রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় প্রাণ হারানো তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী সায়মা আক্তারের (৯) গ্রামের বাড়ি গাজীপুরের বিপ্লবতা গ্রামে চলছে শোকের মাতম। ছোট্ট মেয়েটির ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন একটি দুর্ঘটনায় চিরতরে থেমে গেছে।
নিহত সায়মা গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বিপ্লবতা গ্রামের বাসিন্দা শাহ আলম ও রিনা বেগমের মেয়ে। সায়মার বড় ভাই সাব্বির হোসেন এবার মাইলস্টোন স্কুল থেকেই এসএসসি পাস করেছেন।
সকাল ১১টায় জানাজার নামাজ শেষে সায়মার মরদেহ বাড়ির উঠোনেই দাফন করা হয়। বড় ভাই সাব্বিরের কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে চারপাশের পরিবেশ।
মা রিনা বেগম শোক ও কষ্টে পাথরের মতো নীরব, কেবল ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছেন। আশপাশের প্রতিবেশী নারীরাও তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
সায়মার বাবা শাহ আলম বলেন, ‘এক বন্ধু ফোন করে জানায়, স্কুলে বিমান দুর্ঘটনা ঘটেছে। এরপর সারারাত মেয়েকে খুঁজেছি। রাত ৮টার পর জানতে পারি তার মরদেহ সিএমএইচে রয়েছে। গতরাতেও মেয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়েছিল… এখন আর কখনো ঘুমোতে আসবে না আমার পাশে।’
মা রিনা বেগম বলেন, ‘সায়মার স্বপ্ন ছিল বড় হয়ে ডাক্তার হবে, মানুষের সেবা করবে। প্রতিদিন আমি ওকে স্কুলে নিয়ে যেতাম। গতকাল আমার ভাই নিয়ে গিয়েছিল। স্কুলে যাওয়ার সময় আমাকে বলেছিল, ‘মা, স্কুলে গেলাম… টা টা।’ এরপর আর কোনো কথা হয়নি আমার মেয়ের সঙ্গে।’
সায়মার মৃত্যু শুধু তার পরিবার নয়, পুরো এলাকাকে স্তব্ধ করে দিয়েছে। একটি প্রতিভাবান শিশু, যার জীবন শুরুই হয়নি ঠিকভাবে, তাকে বিদায় জানাতে গাজীপুরের আকাশও যেন ভারী হয়ে উঠেছে।