ঢাকা রবিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৫

নব্য নেতার থাবায় লন্ডভন্ড গাইবান্ধা-৫ আসনের বিএনপির দুর্গ 

গাইবান্ধা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুলাই ১২, ২০২৫, ০৯:৪৭ পিএম
সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন মিলে গঠিত গাইবান্ধা-৫ সংসদীয় আসন। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ গ্রাফিক্স

সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন মিলে গঠিত গাইবান্ধা-৫ আসন। বিগত সময়ে নানা নির্যাতন-হয়রানীতেও আসনটিতে বিএনপির অবস্থান টিকিয়ে রেখেছিল ত্যাগী নেতারা। আওয়ামী লীগের দুঃশাসন শেষ হলে আসনটি পরিণত হয় বিএনপির দুর্গে। কিন্তু সেই দুর্গ এখন লন্ডভন্ড হয়ে পড়েছে এক নব্য নেতার থাবায়।

স্থানীয় বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বলছেন, গত ৫ আগস্টে হাসিনা সরকারের পতনের পর হঠাৎই দলটিতে যোগ দেন আওয়ামীপন্থী এক ব্যবসায়ী নাহিদুজ্জামান নিশাদ। তিনি যোগদান করে দলকে বিভক্ত করে ফেলেন। এক পক্ষকে কাছে নিয়ে মেতে উঠেন টাকার খেলায়।

অভিযোগ, নিজের লোকদেরকে কাছে নিয়ে পদপদবী বাগিয়ে নিতে প্রকাশ্য গ্রুপিং করছেন। নেতাকর্মীদের নিজের বলয়ে নিয়ে আনতে না পারলেই ত্যাগী নেতাদের বহিষ্কার করছেন। দিচ্ছেন কারণ দর্শানোর নোটিশ। এমনকি মামলা-হামলাও ঠুকে দিচ্ছেন। করছেন নানাভাবে হয়রানিও।

শুধু তাই নয়, প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগের লোকজনকে পুনর্বাসন করতে ইউনিয়ন বিএনপির কাউন্সিলে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক পদে দাপট খাটিয়ে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হচ্ছে, করা হচ্ছে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের হয়রানিও। শুধু তৃণমূলই নয়, জেলা পর্যন্ত পড়ছে তার থাবা। ফলে অনেকটা অসহায় হয়ে পড়েছেন সাঘাটা-ফুলছড়ি দুই উপজেলার তৃণমূল ও বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।

নাহিদুজ্জামান নিশাদ। ছবি- সংগৃহীত

জানা গেছে, ওয়ান-ইলাভেনের পর ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর মো. হাসান আলী সরকার রাজনীতি থেকে অবসরে গেলে পর্যায়ক্রমে আসনটির হাল ধরেন সোনাতলা সরকারি নাজির আক্তার কলেজের সাবেক জিএস মাইনুল ইসলাম শামীম, জেলা বিএনপির সম্পাদক রাজী রাহী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রদল নেতা শিল্পপতি কামরুজ্জামান সোহাগ, ঢাকার ব্যবসায়ী অ্যাডভোকেট নাজমুল ইসলাম নয়ন।

পরে ২০১৪ সালে এক তরফা নির্বাচনের পর হাজী রাহী নিষ্ক্রিয় হয়ে গেলে কামরুজ্জামান সোহাগ ও ময়নুল ইসলাম শামীম দলের হাল ধরে প্রত্যেকটি প্রোগ্রাম সচল রাখার চেষ্টা করেন। এরপর ২০১৮ সালের ভোটের সময় বিএনপির কেন্দ্রীয় হাই-কমান্ড মনোনয়ন দেন কৃষকলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির ১৭ বছরের সহসভাপতি ফারুক আলম সরকারকে। দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে তারই ভোট করতে নিজেদের কর্মীদের উৎসাহিত করেন সাবেক দুই ছাত্রনেতা ও তৎকালীন জেলা বিএনপির সদস্য শামীম ও সোহাগ।

