ঢাকা রবিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৫

সেতুর নিচে ইটের দেয়াল-লোহার খাঁচা

পানিবন্দি পাঁচ শতাধিক পরিবার

মোজাম্মেল হক আলম, লাকসাম
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৩, ২০২৪, ০৭:৫০ পিএম
সেতুর নিচে ইটের দেয়াল ও লোহার খাঁচা তৈরি করে মৎস্য প্রকল্প। ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

লাকসাম-মনোহরগঞ্জ দুই উপজেলার সিমান্তবর্তী এলাকায় সেতুর নিচে ইটের দেয়াল ও লোহার খাঁচা তৈরী করে নাড়িদিয়া ঘাগরিয়া সংযোগ খালের পানিপ্রবাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এতে পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রায় পাঁচ শতাধিক পরিবার দীর্ঘদিন পানি বন্দী হয়ে পড়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী রুপালি মৎস্য চাষ কমিউনিটি এন্টারপ্রাইজ নামে একটি সাইনবোর্ড টানিয়ে মৎস্য প্রকল্পের নামে ইটের দেয়াল ও লোহার খাঁচা বানিয়ে খালের পানিপ্রবাহ বন্ধ করে দেয়।  যার ফলে লাকসাম উপজেলার গোবিন্দপুর, উওরদা ইউনিয়নের মেল্লা, হাড়িদিয়া, আঙ্গারিয়া ও দোখাইয়া গ্রামের প্রায় ৫‍‍`শ পরিবার পানিবন্ধি হয়ে পড়ছে। 

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ সম্প্রতি ভয়াবহ বন্যায় মেল্লা, নাড়িদিয়া, আঙ্গারিয়া ও দোখাইয়া গ্রামের সড়ক ও বসতবাড়ি পানিতে ডুবে গেছে। এখনো পানিবন্ধী হয়ে দিনযাপন করছে তারা। তার উপর ওইসব এলাকার দিয়ে বয়ে যাওয়া খাল-বিল ও কালভার্টের মুখ বন্ধ করে পানির স্বাভাবিক প্রবাহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে কিছু লোভী ব্যাক্তিরা। ওই ভুয়া প্রকল্প রুপালি মৎস্য চাষ কমিউনিটি এন্টারপ্রাইজের নামে উপজেলা প্রশাসন কাছে মৌখিক অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাইনি তারা। 

ভুক্তভোগী স্থানীয় ইয়াকুব আলী, সিরাজ মিয়া, ফারুক, দুলাল, হাবিবুর রহমান, সোলাইমান, বজু মিয়া, নাজমুল, আজিম, জাবেদ, নরু মিয়া, আবু সায়েদসহ অন্যান্য কৃষকরা জানান, ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য ও স্থানীয় প্রভাবশালী তাদের সহযোগীরা সেতুর মুখ বন্ধ করে জোরপূর্বক অবৈধভাবে মাছ চাষ করছেন। পানি নিষ্কাশন বন্ধ করায় এতে পানিবন্দি শতশত পরিবার। এছাড়াও প্রকল্পের মধ্যে নৌকা চলাচল করতে না পারায় ব্যাহত হচ্ছে মাছ ধরা ও শাপলা তুলার কাজ। কেউ কিছু বললে তাকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে কৃষকদের মারধরও করেছে দখলকারীরা।

অভিযুক্ত রুপালি মৎস্য চাষ কমিউনিটি এন্টারপ্রাইজ প্রকল্পের পরিচালক আবদুল মান্নান বলেন, এলাকার সবার মতামতে সেতুর মুখে লোহার খাঁচা তৈরি করা হয়েছে যাতে পানি চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না হয়।এতে দোষের কিছু আছে বলে মনে হয় না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিয়ম অত জানা নেই। কিছু লোক এর বিরোধিতা করছে। তবে বেশিরভাগ কৃষকই মাছ চাষের জন্য এ মৎস্য প্রকল্পকে সাদুবাদ জানিয়েছে।

প্রকল্পের সাধারণ সম্পাদক লিটন বলেন, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার ও এলাকার কিছু লোকজন একত্রিত হয়ে প্রকল্পটি শুরু করেন। গত পাঁচই আগষ্ট হাসিনা সরকার পতনের পর স্থানীয় আওয়ামী নেতা কর্মীরাও আত্মগোপনে থাকায় প্রকল্পটি চরম সংকটে পড়ে। পরে স্থানীয় লোকজন আমাকে সঠিক ভাবে পরিচালিত করতে এ পদটি দেওয়া হয়েছে।