ঢাকা রবিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৫

৫ কোটি চাঁদা দাবি, যাত্রাবাড়ী-শরীয়তপুর রুটে বাস চলাচল বন্ধ

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ১২, ২০২৫, ০৯:৪১ পিএম
শরীয়তপুরে সংবাদ সম্মেলন করেন জেলা বাস মালিক-শ্রমিকরা। ছবি- সংগৃহীত

ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে ‘শরীয়তপুর সুপার সার্ভিস’-এর একাধিক বাস ভাঙচুর ও শ্রমিকদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। বাস মালিকদের দাবি, চাঁদার ৫ কোটি টাকা না পেয়ে যাত্রাবাড়ীর সাবেক যুবদল নেতা মুশফিকুর রহমান ফাহিম ও তার অনুসারীরা এ ঘটনা ঘটায়।

এ ঘটনার পর থেকে যাত্রাবাড়ী-শরীয়তপুর রুটে পরিবহণটির যাত্রীসেবা বন্ধ রয়েছে। শনিবার (১২ জুন) সকাল ১০টায় শরীয়তপুরে জেলা বাস মালিক সমিতির অফিসে সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেন বাস মালিক-শ্রমিকরা।

শরীয়তপুর বাস মালিক সমিতি সূত্রে জানা যায়, পদ্মা সেতু চালুর পর থেকে শরীয়তপুর থেকে ঢাকার যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা এলাকায় নিয়মিত যাত্রী পরিবহণ করে আসছে শরীয়তপুর সুপার সার্ভিস পরিবহণের দুই শতাধিক বাস।

রুটটিতে বর্তমানে প্রতিদিন ঢাকা ও শরীয়তপুরে যাতায়াত করে অন্তত ৩০ হাজার যাত্রী। সম্প্রতি এই রুটে চলাচলকারী পরিবহণগুলোর মালিকদের কাছে ৫ কোটি চাঁদা দাবি করেন যাত্রাবাড়ী থানা যুবদলের সাবেক সহসভাপতি মুশফিকুর রহমান ফাহিম।

এদিকে তাকে চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ২৫টি গাড়ি ভাঙচুর ও বেশ কয়েকজন শ্রমিককে মারধর করা হয়েছে। এ ঘটনার পর থেকেই বাস শ্রমিক ও মালিকদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। চাঁদাবাজি বন্ধ ও অভিযুক্তকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন সমিতি।

সংবাদ সম্মেলনে বাস মালিক সমিতির সভাপতি ফারুক তালুকদার বলেন, ‘ফাহিম দীর্ঘদিন ধরেই প্রতিমাসে সাড়ে ৭ লাখ টাকা চাঁদা নিচ্ছেন। এবার ৫ কোটি টাকা দাবি করেছেন। আমরা রাজি না হওয়ায় বাস ভাঙচুর করা হয়েছে।’

একই দাবি করেছেন শ্রমিক ইউনিয়ন নেতা ফারুক আহম্মেদ চৌকিদারও। তিনি বলেন, ‘চাঁদাবাজির মাত্রা সহনশীল ছিল, এখন তা সহ্যের বাইরে।’

বাসচালক মাসুদ রানা বলেন, ‘ভয়ে পাঁচ দিন ধরে রাস্তায় নামতে পারছি না। পরিবার নিয়ে কষ্টে আছি।’ শ্রমিক নয়ন বেপারী জানান, বাসে হঠাৎ হামলা হয়, আমি আহত হই।

ভুক্তভোগী যাত্রী সিদ্দিক বলেন, ‘আগে যাত্রাবাড়ী নামতাম, এখন ধোলাইপাড়ে নামিয়ে দিচ্ছে। দুর্ভোগে আছি।’

তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মুশফিকুর রহমান ফাহিম। তিনি বলেন, ‘আমি কারও কাছে চাঁদা চাইনি। রুট পারমিট থাকা সত্ত্বেও আমাদের গাড়িকে বাধা দেওয়া হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণ হলে আমি শাস্তি মাথা পেতে নেব।’

শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনাটি তদন্তে ডিএমপির সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছি। জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’