টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের পশ্চিম লেদা এলাকায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন নুরুল ইসলামের বাড়িতে হামলা চালিয়ে তাঁকে রক্তাক্ত করে সে অবস্থায় তাকে অপহরণ করেছে পাহাড়ি অস্ত্রধারী রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা। অপহৃত নুরুল ইসলাম (৫০) ওই এলাকার শামশু আলমের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) রাত ৯ টার দিকে একদল ভারী অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী হঠাৎ নুরুল ইসলামের বাড়িতে হানা দেয়। দরজা বন্ধ পেয়ে তারা প্রথমে বাড়িতে গুলিবর্ষণ করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এরপর বাড়ির চাল ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে দরজা ভেঙে নুরুল ইসলামকে টেনে-হিঁচড়ে পাহাড়ের দিকে নিয়ে যায়।
অপহৃতের ছেলে কামাল হোসেন জানান, রাত ৯টার দিকে হঠাৎ সন্ত্রাসীরা তাদের বাড়িতে প্রবেশ করে। প্রথমে তারা দরজা ভাঙার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়। পরে চাল ভেঙে ঘরে ঢুকে জোরপূর্বক দরজা ভেঙে তাঁর বাবাকে ধরে নিয়ে যায়। সন্ত্রাসীদের হাতে ছিল ভারী অস্ত্র। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা গুলির খোসা দেখে ধারণা করা হচ্ছে, তা বিদেশি অস্ত্রের।
কামাল হোসেন প্রশাসনের প্রতি দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, তাঁর বাবাকে সন্ত্রাসীদের হাত থেকে উদ্ধার করতে হবে। পাশাপাশি সন্ত্রাসীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার জন্য তিনি সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
স্থানীয়রা জানান, সন্ত্রাসীরা শুধু অপহরণই নয়, বাড়ির সদস্যদের ওপর নির্মম মারধর চালায় এবং মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যায়। গুলিবর্ষণের ঘটনায় পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
ঘটনার পর এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ভীতি বিরাজ করছে। তারা দ্রুত অপহৃত ব্যক্তিকে উদ্ধারের পাশাপাশি এলাকার নিরাপত্তা জোরদারের দাবি জানাচ্ছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি।
টেকনাফ ১৬ এপিবিএনের আওতাধীন লেদা ২৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম রাজু জানান, বিষয়টি জানার পর তিনি দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছান। সেখানে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের সঙ্গে প্রায় ৬১ রাউন্ড ফাঁকা গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে।
তিনি আরও জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে ক্যাম্প সংলগ্ন পাহাড়ে অবস্থানরত কয়েকটি ডাকাত দল নুরুল ইসলামকে অপহরণ করেছে। তাঁকে উদ্ধারের জন্য পাহাড়ে অভিযান চালানো হচ্ছে যেই অভিযান এখনো অব্যাহত রয়েছে।
ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসী গ্রুপগুলো যাতে আরও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে না পারে, সে বিষয়ে সদস্যরা সতর্ক রয়েছেন।