জানা গেছে, শুধু কর্মীদের নয়, নিজে ভোট করতে গিয়ে সাঘাটা থানায় ২টি মিথ্যা মামলার আসামি করা হয় কামরুজ্জামান সোহাগকে। যদিও ভোটের পরে ফারুক আলম সরকারের সাথে এক বছর গ্রুপিং করে রাজনীতি চাঙ্গা রাখেন কামরুজ্জামান সোহাগ। কিন্তু গ্রুপিং রাজনীতির দিকে গড়ালে কামরুজ্জামান সোহাগ ও ফারুক আলম সরকার এক মঞ্চে প্রোগ্রাম শুরু করেন ২০১৯ সালের শেষ দিক থেকে। তারপর থেকে সবাই মিলে একসাথে দল গোছানো শুরু করেন তারা।

তৃণমূল নেতারা বলছেন, ওই দুই নেতার দল গোছালে সাঘাটা ফুলছড়ি দুই উপজেলার প্রত্যেকটা ওয়ার্ড কমিটি গঠন, ফুলছড়ি উপজেলা বিএনপির কাউন্সিল থেকে শুরু করে বিএনপির সকল অঙ্গ সংগঠনের কমিটিতে কোনো বিভেদ থাকেনি। দলের দুর্দিনে একই মঞ্চে দাঁড়িয়েছিলেন, সকল মনোনয়ন প্রত্যাশীও ছিলেন, যার ফলে গাইবান্ধা-৫ আসনটি পরিণত হয়েছিল বিএনপির দুর্গে। কিন্তু আগষ্ট-পরবর্তী পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নব্য নেতার যোগদানে সবকিছু ভেস্তে গেছে।

 

গাইবান্ধা জেলা বিএনপির সূত্র জানায়, আওয়ামী সমর্থিত ব্যবসায়ী বগুড়ার রোসার্স হোটেল ও বারের মালিক নাহিদুজ্জামান নিশাদকে দলে যোগদান করায় একদল সুযোগ সন্ধানী অর্থলোভী নেতা। নাহিদুজ্জামান নিশাদকে জেলা বিএনপিতে সদস্যপদ প্রদানে টাকা খান কেন্দ্রীয় সহ-সাংগাঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম ও আব্দুল খালেক। পাশাপাশি দলের কেন্দ্রীয় দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা অর্থের বিনিময়ে তাকে সহসভাপতি পদ প্রদান করা হয়। অথচ তার সুপারিশপত্রে গাইবান্ধা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের কোনো সুপারিশ ছিল না।

জেলা বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বলেন, ৫ আগস্ট পট পরিবর্তনের পর কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকে দলের ওয়ার্ড থেকে শুরু করে কেন্দ্র পর্যন্ত সব জায়গাতে যোগদান প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে নিষিদ্ধ থাকলেও ‘দিনকাল’ অফিসের এক কর্মচারীর কুটচালে প্রথম যোগদান হয় গাইবান্ধাতে। তা-ও আবার জেলা বিএনপির সহসভাপতি হিসেবে।

অথচ সে কোনোদিন বিএনপির সমর্থক ছিল না বলে জানিয়েছেন স্থানীয় নেতারা। ফলে তাকে জেলা বিএনপির সহসভাপতির পদ দেওয়াতে হতবাক হয়ে যান জেলা বিএনপির সকল নেতাকর্মী। কারণ বিএনপি যেখানে নির্বাচন বয়কট করেছিল সেখানে ২০২৪ সালে সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে বৈধতা দিতে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন সেই নিশাদ। তিনি নিজের মুখের সেই স্বীকারোক্তিও দিয়েছিলেন (ভিডিও ফুটেজ আছে)।

জানা গেছে, বিএনপির পদ বাগিয়ে নিতে বিপুল অর্থ খরচ করেন আওয়ামীপন্থি ব্যবসায়ী নিশাদ। কথিত আছে, ওই পদের জন্য তিনি  ৮ কোটি টাকা খরচ করেন। ২০২৪ সালের নভেম্বরের শেষার্ধে টাকায় পদ বাগিয়েই দলের মাঝে বিভক্তি সৃষ্টি করার জন্য বেপরোয়া হয়ে উঠেন তিনি। এরপর শুরু করেন টাকা কামানোর বাণিজ্য।

