাশ হয়েছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। বিক্রি করতে না পেরে সড়কের পাশে ফেলে গেছেন সেসব চামড়া। শুধু মৌসুমি ব্যবসায়ীরাই নন, পশুর চামড়া বিক্রি করতে পারেননি যারা কোরবানি দিয়েছেন তারাও। দান হিসেবে পাওয়া পশুর চামড়া রাস্তায় ফেলে দিয়েছেন মাদ্রাসার মালিকরা। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) পরিচ্ছন্নতা বিভাগ ও সাধারণ মানুষের অভিযোগ, কোরবানির পশুর দেড় থেকে দুই লাখ চামড়ার জায়গা হয়েছে করপোরেশনের ভাগাড়ে। যদিও বৃহত্তর চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির দাবি, চট্টগ্রাম মহানগর ও ১৬টি উপজেলা থেকে ৪ লাখ ১৫ হাজার ৩৫১টি পশুর চামড়া সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা জানান, চামড়া নিয়ে জেলা প্রশাসনের দৃশ্যমান মনিটরিং না থাকায় এবারও সিন্ডিকেট থেকে মুক্ত হতে পারেনি চামড়ার বাজার।

ঈদের দিন ও তার পরবর্তী সময়ে নগরী এবং চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন উপজেলায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নামমাত্র মূল্যে অথবা কোনো কোনো ক্ষেত্রে মূল্য ছাড়াও চামড়া কিনতে আগ্রহ দেখায়নি মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। চামড়া সংগ্রহে আগ্রহ ছিল না আড়তদারদেরও। যে কারণে বেলা শেষ হয়ে গেলেও পশুর চামড়া পড়েছিল কোরবানি স্থলেই। মৌসুমি ব্যবসায়ী ও ব্যাপারী না পাওয়ায় সড়কের পাশে থরে থরে চামড়াগুলো ফেলে রাখেন যারা কোরবানি দিয়েছেন।

চট্টগ্রামে এ বছর সোয়া ৪ লাখ কোরবানির পশুর কাঁচা চামড়া সংগ্রহের কথা বলা হলেও তা ‘মিথ্যা’ বলে দাবি করেছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা।

নগরীর আগ্রাবাদ এলাকার মৌসুমি ব্যবসায়ী ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘ঈদের দিন আমরা প্রায় দেড় হাজার চামড়া সংগ্রহ করেছিলাম। ঈদের পরদিনও সে চামড়া বিক্রি হয়নি।’ তিনি বলেন, লাখ লাখ চামড়া পড়েছিল সড়কের দুই পাশে। পরে সেগুলো করপোরেশনের ডাম্পিংয়ে ফেলা হয়েছে।
 
ঈদের দিন ও ঈদের পরদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নগরীর বেশ কয়েকটি সড়ক ও আবাসিক এলাকায় চামড়ার স্তূপ চোখে পড়েছে এ প্রতিবেদকের। ঈদের দিন সন্ধ্যার পর নগরীর আগ্রাবাদ থেকে পতেঙ্গা এবং নিউমার্কেট থেকে চকবাজার হয়ে বহদ্দারহাট মূল সড়কের পাশে হাজার হাজার চামড়ার স্তূপ দেখা গেলেও কিনতে আসেনি কোনো ব্যাপারী। একই অবস্থা দেখা গেছে ঈদের দ্বিতীয় দিন গত রোববারও। পরে এক্সকাভেটর দিয়ে সেসব চামড়া সংগ্রহ করে ডাম্পিংয়ে (ভাগাড়) ফেলেছে করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা বিভাগ। চসিকের উপ-প্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা প্রণব কুমার শর্মা বলেন, ‘এ বছর এখন পর্যন্ত আমরা ৬০ হাজারের মতো পশুর চামড়া ডাম্পিং করেছি। সামনের কয়েক দিনে এ সংখ্যা আরও বাড়বে বলেও জানান তিনি।’

নগরীর নিউ মার্কেট এলাকার এক মাদ্রাসার স্বত্বাধিকারী আবুল ফয়েজ এ প্রতিবেদককে জানান, গলিতে গলিতে ঘুরে দান করা কোরবানির চামড়া সংগ্রহ করেছেন মাদ্রাসার ছেলেরা। চামড়া সংগ্রহ করতে যে টাকা গাড়িভাড়া খরচ হয়েছে বিক্রি করে সে টাকাও পাওয়া যায়নি।

নগরীর চান্দগাঁও এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রহিম জানান, সকালে গরু কোরবানির কাজ শেষ হলেও বিকেল পর্যন্ত চামড়া কিনতে আসেনি কোনো ব্যবসায়ী। এলাকার যারা এসেছেন, তারা বিনা পয়সায় চামড়া দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলেন।

মৌসুমি ব্যবসায়ী আবুল ফজলের দাবি, চামড়া সংগ্রহের পর বিকেলে আড়তে গেলে কাক্সিক্ষত দাম  দেননি আড়তদাররা। যে চামড়া আমরা ৬০০-৮০০ টাকায় কিনেছি, সে চামড়ার দাম উঠেছে ২০০ থেকে ৪০০ টাকা। তিনি বলেন, ‘গত কয়েক বছরের মতো এবারও চামড়া কিনে আমাদের লস দিতে হয়েছে।’

লাভের আশায় চামড়া কিনে উলটো লোকসান গুনতে হয়েছে জানিয়ে মীরসরাই উপজেলার মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ী আবুল হোসেন বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে মূল্য নির্ধারণ করায় আমরা আশাবাদী হয়ে চামড়া কিনেছিলাম। কিন্ত সারা দিন ঘুরে চামড়া সংগ্রহের পর বিকেলে বাজারে তোলার পর প্রথম ৪-৫ ঘণ্টা কেউ জিজ্ঞেস করতেও আসেনি। পরে রাতে গড়ে ২৫০ টাকা করে লোকসানে সব চামড়া বিক্রি করে দিয়েছি।’

বৃহত্তর চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাবেক সভাপতি মো. মুসলিম উদ্দিন বলেন, ‘লবণযুক্ত চামড়ার দাম ১ হাজার ১৫০ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার। সে দামে নগরী ও ১৬টি উপজেলা মিলে ৪ লাখ ১৫ হাজার ৩৫১টি কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহ করেছি আমরা।’

প্রসঙ্গত, এ বছর কোরবানির পশুর লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম গত বছরের চেয়ে ৫ টাকা বাড়িয়ে প্রতি বর্গফুট ৬০ থেকে ৬৫ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার। আর ঢাকার বাইরের চামড়ার দাম ৫ টাকা বাড়িয়ে প্রতি বর্গফুট ৫৫ থেকে ৬০ টাকা করা হয়েছে। একই সঙ্গে খাসি ও বকরির চামড়ার দাম ২ টাকা বাড়ানো হয়েছিল। 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!