ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই, ২০২৫

মোবাইল চোরকে সহযোগিতায় প্রাণ গেল মুরাদনগরে তিনজনের

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ৬, ২০২৫, ১০:৪৬ এএম
নিহত রোকসানা আক্তার রুবি, তার মেয়ে জোনাকি আক্তার ও ছেলে মো. রাসেল। ছবি- সংগৃহীত

কুমিল্লার মুরাদনগরে মোবাইল চুরিকে কেন্দ্র করে একই পরিবারের তিনজনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। নিহতরা হলেন- রুবী আক্তার, তার মেয়ে জোনাকি ও ছেলে রাসেল। মোবাইল চোরকে সহযোগিতা করায় এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

র‌্যাব-১১-এর একটি বিশেষ দল কুমিল্লা ও ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- বাচ্চু মিয়া, বায়েজ মাস্টার, রবিউল আউয়াল, আতিকুর রহমান, দুলাল ও আকাশ। তাদের কাছ থেকে চারটি মোবাইল ফোন ও একটি টর্চলাইট উদ্ধার করা হয়েছে।

শনিবার (৫ জুলাই) রাজধানীর কাওরান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-১১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এইচএম সাজ্জাদ হোসেন এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, মোবাইল চোরকে সহযোগিতা করায় ওই পরিবারের তিন সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।

তদন্তে দেখা গেছে, মোবাইল চুরির ঘটনায় মূল অভিযুক্ত বোরহান নামের এক যুবক, যিনি ১ জুলাই স্থানীয় এক স্কুলশিক্ষকের মোবাইল ফোন চুরি করেন। গণপিটুনির পর স্থানীয় মেম্বার বাচ্চু মিয়া বিষয়টি সালিশে মীমাংসার চেষ্টা করলেও পরদিন বোরহানের বাবা থানায় অভিযোগ করেন। সেই অভিযোগ থেকেই ঘটনার সূত্রপাত।

র‌্যাব জানায়, মোবাইল চোর বোরহানের পরিবারের সঙ্গে নিহত রুবী আক্তারের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল। চুরির ঘটনায় বোরহানের বাবা রুবী আক্তারের সাহায্য চাইলে, বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ হয় প্রতিপক্ষ।

২ জুলাই রাতে পরিকল্পনা অনুযায়ী ৩ জুলাই সকালে বাচ্চু মিয়া, রবিউলসহ একদল লোক রুবী আক্তারের বাড়িতে যায়। সেখানে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে সংঘর্ষ শুরু হয় এবং রুবী আক্তার, তার মেয়ে জোনাকি ও ছেলে রাসেলকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।

লে. কর্নেল সাজ্জাদ হোসেন বলেন, নিহতদের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর অভিযোগ ছিল। রুবী আক্তারের বিরুদ্ধে ১১টি ও তার ছেলে রাসেলের বিরুদ্ধে ৯টি মামলা রয়েছে। তবে মোবাইল চুরির মূল অভিযুক্ত বোরহান এখনো পলাতক। তাকে ধরতে অভিযান চলছে।

তিনি আরও বলেন, মব (গণপিটুনি) হঠাৎ গঠিত হয়, এটি কোনো রাজনৈতিক দল শেখায় না। কেউ অপরাধ করলে তার বিচার দেশের প্রচলিত আইনে হওয়া উচিত।

এ ঘটনায় ৩৮ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব। হত্যাকাণ্ডের পর থেকে এলাকায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে এবং অনেক পুরুষ এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। র‌্যাব আশ্বস্ত করেছে যে সাধারণ মানুষকে নয়, কেবল অভিযুক্তদেরই গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।