গাইবান্ধা জেলা ও তৃণমূল বিএনপির সূত্র জানায়, আওয়ামীপন্থি ব্যবসায়ী নিশাদ দলে যোগদান করার পর থেকেই দুই উপজেলা গ্রুপিং প্রকাশ রূপ নেয়। সাঘাটা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির মাঝে ধরেছে ফাটল। ওই নেতার ইশারায় সম্পূর্ণ একটি সুস্থ ধারার দলকে রেষারেষির কাদা সরাসরি রাজনীতিতে পরিণত করেছেন। নিজের গ্রুপিংয়ের লোকজনকে প্রতিদিন নেশা করার টাকা যোগান দিচ্ছেন। এতে করে বেপরোয়া হয়ে ওঠা ওই নেতাকর্মীরা নিজের দলের তাগিদের প্রতি খড়ক হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন।

নাম প্রকাশ না করার স্বার্থে উপজেলা ও ইউনিয়ন বিএনপির একাধিক নেতাকর্মী জানিয়েছেন, আজকের এই পরিণতির জন্য ওই নেতাই দায়ী।

এই গেল দেড় মাস আগেই জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে ব্যানারে অন্য নেতার নাম থাকার কারণে ওই নেতা নাহিদুজ্জামান নিজে মঞ্চে বসেননি। তার গ্রুপের লোকজনকে নিয়ে তুলে উঠে চলে যান। এতে প্রোগ্রাম ভন্ডল হয়ে পড়ে।

জানা গেছে, উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব সেলিম আহমেদ তুলিপকে বারবার চেষ্টা করেও নিজের অনৈতিক কার্যকলাপের সাথে যোগ করতে না পেরে এবং নিজের বলে নিতে না পেরে ব্যাপক টাকা খরচ করে মিথ্যে অভিযোগ দায়ের করে সম্প্রতি তাকে বহিষ্কার করিয়ে নেন। টাকার খেলায় যা ইচ্ছে তা-ই করছেন তিনি।

এদিকে অভিযোগ উঠেছে, উপজেলার বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির কাউন্সিল নিয়েও শুরু হয়েছে ব্যাপক নাটকীয়তা ও কাদা মাখামাখি। উপজেলার আটটি ইউনিয়নের কাউন্সিলেকে কেন্দ্র করে প্রকাশ্যে গ্রুপিং করাচ্ছেন। আওয়ামী লীগের এমপি মাহমুদ হাসানের রিপন ও সাবেক ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়ার অনুসারী প্রকাশ্য আওয়ামী লীগের সমর্থক ও পদধারী নেতাকর্মীদের বিএনপিতে বেড়াচ্ছেন।

তৃণমূলের নেতারা বলছেন, উপজেলার সাঘাটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন সুইটের সাথে সখ্যতা গড়া আওয়ামী লীগ কর্মী রেজাউল করিম রনিকে ইউনিয়ন বিএনপির কাউন্সিলে দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন সাধারণ সম্পাদক পদে। এসব ইউনিয়নের পদগুলো নিজের বলয়ে বাগিয়ে নিতে নেতাকর্মীদের হুমকি দিচ্ছেন। উপজেলা পর্যায়ে ওই নেতার হয়ে কাজ করছেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মহিন প্রধান লাবু, এনামুল হক শিল্পী, আবুল কালাম আজাদসহ কয়েকজন।

নিজের বলয়ে না আসায় সাঘাটা উপজেলার জুমারবাড়ি ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক আবু তাহের মন্ডল ও বুলবুল আহমেদকে গত ১২ জন অব্যাহতি দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। জানা যায়, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ককে একরকম জোর করে প্রেশার দিয়েই নিজ ইচ্ছা হাসিলের লক্ষ্যে এ কাজ করেন ওই নেতা, যা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলহাজ্ব মোহাম্মদ আলী স্বীকার করেছেন। তাদের এই ঠুনকো অজুহাতে দুই নেতাকে অব্যাহতি দেওয়ার কারণে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়কে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় জেলা বিএনপি।

জানা গেছে, উপজেলা বিএনপির শূন্য থাকা সদস্যসচিবের পদ পূরণ করতে গত ১৮ জুন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোশতাক আহমেদ মিলনকে ভারপ্রাপ্ত সদস্যচিব নিযুক্ত করা হয়। ওই নেতার মনমতো না হওয়ায় মিলনকে তার দুইদিন পরেই কেন্দ্র থেকে অব্যাহতির ব্যবস্থা করেন। এমন ঘটনায় ওই ভারপ্রাপ্ত সদস্যসচিব নিয়োগদান করা গাইবান্ধা জেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যাপক ডাক্তার মাইনুল হাসান সাদিক ও সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুন্নবী টুটুল হতভম্ব হয়ে পড়ে। এ ধরনের অসংখ্য ঘটনায় ওই নব্য নেতার থাবায় দুই উপজেলায় দলের নেতৃবৃন্দের মধ্যে অস্থিরতা বিরাজ করছে।

অভিযোগ পাওয়া গেছে,  কেউ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো ধরনের মন্তব্য করলেও তাদেরকে শাসানো হচ্ছে, যে কারণে কেউই মুখ খুলছে না।

একাধিক নেতা বলেন, ‘৫ আগস্টের পর নাহিদুজ্জামান নিশাত দলে যোগদানের পর নানা সমালোচনা নেমে আসে দুই উপজেলায়।’

এদিকে এই আসনের সাবেক এমপি ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়া, আওয়ামী লীগের দোসর বগুড়ার সাবেক এসপি আসাদুজ্জামান, বগুড়া জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি মমতাজুর রহমান মমতাজসহ একাধিক আওয়ামী লীগ নেতার সাথে বিএনপির ওই নব্য নেতার ছবি ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছে দুই উপজেলায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরেই সেসব ছবি ভেসে বেড়াচ্ছে।

স্থানীয়রা বলছেন,  নাহিদুজ্জামান নিশাতের আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। একসময় আওয়ামী লীগের প্রার্থী হওয়ার জন্যও তৎপরতা চালিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থী  থাকায় তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড়ান।

বিএনপির তৃণমূল নেতাদের ভাষ্য, বিগত ১৭ বছর নাহিদুজ্জামান নিশাতের আওয়ামী লীগের সাথে কাজ করেছে। কখনও বিএনপির সাথে সম্পর্ক  ছিল না, বরং বিএনপির এড়িয়ে চলত। কিন্তু আওয়ামী লীগের পতন হলেই তিনি রূপ পাল্টে ফেলেন।

জেলা পর্যায়ের বেশ কয়েকজন নেতার দাবি,  বিএনপির এক নেতার সঙ্গে গিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাথে সাক্ষাৎকালের একটি পুরোনো ছবি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছেন।

ওই নেতাদের ভাষ্য, তিনি সর্বত্র বলে বেড়ান, তার সঙ্গে তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। এই বলে জেলার সব জায়গায় প্রভাব বিস্তার করছেন।

বেশ কয়েকজন নেতা রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘একসময় দুই উপজেলার মনোনয়ন প্রার্থীরা একই মঞ্চে একই সাথে সকল প্রোগ্রামের যোগ দিতেন। হাতে হাত ধরে দলীয় প্রোগ্রাম বাস্তবায়ন করতেন। উপজেলা দুই উপজেলার নেতৃবৃন্দ এখন জানান, এসব এখন শুধুই স্মৃতি। একজন নেতার হস্তক্ষেপের সবকিছু এখন লন্ডভন্ড।’

নেতারা এও বলছেন, ‘আওয়ামীপন্থি ব্যবসায়ী নিশাদকে না সরালে এই আসনে বিএনপিকে ঐকবদ্ধ করা কঠিন হবে।’