চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বন্দর কমিউনিটি সেন্টার সড়কের পাশে গড়ে উঠেছে বিশাল ময়লার ভাগাড়। প্রতিদিন গৃহস্থালি ও বাজারের বর্জ্য এখানে ফেলা হচ্ছে। এসব বর্জ্য থেকে ছড়ানো দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন পথচারী, শিক্ষার্থী ও আশপাশের বাসিন্দারা। সড়কের ঠিক পাশেই রয়েছে মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ। পবিত্র এই স্থানের পাশে এমন ভাগাড় হওয়ায় স্থানীয়দের মাঝে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজারো শ্রমিক কর্মস্থলে যাতায়াত করেন। একই পথ ধরে চট্টগ্রামের জনপ্রিয় পারকি সমুদ্রসৈকত এবং সুফি সাধক হজরত শাহ মোহছেন আউলিয়া (রহ.)-এর মাজারে যান অসংখ্য ভক্ত-দর্শনার্থী।
সড়ক থেকে মাত্র ৩০ গজ দূরেই রয়েছে কোমলমতি শিশুদের একটি কেজি স্কুল। প্রতিদিন দুর্গন্ধযুক্ত বাতাসে ক্লাস করতে বাধ্য হচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
স্কুলশিক্ষার্থী জেরিন বলেন, ‘প্রতিদিন ক্লাসে যেতে নাক চেপে থাকতে হয়। মাঝে মাঝে মাথা ঘোরে। স্কুলের সামনে এমন ময়লা থাকলে পড়াশোনায় মন বসে না।’
অভিভাবক সেলিমা আক্তার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমাদের বাচ্চারা প্রতিদিন দূষিত বাতাসে শ্বাস নিচ্ছে। স্কুলের আশপাশে এমন ভাগাড় রাখা একেবারেই অমানবিক।’
শিক্ষক মাস্টার গফুর বলেন, ‘বধ্যভূমির পাশে ময়লার ভাগাড় রাখা শুধু নোংরামিই নয়, এটি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতির প্রতি অবমাননা। এ বিষয়ে প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।’
আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিনা আক্তার বলেন, ‘কিছুদিন আগে আমি নিজে এসে বিষয়টি খেয়াল করেছি। সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছি যাতে দ্রুত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যবস্থা করা হয় এবং কেউ যেন আর এখানে ময়লা ফেলতে না পারে। নির্দেশ অমান্য করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
পরিবেশবিদরা সতর্ক করে বলেছেন, সড়কের পাশে এভাবে বর্জ্য জমতে থাকলে বায়ু, মাটি ও ভূগর্ভস্থ পানি মারাত্মকভাবে দূষিত হতে পারে, যা দীর্ঘমেয়াদে এলাকার মানুষের জন্য বড় স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করবে।



সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন