টানা বৃষ্টিপাত ও নিম্নচাপের প্রভাবে কক্সবাজারের মহেশখালী, কুতুবদিয়া, কক্সবাজার সদর ও সেন্টমার্টিনসহ বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক জলাবদ্ধতা ও ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। দুর্বল বেড়িবাঁধ ভেঙে পড়ায় পানির তোড়ে ঘরবাড়ি ও বসতভিটা তলিয়ে গেছে। ফলে হাজারো মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় চরম দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় কক্সবাজারে ৯৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে বলে জানায় আবহাওয়া অধিদপ্তর। ঘণ্টায় ২০-২৫ কিমি গতির ঝোড়ো হাওয়ার পাশাপাশি কিছু সময় তা বেড়ে ৪০-৫০ কিমিতে পৌঁছেছে বলেও জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
কুতুবদিয়ায় উপজেলার একাধিক স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে পানিতে ডুবে গেছে গ্রামাঞ্চল। বিশেষ করে মাতারবাড়ী ও ধলকাটায় সমুদ্রের ঢেউয়ে বসতবাড়ি বিলীন হয়ে গেছে প্রায়। ফলে হাজার হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
এদিকে মহেশখালী উপজেলায় সমুদ্রের জোয়ারে ভেসে গিয়ে বৃহস্পতিবার (২৯ মে) দানু মিয়া নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। জেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে এই দুই উপজেলায়।
অন্যদিকে প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৪-৫ ফুট উচ্চতায় প্রবাহিত হওয়ায় দ্বীপের চারপাশে ভাঙন শুরু হয়েছে। পানির তোড়ে অন্তত ৫০টির বেশি ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে। ঘাটে নোঙর করা পাঁচটি মাছ ধরার ট্রলারও ঢেউয়ের আঘাতে বিধ্বস্ত হয়েছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গত কয়েক বছর ধরে এসব এলাকার বেড়িবাঁধ সংস্কার ও রক্ষাণাবেক্ষণে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে প্রশাসনের বিরুদ্ধে চরম ক্ষোভ রয়েছে এলাকাবাসীর।
এ বিষয়ে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক সালাহ উদ্দিন বলেছেন, মহেশখালী, কুতুবদিয়া ও ভারুয়াখালী এলাকায় বেড়িবাঁধ ভাঙন রোধে কাজ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
গত বৃহস্পতিবার থেকে টানা বৃষ্টির কারণে ঈদগাঁও, উখিয়া, চকরিয়া ও টেকনাফ উপজেলায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এতে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও কর্মজীবী মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
জেলার অন্যান্য উপজেলার শতাধিক জনপদে পানিবন্দি পরিস্থিতি বিরাজ করছে। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল, ভূমিধস ও অতিরিক্ত বৃষ্টির পানিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে বলে স্থানীয়রা আশঙ্কা করছে।
এ বিষয়ে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আজ শুক্রবার ও আগামীকাল কক্সবাজারে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত অব্যাহত রয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :