চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) চান্দগাঁও থানা পুলিশ ও র্যাব-৭-এর যৌথ অভিযানে অস্ত্রসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সোমবার (২১ জুলাই) বিকেল ৩টার দিকে চান্দগাঁও থানাধীন ফরিদার পাড়া এলাকায় শহিদুল ইসলাম ওরফে ‘বুইস্যা’ প্রকাশ্যে অস্ত্রসহ শো-ডাউন ও ফায়ারিং করছে—এমন তথ্যের ভিত্তিতে পরিচালিত অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
এ সময় অস্ত্র, গোলাবারুদ, মাদকদ্রব্য, টর্চার সরঞ্জাম, সিসি ক্যামেরা এবং ‘সন্ত্রাসী’ কার্যক্রমে ব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিসপত্র উদ্ধার করা হয়।
মঙ্গলবার প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ।
ব্রিফিংয়ে বলা হয়, ‘চান্দগাঁও থানার ওসি আফতাব উদ্দিনের নেতৃত্বে চান্দগাঁও থানা পুলিশ ও র্যাব-৭ (সিপিসি-৩) এর যৌথ টিম বহদ্দারহাট কাঁচাবাজারের পেছনে মাছবাজার এলাকার একটি ভবনের তৃতীয় তলায় সন্ত্রাসীদের গোপন টর্চার সেলে অভিযান চালায়। অভিযানে উপস্থিত ১০ সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়।’
গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন- চাঁদপুরের মো. বোরহান উদ্দিন (৩০), চট্টগ্রামের পটিয়ার শাস্ত্র মজুমদার (২০), রাঙামাটির লংগদুর আল আমিন (২৫), চান্দগাঁওয়ের মারুফ (১৮), কক্সবাজারের উখিয়ার মিজানুর রহমান (৩২), চান্দগাঁওয়ের রোকন উদ্দিন (২৯), ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মো. অন্তর (২২) চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার খড় পাল (২১), ভোলার মো. রাহাত (১৮) ও চট্টগ্রামের মোহরার মো. ফরহাদ (২৪)।
আসামিদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়- ১টি কাঠের বাটযুক্ত চাইনিজ কুড়াল, ১টি তাজা পিস্তলের গুলি (KF 7.65 চিহ্নিত), ২টি শটগানের কার্তুজ (১টি লাল রঙের, ১টি মরিচা পড়া সবুজ), ১২টি ব্যবহৃত শটগানের খালি কার্তুজ, ৯টি ব্যবহৃত পিস্তলের গুলির খোসা, ১টি গ্রিন পাওয়ার ব্র্যান্ডের হিটগান।
এ ছাড়াও রামদা, ড্রেগার, চাকু, র্যাট, হ্যাকসো ব্লেড ও করাত, বিভিন্ন ধরনের কাঁচি, স্ক্রু ড্রাইভার, প্লাস এবং ২০ ফুট দৈর্ঘ্যের তার উদ্ধার করা হয়।
ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, আসামিদের কাছ থেকে ১০ লিটার দেশীয় তৈরি চোলাই মদ (৫ বোতল), ১০টি HUNTER ব্র্যান্ডের বিয়ার ক্যান (৩.৩ লিটার), ৪০০ গ্রাম গাঁজা, ৫০০টি সাদা জিপার ব্যাগ (মাদক প্যাকিংয়ের জন্য), ২০০০টি গাঁজা পুরিয়া করার খালি কাগজ, ১টি ডিজিটাল ওজন মাপার মেশিন (আরএফএল ব্র্যান্ড) উদ্ধার করা হয়।
এ ছাড়াও ১টি ইলেকট্রিক শক মেশিন (Made in USA, 980000K Volt চিহ্নিত), ১টি টাকা গণনার মেশিন,
১টি কাঁধে ঝোলার ব্যাগ জব্দ করে পুলিশ।
ব্রিফিংয়ে পুলিশ জানায়, চান্দগাঁও থানা এলাকা ছাড়াও চট্টগ্রাম মহানগরের বিভিন্ন এলাকায় চক্রটি অস্ত্র প্রদর্শন, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, ছিনতাই, চুরি এবং টর্চার সেল পরিচালনার মাধ্যমে জনমনে ত্রাস সৃষ্টি করে আসছিল। তাদের বিরুদ্ধে চান্দগাঁও থানা ও সিএমপির অন্যান্য থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
সিএমপি সূত্রে জানানো হয়, অভিযানে উদ্ধারকৃত আলামত ও গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে পৃথক মামলা রুজু করা হয়েছে এবং তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।